চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ট্যাংকার বিস্ফোরণের ঘটনায় ইরানকে দুষছে যুক্তরাষ্ট্র

হামলার দায় প্রত্যাখ্যান করল ইরান

১৫ জুন, ২০১৯ | ১:৩৭ পূর্বাহ্ণ

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক : ওমান উপসাগরে তেলবাহী দুই ট্যাংকারে বিস্ফোরণের ঘটনায় ইরানকে দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরইমধ্যে দাবির স্বপক্ষে ভিডিও প্রমাণ উপস্থাপন করেছে তারা। ভিডিওতে দেখা গেছে, ইরানি নৌবাহিনীর সদস্যরা জাপানের মালিকানাধীন কোকুকা কারেজিয়াস নামক ট্যাংকার থেকে অবিস্ফোরিত মাইন সরিয়ে নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিস্ফোরণের কবলে পড়া দুই ট্যাংকারের একটি এটি। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, হামলার স্থল থেকে আলামত সরানোর চেষ্টার অংশ হিসেবেই এই কাজ করেছে ইরান। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে ওমান উপসাগরে দুটি তেলবাহী ট্যাংকারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। ট্যাংকার দুটির একটি মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী ফ্রন্ট অ্যালটেয়ার এবং অপরটি পানামার পতাকাবাহী কোকুকা কারেজিয়াস। ফ্রন্ট অ্যালটেয়ার নরওয়ের মালিকানাধীন আর কোকুকা জাপানের মালিকানাধীন। বৃহস্পতিবার বিস্ফোরণের পর দুই ট্যাংকার থেকে ৪৪ জন ক্রু-কে উদ্ধার করে ইরানি কর্তৃপক্ষ। বিস্ফোরণের কারণ জানা না গেলেও যুক্তরাষ্ট্র এর জন্য ইরানকে দায়ী করছে।
ঘটনার পর চারজন মার্কিন কর্মকর্তা দাবি করেছিলেন তাদের কাছে ওই হামলার ছবি আছে। ওই কর্মকর্তাদের একজন জানান ভিডিওটি মার্কিন সামরিক বিমান থেকে ধারণ করা। সেখানে দেখা যায়, একটি ছোট নৌকা জাপানি ট্যাংকারের পাশে এসে দাঁড়ায়। একজন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে ট্যাংকার থেকে কিছু সরিয়ে নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ওই বস্তুটি অবিস্ফোরিত মাইন। যুক্তরাষ্ট্র জানায়, মার্কিন ডেস্ট্রেয়ার জাহাজ ও একটি ড্রোন থাকার পরও সেখানে নৌকাটি অবস্থান করে। মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের ধারণা, হামলার প্রমাণ মুছে ফেলতেই সেখানে গিয়েছিলো সেটি।
আরেকজন কর্মকর্তা সিএনএন-এর কাছে দাবি করেন, ঘটনার সময় সেখানে অনেকগুলো ইরানি ছোট নৌকা প্রবেশ করেছিল। এক বিবৃতিতে মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ড জানায়, ইউএসএস বেইনব্রিজ কিংবা এর মিশনের ওপর কোনও রকম হস্তক্ষেপ করলে তা মেনে নেওয়া হবে না।
যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে দায়ী করলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছে তেহরান।
বৃহস্পতিবার কোকুয়া কারেজেস ও ফ্রন্ট আলটেয়ার নামের নৌযানদুটিতে ‘বিস্ফোরণের পর’ আগুন ধরে গেলে ইরানি উদ্ধারকারী দল ট্যাঙ্কার দুটির ৪৪ ক্রুকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়।
ওই ঘটনার জন্য ইরানকে দায়ী করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। তবে ইরান অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস মৌসাভি বলেছেন, “ইরানকে এরকম একটি সন্দেহজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার জন্য দায়ী করা নিশ্চিতভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে সহজ এবং সস্তা একটি ব্যাপার। এ ধরনের অভিযোগ উদ্বেগজনক।” তিনি বলেন, আমরা ওই প্রণালীতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করি এবং আমরা খুব অল্প সময়ের মধ্যে ট্যাংকারের ক্রুদেরকে উদ্ধার করেছি। মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায় ইএসএস বেইনব্রিজ কোকুকা কারেজিয়াসের কর্মীদের সহায়তা করছে। ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিপেন্ডেন্ট ট্যাংকার ওনার্স বলছে, এটি একটি পরিকল্পিত হামলা বলে সন্দেহ করছে তারা। জাতিসংঘের নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জোনাথান কোহেন বলেন, এটা এই অঞ্চলে ইরানের সৃষ্ট অস্থিতিশীলতার আরেকটি উদাহরণ। তবে ইরানি মিশন এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট