চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

শনিবার বদলানো হচ্ছে কাবা শরিফের গিলাফ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৭ জুলাই, ২০২২ | ১:২৩ অপরাহ্ণ

মসজিদুল হারামের কাবা শরিফের গিলাফ পরিবর্তন করা হবে আগামী শনিবার (৩০ জুলাই)।

সৌদি আরবের সরকারি সংবাদমাধ্যম এসপিআইয়ের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

হারামাইন শরিফাইনের পরিচালনা পর্ষদ জানায়, আগামী সপ্তাহের শুরুতে কাবার গিলাফ পরিবর্তনের কাজে অংশ নেবেন ১৬৬জন কর্মচারী। পরিচালনা পর্ষদের প্রধান শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইসের নেতৃত্বে এই শুরু হবে।

কালো রঙের কাবা গিলাফে পবিত্র কোরআনের আয়াত লেখা থাকে। প্রতি বছর হিজরি সালের জিলহজ মাসের ৯ তারিখে এই গিলাফ পরিবর্তন করা হয়। তবে এ বছর সৌদি কর্তৃপক্ষ নতুন হিজরি বর্ষের শুরুতে অর্থাৎ ১ মহররম তা পরিবর্তনের ঘোষণা দেয়। এই কাজের ধারাবাহিকতায় ঈদুল আজহার দিনই কাবার চাবি বহনকারীদের হাতে গিলাফ হস্তান্তর করা হয়েছে।

মসজিদুল হারামের জেনারেল প্রেসিডেন্সি বিভাগের উপপ্রধান ড. সাআদ বিন মুহাম্মদ আল-মুহাইমিদ বলেছেন, এজন্য কিং আবদুল আজিজ কমপ্লেক্স ফর হলি কাবা কিসওয়া’র বিভিন্ন পর্যায়ে দুই শ’জন কর্মরত আছেন।

সাদ বিন মুহাম্মদের মতে কাবার গিলাফ তৈরিতে ৬৭০ কেজি খাঁটি সিল্ক ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া ১২০ কেজি স্বর্ণ ও ১০০ কেজি রূপার সুতো ব্যবহার করা হয়েছে।

ইতিহাসের বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে জানা গেছে, ইসলাম পূর্ব সময়ে ইয়েমেনের বাদশাহ তুব্বা আবি কারব আসাদ সর্বপ্রথম কাবা শরিফকে গিলাফ দিয়ে ঢাকেন। তিনি এ কাজে ইয়েমেনের সেরা কাপড় ব্যবহার করতেন। পরবর্তী সময়ে কখনো চামড়ার গিলাফ দিয়ে কাবা শরিফ ঢাকা হয় এবং কখনো মিশর থেকে আনা কপটিক কাপড়ে কাবা ঢাকা হতো। এরপর নবম হিজরিতে মক্কা বিজয়ের পর হজের সময় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাবাকে লাল ও সাদা ইয়েমেনি কাপড় দিয়ে ঢেকে দেন।

খোলাফায়ে রাশেদিনের শাসনকালে কাবা শরিফকে সাদা গিলাফে ঢাকা হতো। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়ের রা. এতে লাল গিলাফ ব্যবহার করতেন। আব্বাসী শাসনামলে এক বছর সাদা ও আরেক বছর লাল গিলাফ ব্যবহার করা হতো। সেলজুক সুলতানরা হলুদ গিলাফ ব্যবহার করতেন। আব্বাসী শাসক নাসের প্রথমে সবুজ গিলাফ ব্যবহার করেন। পরে কালো গিলাফ ব্যবহার করেন। এরপর থেকে সেই ঐতিহ্য চালু রয়েছে।

কাবার গিলাফ কিভাবে তৈরি করা হয়

সৌদি যুগের কয়েক শতাব্দী আগ পর্যন্ত কাবার গিলাফের জন্য কাপড় আসত মিশর থেকে। শাহ আবদুল আজিজের শাসনামলে কাবার গিলাফের জন্য একটি পৃথক বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং প্রথমবারের মতো মক্কায় এর জন্য কাপড় তৈরি করা শুরু হয়। পরে এর কারখানা উম্মুল জুদ নামক স্থানে স্থান্তরিত করা হয়।

এই কারখানায় কাবার গিলাফে ব্যবহৃত সিল্ক ধোয়ার কাজের জন্য পানি পবিত্র করা হয় যা। পরে সিল্ককে কালো ও সবুজ রঙ দেয়া হয়। এবং এক ধরনের বিশেষ কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। সুতি কাপড়ও একইভাবে ধুয়ে রং করা হয়। এরপর মেশিরে সাহায্যে গিলাফে কোরআনের আয়াত ও দোয়া লেখা হয়। এ কাজে সিল্ক ছাড়াও স্বর্ণের সুতো ব্যবহার করা হয়।

 

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট