চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

স্পেনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঈদ আয়োজন

৩১ মে, ২০১৯ | ৪:২৫ অপরাহ্ণ

মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদ উল ফিতরের আর খুব বেশিদিন বাকি নেই। ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো স্পেনেও প্রবাসী বাংলাদেশিরা ঈদের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। নিজ দেশ, পরিবার-পরিজন ছেড়ে সেই দূরদেশে কেমন চলছে তাদের ঈদের প্রস্তুতি?

ঈদের আগেই দেশে পরিবার-পরিজনের কাছে অর্থ পাঠাতে উদগ্রীব প্রবাসীরা সবচেয়ে বেশি ভিড় করছেন মানি ট্রান্সফার’র দোকানগুলোতে।

মাদ্রিদে বাংলাদেশি মালিকানাধীন ‘ভূঁইয়া মানি ট্রান্সফার’, ‘বাংলা বাজার মানি ট্রান্সফার’, ‘আমানাহ মানি ট্রান্সফার’, ‘নূর জাহান মানি ট্রান্সফার’ এবং বার্সেলোনার ‘ডট মিডিয়া’, ‘ভিক্টোরিয়া মানি ট্রান্সফার’, ‘শাপলা মানি ট্রান্সফার’, ‘এশিয়া মানি ট্রান্সফার’ দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে দেশে অর্থ পাঠাতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভিড়। 

দোকানগুলোর স্বত্বাধিকারীরা জানালেন, প্রতি বছর দুই ঈদেই প্রবাসীরা সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স পাঠান। তাই এবারের ঈদেও বরাবরের মতো তাদের ব্যস্ততা বেড়েছে।

মাদ্রিদের একটি মানি ট্রান্সফার’র দোকানে দেশে অর্থ পাঠাতে আসা হুমায়ূন কবির রিগ্যান জানান, প্রবাসে দেশের মতো ঈদের আমেজ নেই। দেশে বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজনদের জন্য ঈদের জামাকাপড় কেনার টাকা পাঠাতে এসেছি। দেশের স্বজনদের মুখে ঈদের হাসি ফোটাতে পারলেই আমাদের তৃপ্তি।

এছাড়াও নিজেদের জন্য ঈদের কেনাকাটা করতে প্রবাসীরা ঘুরছেন বাংলাদেশি পোশাকের দোকান কিংবা স্পেনের বড় বড় শপিং মলগুলোতে। তবে দেশের মতো ঈদের আনন্দ উপভোগ না করার আক্ষেপ নিয়েই চলছে তাদের ঈদের প্রস্তুতি।

বাচ্চার জন্য ঈদের জামা কিনেছেন নাজমুল ইসলাম নাজু ও আফরোজা ইসলাম দম্পতি। তারা জানালেন, আমাদের নতুন জামা কেনার শখ সেই কবে শেষ হয়েছে! দেশের মতো তো এখানে আর ঈদ উদযাপন করা যায় না। বাচ্চার জন্য কেবল জামা কিনে আনলাম। আমাদের ছোটবেলার ঈদের আনন্দ খুঁজবো ওর মাঝে।

মাদ্রিদে বাংলাদেশি গ্রোসারি দোকানগুলোতে ঈদের জন্য বাঙালিয়ানা নানা উপকরণ মজুত করে রেখেছেন দোকানের মালিকরা। ঈদের দিন নানা মুখরোচক খাবার তৈরির জন্য সদাই কেনা শুরু হয়ে গেছে ইতিমধ্যে।

দোকানিরা জানালেন, সেমাই ছাড়াতো ঈদ হয় না। তাই সেমাইয়ের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তবে চটপটি, পিঠার উপকরণও বিক্রি হচ্ছে। পোলাওর চাল কিংবা মসলাও কিনছেন অনেকেই।

মাদ্রিদের একটি গ্রোসারি দোকানে ঈদের বাজার করতে আসা জেসমিন নাহার জানালেন, দেশের মতো আনন্দঘন না হলেও নিজেদের মধ্যে ঈদকে ভাগাভাগি করতে আমাদের প্রস্তুতিও কম থাকে না। বাসায় বাঙালিয়ানা খাবার সেমাই, পিঠা তৈরি করবো। পরিচিত অনেকেই আসবেন। আমরাও যাবো তাদের বাসায়।

বার্সেলোনায় বাংলাদেশি পোশাকের দোকানগুলোতে শেষ সময়ের কেনাকাটার ভিড় লক্ষ করা গেছে। ‘লেবাসুত ত্বাকওয়া’ নামের দোকানের স্বত্বাধিকারী রুহুল আমিন জানালেন, পুরুষদের পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে বেশি। তাছাড়া মহিলাদের দেশীয় সংস্কৃতির আদলে শাড়ি, থ্রিপিসসহ নানা আইটেমেরও কাটতি আছে।

স্পেনে ঈদের দিন সরকারি ছুটি না থাকায় ঈদের দিনও কাজে ছুটতে হবে অনেককেই। বাংলাদেশি মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান; বিশেষ করে রেস্তোরাঁয় কর্মরত বাংলাদেশিদের অন্যান্য দিনের মতো ঈদের দিনও কাজ করতে হবে বলে জানা গেছে।

স্পেনের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় স্থাপিত মসজিদগুলোর তত্ত্বাবধানে ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করা হয়। রাজধানী শহর মাদ্রিদে প্রতি বছর বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা লাভাপিয়েস সংলগ্ন কাসিনো পার্কে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হলেও এ বছর ‘রেইনা সোফিয়া মিউজিয়াম’ সংলগ্ন ময়দানে স্থানীয় স্প্যানিশ কর্তৃপক্ষ ঈদের নামাজ আদায়ের অনুমতি দিয়েছেন বলে জানালেন মাদ্রিদ বায়তুল মুকাররম জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি খোরশেদ আলম মজুমদার।

পূর্বকোণ/ময়মী

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট