চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

৫০ লাখ ফ্রিল্যান্সার বছরে আয় করছে ৮৫০ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১০:২৭ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ ফ্রিল্যান্স পেশার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তারা বছরে ১০ কোটি ডলার আয় করছে। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ৮৫০ কোটি টাকা। ২০১১ সালে বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা মোট ২০ হাজার ছিল। উন্নত দেশগুলো তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে যে মাত্রায় এগোচ্ছে, বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো সে তুলনায় পারছে না। গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) ‘ডিজিটাল ইকোনমি রিপোর্ট ২০১৯’ প্রকাশ করে এ তথ্য তুলে ধরেছে আঙ্কটাড।

রিপোর্টে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোয় এ খাতে কর্মসংস্থান পরিমাপও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সর্বশেষ অর্থনৈতিক শুমারির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালে বাংলাদেশে সাড়ে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ কম্পিউটার ও তথ্যসেবায় কর্মরত ছিলেন। ২০১৬ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৩ সালে বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে ফ্রিল্যান্সিং করতেন ৩০ হাজার মানুষ। ২০১৭ সালে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করেছেন বছরে ১০ কোটি ডলার। তবে ফ্রিল্যান্সাররা কোন শিল্প থেকে আয় করেছেন তার কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া না গেলেও তাদের সবাই যে আইসিটি খাতে কাজ করেননি, তা স্পষ্ট।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে এ খাতে পেশাদার কর্মী ছিলেন তিন লাখ। বাংলাদেশে আইটি খাতে কর্মসংস্থান সংক্রান্ত সঠিক তথ্য না থাকার কথা উল্লেখ করে এতে বলা হয়েছে, ডিজিটাল অর্থনীতি প্রতিষ্ঠায় দেশগুলোর সামষ্টিক ব্যবস্থাপনায় একক পদ্ধতি প্রণয়ন করা উচিত। ই-কমার্সের প্রভাব ও অন্যান্য ডিজিটাল বিকাশে মূল স্টেক হোল্ডারদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে সরকারি-বেসরকারি সংলাপের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়েছে, আইসিটিতে কর্মসংস্থান বাড়াতে বিভিন্ন আকারের এন্টারপ্রাইজও থাকবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি ব্যবসা (এমএসএমই) থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহে বাংলাদেশ, মাদাগাস্কার, সলোমন দ্বীপের মতো দেশগুলো সরকারি-বেসরকারি সংলাপ করে থাকে। এক্ষেত্রে মিয়ানমারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও এজেন্সিগুলোর সঙ্গে পৃথক আলোচনা সভার আয়োজন করে। এরপরই দেশটি আঙ্কটাডের ই-ট্রেড রেডিনেস এসেসমেন্টের সুপারিশ জানায়। উন্নয়নে অংশীদারদের সহযোগিতা পাওয়ার জন্য তাদের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজনও করে মিয়ানমার।

ব্যক্তি খাতের কুরিয়ার কোম্পানি, লজিস্টিক্স ও জাতীয় ডাক সেবাদাতাদের সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে নতুন সমাধান ব্যবহারে উৎসাহ জোগাতে সরকার বিবেচনা করতে পারে বলে প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) আইসিটি সেবা রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ আয় করেছে ৫৩ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৪৮ কোটি ডলার। ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি সেবা রপ্তানি থেকে ১০০ কোটি ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রার কথা জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।  প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালে আইসিটি খাতে বৈশ্বিক কর্মসংস্থান ৩ কোটি ৪০ লাখ থাকলেও ২০১৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৯০ লাখে। আর মোট কর্মস্থান আইসিটির হিস্যা এই সময়ে ১ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে বেড়ে পৌঁছেছে ২ শতাংশে। গত বছর বিশ্বে ডিজিটাল সেবা রপ্তানি হয়েছে ২ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের, যা ওই বছরের বৈশ্বিক সেবা রপ্তানির ৫০ শতাংশ। স্বল্পোন্নত দেশগুলোয় এ ধরনের সেবার হার মোট রপ্তানি সেবার প্রায় ১৬ শতাংশ।

প্রতিবেদন মতে, গ্লোবাল ইন্টারনেট প্রটোকল (আইপি) ট্যারিফের বিকল্প হিসেবে তথ্যপ্রবাহ ১৯৯২ সালে দৈনিক ১০০ গিগাবাইটের (জিবি) মতো থাকলেও ২০১৭ সালে প্রতি সেকেন্ডে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার বেশি গিগাবাইটে। আরও বেশি মানুষ ইন্টারনেটের সঙ্গে যোগ হওয়ায় ও ইন্টারনেট অব থিংসের (আইওটি) পরিসর বাড়ায় আইপি ট্র্যাফিক ২০২২ সাল নাগাদ প্রতি সেকেন্ডে ১ লাখ ৫০ হাজার ৭০০ জিবিতে পৌঁছবে। এর নেতৃত্বে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। ব্লক চেইন প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট পেটেন্টগুলোর ৭৫ শতাংশ, আইওটিতে বৈশ্বিক ব্যয়ের ৫০ শতাংশ ও বৈশ্বিক ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের বাজারের ৭৫ শতাংশের বেশি এ দুই দেশের দখলে। এছাড়া বিশ্বের ৭০ শীর্ষ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের বাজার মূলধনের ৯০ শতাংশই এই দুই দেশের দখলে। বিশ্বে ডিজিটাল অর্থনীতির পরিসর বৈশ্বিক মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৪ দশমিক ৫ থেকে ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ। বিশ্বের আইসিটি খাতে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের অবদান প্রায় ৪০ শতাংশ।

সূত্র : দেশ রূপান্তর

 

 

পূর্বকোণ/আফছার

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট