চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

৩ ভাইকে বিয়ে ৩ বোনের, একসঙ্গে আত্মহত্যার নেপথ্যে যা

অনলাইন ডেস্ক

৮ জুন, ২০২২ | ১২:১৮ পূর্বাহ্ণ

ভারতের রাজস্থানে মাস খানেক আগে সন্তানদের নিয়ে তিন বোন আত্মহত্যা করেন। ওই তিন বোন একই পরিবারের তিন ভাইকে বিয়ে করেছিলেন। তাদের মরদেহগুলো একটি কূপে পাওয়া যায়। মৃত্যুর আগে তিন বোন শ্বশুরবাড়ির লোকদের দায়ী করে বার্তা রেখে যান। যৌতুক নিয়ে নির্যাতনের শিকার ছিলেন বলে ওই বার্তায় জানান তারা।  

ওই তিন বোন হলেন কালু, কমলেশ এবং মমতা মিনা। ভারতে বাবা-মাকে প্রায়ই তাদের মেয়েদের বিয়েতে মোটা অঙ্কের যৌতুক দিতে হয়। যৌতুক নিয়ে এমন নির্যাতনের খবরও প্রায়ই দেখা যায় বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। 

স্বজনদের বরাতে এনডিটিভি জানায়, ওই তিন বোন একই বাড়ির তিন ভাইকে বিয়ে করেছিলেন। বাসও করতেন একই বাড়িতে। এই তিন বোন প্রায়ই স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার হতেন। তাদের বাবা অতিরিক্ত টাকার যোগান দিতে ব্যর্থ হলেই তারা ক্রমাগত নির্যাতনের শিকার হতেন।

তাদের শ্বশুরবাড়ি রাজস্থানের জয়পুর উপকণ্ঠে। গত মাসে এই তিন বোনের মরদেহ তাদের শ্বশুরবাড়ির কাছের একটি কূপে পাওয়া যায়। একইসঙ্গে ওই কূপে পাওয়া যায় কালুর চার বছরের ছেলে এবং নবজাতক শিশুর মরদেহ। আর কমলেশ এবং মমতা গর্ভবতী ছিলেন।

আত্মহত্যা করা এই তিন বোনের এক আত্মীয় জানান, মৃত্যুর আগে তিন বোনের এক বোন তাকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ পাঠায়। যেখানে লিখা ছিল, আমরা মরতে চাই না। কিন্তু তাদের নির্যাতনের চেয়ে মৃত্যু ভালো। আমাদের এই মৃত্যুর জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকজন দায়ী। আমরা একসঙ্গে মারা যাচ্ছি, কারণ প্রতিদিন মরার চেয়ে এটা ভালো।

জয়পুরের এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, কর্তৃপক্ষ মৃত্যুর ঘটনাটি তদন্ত করছে এবং এটিকে আত্মহত্যা হিসেবেই বিবেচনা করছে।

তিন বোনের বাবা সরদার মীনা বলেন, তার মেয়েদের জন্য জীবন ছিল নরক। স্বামীরা তার মেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে দেয়নি এবং প্রতিনিয়ত তাদেরকে আরও অর্থের জন্য হয়রানি করতো। 

তিনি আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে তাদেরকে অনেক কিছু দিয়েছি, তাদের বাড়ি গেলে সেগুলো দেখতে পাবেন। বিছানা, টেলিভিশন, ফ্রিজসহ নানা জিনিস ওই পরিবারকে দিয়েছি। আমার ছয় মেয়ে, দিতে পারার একটি সীমা আছে। আমি তাদের শিক্ষিত করেছিলাম এবং তা করা খুব কঠিন ছিল। এ সময় তিনি জানান, তিনি কৃষক। আর কৃষক হিসেবে তার আয়ও সীমিত।

এই ঘটনায় যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগে ওই তিন ভাই, তাদের মা এবং বোনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

 

পূর্বকোণ/রাজীব/পারভেজ

শেয়ার করুন