চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

মেশিন লার্নিং এখন প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি দক্ষতা হিসেবে বিবেচিত

আবদুল মুহিদ

১৬ জানুয়ারি, ২০২০ | ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ

বর্তমান যুগে প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রযুক্তি দক্ষতার ক্ষেত্রে ওপরের দিকেই রয়েছে মেশিন লার্নিং বা এমএল-বিষয়ক দক্ষতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবিষ্যতে মেশিন লার্নিং ও আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্সের মতো বিষয়গুলোতে অমিত সম্ভাবনা রয়েছে।

(গত সংখ্যার পর)
মেশিন লার্নিং কী : কম্পিউটারকে এমন একটি ক্ষমতা দেওয়া হয়, যার জন্য সেটি যেকোনো কিছু আগে থেকে ওই বিষয়ক প্রোগ্রাম লেখা ছাড়াই শিখতে পারে- এটিই মেশিন লার্নিং। নিজে থেকে শেখার ক্ষমতার কারণে কম্পিউটার যেকোনো কিছুই করতে পারে খুব সহজে। অন্যভাবে বলা যেতে পারে, যদি কম্পিউটারের খেলার সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি তার জেতার হার বেড়ে যায়, তাহলে বুঝতে হবে সেই কম্পিউটারটি আসলেই শিখছে। মানে সে খেলতে খেলতে শিখছে, আর নিজে থেকে এই শেখার ক্ষমতাকেই বলে মেশিন লার্নিং। মেশিন লার্নিং’-এর মূল তত্ত্ব হচ্ছে, বিপুল পরিমাণ ডেটা বা তথ্য-উপাত্ত থেকে কোনো নির্দিষ্ট তথ্যের প্যাটার্ন বা ‘মডেল’ সঠিকভাবে বের করা। এরপর সেটি ব্যবহার করে নতুন কোনো তথ্যের শ্রেণিবিন্যাস করা, যেটি ‘ক্লাসিফিকেশন’ হিসেবে
পরিচিত। কথা হচ্ছে, এই ক্লাসিফিকেশন কেন করা দরকার? উত্তর হচ্ছে- ধরুন আপনাকে বলা হলো এক, দুই ও পাঁচ পয়সার শ্রেণিবিন্যাস করতে, আপনি কীভাবে সেটি করবেন? একটি উপায় হচ্ছে, আপনি পয়সাগুলো তাদের পরিধি আর ওজন অনুযায়ী ভাগ করতে পারেন। কারণ, একেক পয়সার পরিধি আর ওজন একটু ভিন্নই হয়ে থাকে। এই শ্রেণিবিন্যাস

জিনিসটি মানুষের জন্য হয়তোবা অনেক সহজ, কিন্তু একটি কম্পিউটার প্রোগ্রামের জন্য নয়। এই শ্রেণিবিন্যাস কোনো প্রোগ্রামারের বোঝার জন্য দরকার অনেক ডেটা, যা থেকে প্রোগ্রাম বুঝতে পারবে সঠিকভাবে পয়সার শ্রেণিবিন্যাস ও শনাক্তকরণ। মেশিন লার্নিয়ের প্রয়োগের ক্ষেত্রগুলো হচ্ছে- স্পিচ রিকগনিশন, ইমেজ রিকগনিশন ও অনুমান।
স্পিচ রিকগনিশন : সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে মানুষের কথা শুনে তা টেক্সটে রূপান্তর করতে পারে স্পিচ রিকগনিশন। মেশিন লার্নিং অ্যাপ্লিকেশন হচ্ছে একসেট সংখ্যা, যা স্পিচ সংকেত তুলে ধরে। বিভিন্ন ভাগে এ সংকেত ভাগ করে নির্দিষ্ট শব্দ বা ধ্বনিকে পৃথক করা যায়। বিভিন্ন সময় ও ফ্রিকোয়েন্সি হিসাব করে এসব স্পিচ সংকেত তৈরি করা হয়।

ইমেজ রিকগনিশন : মেশিন লার্নিং অ্যাপ্লিকেশনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োগ হচ্ছে ছবি শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ায় কাজ করা। অনেক সময় বস্তুকে ডিজিটাল ইমেজ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। ডিজিটাল ইমেজের ক্ষেত্রে প্রতিটি ছবির পিক্সেল হিসাব করে তা পরিমাপ করা হয়। এতে ফেস ডিটেকশন ও ক্যারেক্টার ডিটেকশন দুটি পদ্ধতিতে কাজ করে।
অনুমান : মেশিন লার্নিং ও আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স ব্যবহার করে কোনো বিষয়ে অনুমানের কাজে লাগানো যেতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোনো ব্যাংকের ঋণ দেওয়ার আগে কোনো ব্যক্তি ঋণ পরিশোধ করবে কি না, তার পূর্বানুমান মেশিন লার্নিং দিয়ে বের করা যায়। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে প্রয়োজন হয় নির্দিষ্ট তথ্য কাজে লাগানোর বিষয়টি। এ ক্ষেত্রে ডেটা অ্যানালিস্টদের ভূমিকা রাখতে হয়। বর্তমানে বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সাধারণ প্রতিষ্ঠানেও মেশিন লার্নিং প্রকৌশলীদের চাহিদা বাড়ছে। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন তথ্য কাজে লাগিয়ে তা থেকে প্রয়োজনীয় সুবিধা পেতে উৎসাহ দেখাচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। মেশিন লার্নিং প্রকৌশলী, ডেটা সায়েন্টিস্ট, এআই আর্কিটেক্ট, বিজনেস অ্যানালিস্ট ও পরিসংখ্যানবিদ হিসেবে কাজের সুযোগ রয়েছে এ খাতের কর্মীদের।
(শেষ) [তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া]

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট