২৮ মে, ২০১৯ | ২:০১ অপরাহ্ণ
পূর্বকোণ ডেস্ক
ব্রাজিলের উত্তরাঞ্চলের চারটি কারাগারে গত সোমবার (২৭ মে) ৪২ জন বন্দির মরদেহ পাওয়া গেছে। অ্যামাজোনাস রাজ্যের রাজধানী মানাউসে অবস্থিত এসব কারাগারগুলোতে এই বন্দিদের মৃত্যু হয়। তাদের সবারই শ্বাসরোধের ফলে সৃষ্ট সমস্যার কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে জানাচ্ছেন কারাগারের কর্তব্যরত কর্মকর্তারা।
ব্রাজিলের একটি কারাগারে সংঘর্ষে ১৫ জন বন্দি নিহত হওয়ার একদিন পরই এই ৪২ মরদেহ পাওয়া গেলো।
সেখানকার কর্মকর্তরা বলছেন, নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কারাগার পরিদর্শনের সময় চারটি কারাগারে এই ৪২ মরদেহ পাওয়া যায়। অবশ্য ঠিক কী কারণে এতোসংখ্যক বন্দির প্রাণ ঝরেছে তা জানতে এবং পরিস্থিতির লাগাম টানতে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে কারাগার কর্তৃপক্ষ।
এর আগের দিন অ্যানিসিও জোবিম পেনিতেসিয়ারি কমপ্লেক্স এলাকায় ‘সাক্ষাৎ সময়’ চলাকালে সংঘর্ষ বাঁধে। তখন সংঘর্ষে জড়ানো দু’পক্ষ পরস্পরকে টুথব্রাশ দিয়ে আঘাত করে এবং শ্বাসরোধে করে। এতে ১৫ বন্দির মৃত্যু হয়।
চলতি বছরের এপ্রিলের হিসাব অনুযায়ী, বন্দিদের সংখ্যার বিচারে ব্রাজিল বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ দেশ। দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটিতে এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্বন অভিযোগে বন্দি ছিলেন ৭ লাখ ১২ হাজার ৩০৫ জন।
এদিকে কারাগারে সহিংসতা রুখতে মানাউশে একটি ফেডারেল টাস্ক ফোর্স পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
ব্রাজিলের প্রায় প্রতিটি কারাগারের আশপাশের এলাকা কার্যত মাদক কারবারীদের নিয়ন্ত্রণে। আর এ কারণে কারাগারগুলোতে প্রায় সময় সহিংসতা তৈরি হয় এবং সেটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
ব্রাজিলের কট্টর ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো বলেছেন, দেশের কারাগারগুলোতে নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করা হবে। পাশাপাশি তিনি আরো অনেক কারাগার নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ব্রাজিলের বেশিরভাগ কারাগার যদিও রাজ্য সরকার থেকে পরিচালিত হয়। কয়েক দশক ধরে কারাগারগুলো জনাকীর্ণ ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এছাড়া কারাগারের আশপাশের এলাকা মাদক কারবারীদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় কারাগারে মাদকসেবীদের আধিপত্য থাকে।
এর আগে গত রোববারের সহিংসতায় অন্তত ১৫ জন কয়েদির মৃত্যু হয়। সহিংসতাকালে তাদেরকে শ্বাসরোধে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে একই কারাগারে বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। সে সময় প্রায় ২০ ঘণ্টাব্যাপি স্থায়ী হয়েছিল সেই সহিংসতা। ওই ঘটনায় ৫৬ জন নিহত হয়।