চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

মক্কার মাটি দিয়ে তৈরি ভারতীয় মসজিদ

অনলাইন ডেস্ক

২৩ আগস্ট, ২০২২ | ১২:০১ পূর্বাহ্ণ

কুতুব শাহি রাজবংশের শাসনামলে বর্তমান হায়দরাবাদের নাম ছিল গোলকুণ্ডা। নিজাম আসাফ জাহির আমলে এর নামকরণ হয় হায়দরাবাদ। পঞ্চম কুতুব শাহি সুলতান মুহাম্মদ কুলি হায়দরাবাদের ঠিক মাঝখানে একটি মসজিদ বানানোর ইচ্ছা করেন। তিনি ঠিক করলেন, মসজিদের মূল কাঠামো গ্রানাইটে হবে, আর খিলানগুলো হবে ইটের।

ইট তৈরির জন্য তিনি মাটি আনালেন পবিত্র মক্কানগরী থেকে। মক্কা থেকে আনা মাটি দিয়ে বানানো হলো ইট, সেই ইট দিয়ে উঠল মসজিদের ১৫টি খিলান। মূল মসজিদটি এই খিলানগুলোতে ভর করে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় চার’শ বছর ধরে। মক্কার মাটির তৈরি ইট দিয়ে খিলান বানানো। তাই এটাকে মক্কা মসজিদ বলা হয়।

এই ১৫টি খিলান তিন সারিতে পাঁচটি করে সাজানো। অন্যদিকের একটি মেহরাবের সঙ্গে সংযুক্ত। মসজিদের প্রধান স্থাপনা দুটি বিশাল অষ্টাভুজাকৃতির কলাম দ্বারা সংগঠিত। প্রত্যেকটি তৈরি করা হয় একটিমাত্র গ্রানাইটের টুকরা দিয়ে। এই মসজিদটির সঙ্গে চার মিনার ও গোলকুণ্ডা দুর্গের সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। মসজিদের মূল ভবনের ছাদের চার দেয়াল গ্রানাইট ব্লক দিয়ে বহিরাবরণ দেওয়া। মূল মসজিদের বাইরে প্রশস্ত বারান্দা, ওপরে টিনের ছাউনি। বারান্দার সামনে এবং মূল মসজিদের উত্তরদিকে লেকের মতো দুটি অজু করার স্থান। এ ছাড়া অবশ্য আলাদা অজুখানা আছে।

মসজিদটি ছিল সেই সময়ের সবচেয়ে প্রশস্ত। ২২০ দৈর্ঘ্য ও ১৮০ ফুট প্রস্থের। এর উচ্চতা ৭৫ ফুট। কুতুব শাহি ও আসাফ জাহি আমলের সিগনেচার স্থাপত্যশৈলীতে গড়ে ওঠে মক্কা মসজিদ।

ফরাসি পরিব্রাজক জ্যাঁ ব্যাপ্টিস্ট টেভমিয়ের ট্রাভেলগ অনুযায়ী, মক্কা মসজিদের কাজ ১৬৯৪ সালে শেষ হলেও এর কাজ, পরিকল্পনা, নকশা, মক্কা থেকে মাটি আনা প্রভৃতি কাজ শুরু হয় আরো ৫০ বছর আগে থেকে। তবে মসজিদ তৈরিতে সময় লাগে পাঁচ বছর।

মসজিদটি তৈরিতে আট হাজারেরও বেশি শ্রমিক অংশ নেন। মোহাম্মাদ কুলি নিজে এই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরে মোগল বাদশাহ আওরঙ্গজেব হায়দরাবাদ জয়ের পর এই মসজিদের নির্মাণকাজ সমাপ্ত করেন। ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের প্রত্নতাত্ত্বিক এ নিদর্শনটি ভারতের সবচেয়ে বড় ও পুরনো মসজিদগুলোর একটি। পাশাপাশি মক্কার মাটি মসজিদটির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত। একসঙ্গে ১০ হাজার মুসল্লি এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারেন। ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন। সূত্র: কালের কণ্ঠ

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন