চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

ডিজিটাল বিজ্ঞাপন থেকে এপলের আয় বাড়বে ৫ গুণ

অনলাইন ডেস্ক

১৮ নভেম্বর, ২০১৯ | ১১:৩৪ অপরাহ্ণ

বিশ্বব্যাপী মানুষ এখন ডিজিটাল মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় করছে। যে কারণে পণ্য প্রচারণায় বিজ্ঞাপনদাতাদের লক্ষ্যও ডিজিটাল মাধ্যমকেন্দ্রিক হয়ে উঠছে। ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল বিজ্ঞাপন খাতকে লক্ষ্য করে পণ্য ও সেবার ডিজাইন করছে গুগল, ফেসবুক, এমাজন ও এপল ইনকরপোরেশনের মতো প্রযুক্তি জায়ান্টরা। এসব প্রতিষ্ঠান খাতটিকে আয় বাড়ানোর অন্যতম মাধ্যম হিসেবে দেখছে। ডিজিটাল বিজ্ঞাপন খাতকে লক্ষ্য করে নানা ডিজিটাল সেবার পাশাপাশি এপল টিভি প্লাস’ নামে সেবা চালু করেছে এপল, যা ২০২৫ সাল নাগাদ ডিজিটাল বিজ্ঞাপন খাত থেকে প্রতিষ্ঠানটির আয় এখনকার চেয়ে পাঁচ গুণ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎ আগামী ছয় বছরে শুধু ডিজিটাল বিজ্ঞাপন প্লাটফর্ম থেকে এপলের বার্ষিক আয় ১ হাজার ১০০ কোটি ডলারে পৌঁছবে। গত শুক্রবার মার্কিন বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক সেবাদাতা হোল্ডিং কোম্পানি জেপি মরগানের বিশ্লেষকদের পক্ষ থেকে এমন পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। খবর রয়টার্স।

বৈশ্বিক ডিজিটাল বিজ্ঞাপন খাতে দ্বৈত আধিপত্য বিস্তার করে আছে সার্চ জায়ান্ট গুগল ও সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুক। এ খাত উভয় প্রতিষ্ঠানের আয়ের অন্যতম উৎসে পরিণত হয়েছে। ই-কমার্স জায়ান্ট এমাজনও ডিজিটাল বিজ্ঞাপন খাত থেকে উল্লেখযোগ্য রাজস্ব আয় করছে। ক্রমবর্ধমান এ খাতে এপলের আয় বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্র: বণিক বার্তা

জেপি মরগানের বিশ্লেষক সামিক চ্যাটার্জি জানান, ফেসবুক তাদের সোস্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট অন্য সেবাগুলোয় বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমে আয় বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। গুগল তাদের প্লে স্টোর ও ব্রাউজারে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমে আয় বাড়িয়েছে। ডিজিটাল বিজ্ঞাপন খাতে আধিপত্য বাড়াতে নিয়মিত নতুন ডিজাইনে পণ্য ও সেবা আনছে। একইভাবে এপল তাদের এপ স্টোর ও সাফারি ব্রাউজার ব্যবহারকারীদের মধ্যে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে রাজস্ব আয় বাড়াতে পারে।

তিনি জানান, ডিজিটাল বিজ্ঞাপন খাত থেকে এপলের বার্ষিক এক-তৃতীয়াংশ রাজস্ব বাড়ানোর সম্ভাবনা আছে। অর্থাৎ ডিজিটাল বিজ্ঞাপন খাত থেকে প্রতি বছর প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আয় ২০০ কোটি ডলার করে বাড়তে পারে, যা বাস্তবে সম্ভব হলে আগামী ছয় বছরে শুধু ডিজিটাল বিজ্ঞাপন খাত থেকে প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আয় ১ হাজার ১০০ কোটি ডলারে পৌঁছবে। এখন পর্যন্ত বিজ্ঞাপন খাতের রাজস্ব নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য দেয়নি এপল।

এপলের রাজস্বে আইফোনের গুরুত্ব কমছে। প্রতিষ্ঠানটির গত হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) মোট রাজস্বের ৪৮ শতাংশ আইফোন বিক্রি থেকে এসেছে। অথচ প্রথম প্রজন্মের আইফোন উন্মোচনের পর থেকে বরাবরই প্রতিষ্ঠানটির রাজস্বের সিংহভাগ আইফোন বিক্রি থেকে এসেছে। এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে প্রথমবার প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটির প্রান্তিকভিত্তিক মোট রাজস্বে আইফোনের গুরুত্ব অর্ধেকের নিচে নেমেছে।

টানা দুই বছর খারাপ সময় পার করছে এপল। এ পরিস্থিতির জন্য প্রত্যাশিত সংখ্যক ইউনিট আইফোন বিক্রি না হওয়াকে দায়ী করা হচ্ছে। শুধু আইফোন নয়; নতুন খাতে ব্যবসা প্রবৃদ্ধি নিয়েও চাপে আছে প্রতিষ্ঠানটি। বিভিন্ন খাতে ব্যবসা বাড়াতে গবেষণা ও উন্নয়ন (আরএন্ডডি) বিভাগের পাশাপাশি অধিগ্রহণ ও একীভূতকরণে জোর দিচ্ছে এপল। এরই অংশ হিসেবে গত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে ১০০ কোটি ডলারে সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি ইন্টেলের স্মার্টফোন মডেম চিপ বিভাগ অধিগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গত হিসাব বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এপল কেয়ার ও এপল মিউজিকের মতো সেবাগুলো থেকে এপলের রাজস্ব আয় হয়েছে ১ হাজার ২৫১ কোটি ডলার।

গত সেপ্টেম্বরে ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরাসংবলিত নতুন আইফোন উন্মোচন করেছে এপল। একই সময় টিভি স্ট্রিমিং সেবা উন্মোচন করা হয়। রাজস্ব আয়ে বৈচিত্র্য আনয়নে এখন আইফোনের পাশাপাশি সেবা খাতে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

জেপি মরগানের বিশ্লেষকদের ভাষ্যে, আইফোনকেন্দ্রিক উদ্ভাবন এখন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে। ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরাসংবলিত আইফোন কতটা সাড়া ফেলবে তা নিশ্চিত নয়। যে কারণে আইফোনের বিক্রি বাড়ানোর পাশাপাশি বিভিন্ন সেবা ব্যবসায় বিভাগ ও নতুন এপল টিভি প্লাস স্ট্রিমিংয়ে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে এপল। এর ফলে প্রতিষ্ঠানটির রাজস্বে এপ স্টোরসহ বিভিন্ন সেবা খাত ও ডিজিটাল বিজ্ঞাপন প্লাটফর্মের গুরুত্ব বাড়ছে।

 

 

পূর্বকোণ-রাশেদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট