চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

বিশ্বে খাদ্য সংকট: জাতিসংঘে পরস্পরকে দোষারোপ যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার

২০ মে, ২০২২ | ১০:৫০ অপরাহ্ণ

বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির ইস্যুকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘে বিবাদে জড়িয়েছে দুই চরম বৈরী দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের অভিযোগ— ইউক্রেনের খাদ্য শস্য আটকে বিশ্ব বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ফায়দা তুলতে চাইছে রাশিয়া।

অন্যদিকে, রাশিয়ার দাবি—পশ্চিমা বিশ্বের জল্পনা-কল্পনা ও ভুল নীতি, বৈশ্বিক বিমা ব্যবস্থার ত্রুটি, বিশ্বজুড়ে মুদ্রাস্ফীতির কারণে দীর্ঘদিন ধরেই খাদ্য পণ্যের মূল্য বাড়ছিল, বর্তমানে তার উল্লম্ফণ ঘটেছে। এছাড়া, রাশিয়া নয়, বরং ইউক্রেন নিজেদের গম আটকে রেখেছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন জাতিসংঘে রাশিয়ার দূত ভাসিলি নেবেনজিয়া।

এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। সেখানে রুশ প্রতিনিধি ভাসিলি নেবেনজিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন থেকে খাদ্য সরবরাহে বাধা দেওয়ার মাধ্যমে বিশ্বের লাখো কোটি মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী।’

‘যেসব দেশ রাশিয়ার এই অন্যায় যুদ্ধের বিরোধিতা করছে, তাদের শায়েস্তা করার জন্য খাদ্য ও সার রপ্তানির প্রবাহকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে রুশ সেনারা।’ভাসিলি নেবেনজিয়ার উদ্দেশে ব্লিনকেন আরও বলেন, ‘কৃষ্ণ সাগর এলাকার বন্দরগুলো থেকে অবরোধ তুলে নিন। খাদ্যপণ্যবাহী জাহাজ, ট্রেন ও ট্রাকগুলোকে ইউক্রেন ত্যাগের সুযোগ করে দিন।’

বৈঠকে ব্লিনকেনের এসব অভিযোগ খণ্ডন করে রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের মূলবৃদ্ধির জন্য রাশিয়া দায়ী নয়। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুদ্রাস্ফীতি, বৈশ্বিক বিমা ব্যবস্থার ত্রুটি, লজিস্টিক সমস্যা ও সর্বোপরি আন্তর্জাতিক বাজার নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের জল্পনা-কল্পনা ও ভুল নীতি বর্তমানে এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইউক্রেন থেকে খাদ্যপণ্য সরবরাহ বন্ধের জন্য রাশিয়া দায়ী নয়, বরং ইউক্রেন নিজেই এজন্য দায়ী। কৃষ্ণ সাগরের উপকূলজুড়ে মাইন পেতে রেখেছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী।’‘এসব মাইন অপসারণ করতে আমরা কিয়েভকে সহযোগিতা করার প্রস্তাবও দিয়েছিলাম। কিন্তু ইউক্রেনের সরকার সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি, মাইনও অপসারণ করেনি। ফলে বন্দরে আটকে থাকা জাহাজ গুলো যেমন যেতে পারছে না, নতুন জাহাজও আসতে পারছে না।’

এছাড়া, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করাকেও খাদ্য সংকটের অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের রুশ দূত। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া থেকে খাদ্য, সার ও ফসলের বীজের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’

তবে তার এই যুক্তির প্রতিবাদ করে ব্লিনকেন বলেন, ‘রাশিয়ার খাদ্য ও সার রপ্তানির ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি। খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি মস্কোর। এজন্য অন্য কেউ দায়ী নয়।’

পূর্বকোণ/রাজীব/পারভেজ

শেয়ার করুন