২৭ জুলাই, ২০১৯ | ২:০১ পূর্বাহ্ণ
পূর্বকোণ ডেস্ক
বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি মানুষের মাঝে জিকা, ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়াসহ বিপজ্জনক রোগের সংক্রমণ ঘটাচ্ছে এডিস অ্যালবোপিক্টাস প্রজাতির মশা। মাত্র দুই বছরে চীনের শহর গুয়াংঝুর দুটি দ্বীপপুঞ্জ থেকে এই মশা প্রায় নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছে বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি দ্য ন্যাচার জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রবন্ধে এই সাফল্যের কথা উঠে এসেছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, দুটি বিদ্যমান পদ্ধতির সমন্বয় করে সেখানে এশিয়ান টাইগার নামে পরিচিত এই মশার পরিমাণ ৯৪ শতাংশ কমিয়ে আনা হয়েছে। ন্যাচারে প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, বিগত দুই দশকে রোগবাহী এসব মশা নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। এতে মশার বংশবৃদ্ধি রোধ এবং তাদের রোগ ছড়ানোর ক্ষমতা হ্রাসেরই মূল চেষ্টা ছিলো। তবে নতুন গবেষণায় ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। গবেষণা দলের প্রধান ও জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের মশার বাস্তুসংস্থান বিষয়ক বিশেষজ্ঞ পিটার আর্মব্রাস্টার বলেন, তাদের গবেষণার ফলাফলে মশা ধ্বংস করতে এবং মশা-সংক্রমিত রোগ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী উপায় পাওয়া গেছে। তিনি জানান, নতুন পদ্ধতিতে দুই স্তরের পদ্ধতিতে মশা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। এক. বিকিরণের মাধ্যমে মশাকে নির্গত করা হয়, দুই. ওলবাখিয়া প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া স্ট্রেনের মাধ্যমে ডিম থেকে মশার উৎপাদন রোধ করা।’ ল্যাবে যখন একসঙ্গে এই দুটি পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয় তখন তা মশা নিধনে আরও বেশি কার্যকর হয়ে ওঠে। নতুন পদ্ধতিতে বিকিরণ-ভিত্তিক কৌশলগুলো জীবাণুমুক্ত পুরুষ মশাকে মুক্ত রাখছে, যারা নারী মশার সাথে শুধুমাত্র একবার সঙ্গত হয়। এতে তাদের প্রজনন কমে আসছে।
মশা বংশবৃদ্ধি শতভাগ নিয়ন্ত্রণের কোনও একক কৌশল নেই। কয়েকটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সবচেয়ে কার্যকরী ফল পাওয়া সম্ভব। গবেষকরা জানান, তাদের কাজই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে এগিয়ে এবং রোগবাহী মশার বংশবিস্তার নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী।
গত চার দশকে রক্তপায়ী এ মশা এশিয়া থেকে অ্যান্টার্কটিকা বাদে পৃথিবীর অন্যান্য মহাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আকারে ক্ষুদ্র এসব মশা মানবদেশে ভয়ংকর সব রোগের সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। এখন পর্যন্ত এসব রোগের খুব বেশি প্রতিষেধক পাওয়া যায়নি।