চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাছে কি চাকরি খোয়া যাবে?

অনলাইন ডেস্ক

১৯ মার্চ, ২০২৩ | ৭:৪৬ অপরাহ্ণ

বড়সড় সব প্রতিষ্ঠান নানা এআই প্রযুক্তি তাদের দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে। এর মধ্যে আছে কোকা-কোলা, স্ন্যাপচ্যাট ও বারবি ডলের জন্য বিখ্যাত ম্যাটেল ইংক। শুধু চ্যাটজিপিটি নয়, ডালই ও ওপেন এআইয়ের অন্যান্য বিশেষায়িত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগাচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, এখনো এআই প্রযুক্তি নিয়ে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাকি। প্রতিষ্ঠানগুলোর মুখপাত্ররা সে বিষয়ে বলেছেন, ঝুঁকির ভয়ে বসে থাকলে চলবে না, বরং ব্যবহার করলেই প্রযুক্তিটির সমস্যা খুঁজে বের করে সমাধান করা যাবে।

 

লিখিত বর্ণনা থেকে ছবি তৈরির এআই ডালই কাজে লাগাচ্ছে ম্যাটেল। তাদের হট হুইলস সিরিজের খেলনা গাড়ির নিত্যনতুন সব ডিজাইন তৈরির জন্য ডালই চমৎকার কাজ করছে বলে জানা গেছে। ব্যবহৃত গাড়ি বিক্রেতা কারম্যাক্স কাজে লাগাচ্ছে চ্যাটজিপিটি। তাদের হাজারো ক্রেতার রিভিউ থেকে সারাংশ তৈরি করে দ্রুত রিপোর্ট তৈরিতে কাজে লাগছে এআই। বাজার বাসায় পৌঁছে দেওয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ইনস্টাকার্টও চ্যাটজিপিটি কাজে লাগাচ্ছে। তাদের ক্রেতারা অর্ডার করার আগে খাবার ও অন্যান্য পণ্যের বিষয়ে প্রচুর প্রশ্ন করে থাকে, সেগুলোর জাবাব দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে চ্যাটজিপিটি। একইভাবে চ্যাটবট তৈরিতেও চ্যাটজিপিটিকে কাজে লাগাচ্ছে স্ন্যাপচ্যাট।

 

কোকা-কোলা ঠিক কিভাবে এআই কাজে লাগাবে, তা বিস্তারিত জানায়নি। তবে চ্যাটজিপিটি ও ডালই ব্যবহার করে নতুন মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের জন্য আইডিয়া তৈরি করার উপায় নিয়ে কাজ করছে তারা। কোকা-কোলার সিইও জেমস কুইনসি বলেছেন, নতুন প্রযুক্তি একেবারে শুরুতেই কাজে লাগানোর উপায় বের করতে না পারলে বাজারে পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে। কোমল পানীয়ের বাজারে নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতেই তাদের এই চেষ্টা।

 

বেশ কিছু প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান একত্র হয়ে অলাভজনক গ্রুপ দ্য পার্টনারশিপ অন এআই গঠন করেছে, যার দায়িত্বে আছেন ক্লেয়ার লিবোইজ। তিনি বলছেন, এভাবে আগপাছ চিন্তা না করে প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনোভাবেই এআই দিয়ে কাজ করানো উচিত হচ্ছে না। এআই এখনো একেবারেই নতুন প্রযুক্তি। এটির ব্যবহারে কোনো নীতিমালাও তৈরি করা হয়নি বা সেটার প্রভাবে যাতে গণহারে চাকরি না হারান কর্মচারীরা, সে জন্যও কোনো সেফটিবেল্ট তৈরি করা হয়নি। এ ছাড়া এআই অনেক সময়ই ডাটাসেট তৈরির জন্য কপিরাইট আইন ভাঙছে, সেটার জন্যও এখনো আইন তৈরি করা হয়নি। চ্যাটজিপিটি এখনো প্রচুর ভুল তথ্য ব্যবহারকারীদের সামনে তুলে ধরে, তাই এর ওপর পুরোপুরি নির্ভর করাও অনুচিত বলেই মনে করছেন তাঁরা। এখনই এসব টুল ব্যবহার শুরু করলে ভবিষ্যতে আইনি জটিলতায় পড়তে পারে প্রতিষ্ঠানগুলো। বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে তাদের পণ্যের ক্রেতা ও সেবা ব্যবহারকারীদের।

 

আগামী দিনে যদি ডালই বা চ্যাটজিপিটিকে কপিরাইট আইনের মাধ্যমে অবাধে ছবি ও লেখা ইন্টারনেটের প্রতিটি অংশ থেকে জোগাড় করায় বাধা দেওয়া হয়, তাহলে টুলগুলো দ্রুতই কার্যকারিতা হারাবে। যেসব প্রতিষ্ঠান এখনই বড় ধরনের বিনিয়োগ করছে এআই প্রযুক্তিতে, তারা বিশাল ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।

 

এদিকে চ্যাটবটের উদ্ভট উত্তর দেওয়ার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছেই। অ্যাপের মধ্যে এআই চ্যাটবট বসানোর ব্যাপারে সেটাও একটা বড় চিন্তার বিষয়।

 

প্রচুর সতর্কবাণী দেওয়ার পরও অ্যামাজন, মাইক্রোসফট, গুগল ও ওপেনএআইয়ের মতো বড় কম্পানির পাশাপাশি হাগিং ফেসের মতো স্টার্টআপও হাজারো কোটি ডলার এআই প্রযুক্তিতে ঢেলেই যাচ্ছে। সামনের দিনগুলোতেই বোঝা যাবে আদতে কর্মক্ষেত্রে এআইয়ের অবস্থান ঠিক কোথায় হয়। তথ্যসূত্র: কালের কণ্ঠ

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট