চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

লাভজনক অফারের লিংক দিয়ে ফেসবুকে স্ক্যামারদের ফাঁদ!

১৭ জুলাই, ২০২২ | ৩:৫৯ অপরাহ্ণ

ফেসবুকের মাধ্যমে অনেক স্ক্যামিং হয়, এ কথা সত্য। তাই বলে সব প্রোডাক্ট/সার্ভিসই খারাপ- তা মনে করার কোন কারণ নেই। কিছু কিছু মানুষ অতিমাত্রায় সচেতনতা গ্রহণ করতে গিয়ে এমন সব বোকামী করে বসে যে, শেষ পর্যন্ত সে-ই স্ক্যামড (প্রতারিত) হয়ে পড়ে। প্রতারণার হাত থেকে রেহাই পেতে আপনার বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগাতে হবে, বুঝতে হবে কোনটি ভাল এবং কোনটি খারাপ। যে প্রোডাক্ট/সার্ভিস আপনি কিনছেন তার আদ্যোপান্ত আগে জেনে নিতে হবে। আপনি কি কিনছেন, কিভাবে সেটি ডেলিভারি পাবেন এবং এখানে ঝুঁকি কতটুকু সেটি আগেই যাছাই করে নিতে হবে। কাউকে বিশ্বাস কিংবা অবিশ্বাস করারও দরকার নেই। আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বাস্তবতার নিরিখে।

আমেরিকার লোকজন অনলাইনে সবচেয়ে বেশি কেনাকাটা করে। সে কারণে আমেরিকার ট্রাফিক/অডিয়েন্স সকল ডিজিটাল ক্রেতার কাছে জনপ্রিয়। তারা অনলাইনে সবচেয়ে বেশি খরচ করলেও তারা কিন্তু স্ক্যামিং-এর শিকার হোন না। মনে করুন, মার্কেটে একটি প্রোডাক্টের দাম ৫০ ডলার। কেউ ফেসবুকে পণ্যটি ৫ ডলারে অফার করলে আমেরিকার মানুষ স্ক্যাম মনে করে সেটি এড়িয়ে যাবে। কিন্তু এক্ষেত্রে বাংলাদেশ, ভারত, নিউজিল্যান্ড, ফিলিপাইনের লোকেরা পণ্যটি কেনার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়বে। পরবর্তীতে দেখা যাবে যে, তারা প্রতারিত হয়েছেন।

 

কাজেই সর্বপ্রথম আপনাকে লক্ষ্য করতে হবে যে প্রোডাক্ট/সার্ভিস আপনি কিনছেন সেটির দাম প্রকৃতপক্ষে কত এবং ফেসবুকে কি মূল্যে সেটি অফার করা হচ্ছে। যদি মূল্যের মধ্যে অনেক তারতম্য থাকে তাহলে বুঝতে হবে যে, এতে নিশ্চয়ই কোন সমস্যা আছে এবং আপনার প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। প্রোডাক্টের দাম মূল ওয়েবসাইটে বেশি, কিন্তু ফেসবুকে সেটি খুব অল্প দামে স্ক্যামাররা কিভাবে আপনাকে দেয় সেরকম কয়েকটি প্রোডাক্ট নিয়ে পরবর্তীতে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ। বেশি দামের জিনিস খুব অল্প দামে কিনতে গিয়ে আপনি ধরা খাবেন এটি খুবই স্বাভাবিক।

কিছু কিছু প্রোডাক্ট আইন এবং নৈতিকভাবে অবৈধ, কিন্তু ফেসবুকে সেটি বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করা হয়। যেগুলো কিনলে আপনি নিশ্চিতভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। হয়তো তাৎক্ষণিকভাবে আপনি মনে করবেন যে, বাহ্ প্রোডাক্ট তো বেশ ভালো। কিন্তু কিছু সময় পরেই আপনি আর সেটি ব্যবহার করতে পারবেন না। যেমন ধরুন পে-পাল (Paypal)-এর সার্ভিস বাংলাদেশে নেই। কিন্তু ফেসবুকে খুঁজলে আপনি দেখবেন যে, আমেরিকার ভেরিফাইড পে-পাল উল্লেখ করে অনেকে বিক্রি করছেন। এই সকল একাউন্ট তৈরি করা হয় মিথ্যা তথ্য দিয়ে। এরকম ভুয়া তথ্য দিয়ে তৈরি করা পে-পাল ছোট ছোট লেনদেনের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন। হঠাৎ একদিন দেখবেন আপনার পে-পাল একাউন্টটি লিমিটেড হয়ে গেছে। এছাড়াও পে-পাল কর্তৃপক্ষ আপনার নিকট থেকে আরো ডকুমেন্ট চাইবে। ওই সময় আপনার একাউন্টে হয়তো কিছু ডলার ছিল। তাদের কাঙ্ক্ষিত ইনফরমেশন/ডকুমেন্ট দিতে সক্ষম না হলে, যাদের কাছ থেকে আপনি পে-পাল কিনেছিলেন তারাও কোন সাহায্য করতে পারবেন না। তার মানে কিছু ডলারসহ আপনার একাউন্টটি লিমিট হওয়ায় আপনি ক্ষতিগ্রস্থ হলেন এবং আপনার মার্কেটিং বাধাগ্রস্থ হলো।

 

বুদ্ধিমান মানুষ কোন অবৈধ প্রোডাক্ট কেনেন না। পাশাপাশি স্বল্পমূল্যের লোভনীয় অফারের ফাঁদেও পা দেবেন না। অতএব আপনাকে সতর্ক ও সৎ থাকতে হবে, তাহলে আপনি স্ক্যামিং-এর শিকার হবেন না। স্ক্যামিং থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজনীয় টিপস পেতে আমাদের সঙ্গে থাকুন।

লেখক: ডিজিটাল মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ

 

পূর্বকোণ/এএস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট