চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সু স্থ থা কু ন

সাধারণ জ্বর ও নিউমোনিয়াকে আলাদা করে চিনবেন কীভাবে ?

২০ জানুয়ারি, ২০২০ | ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ

ধুম জ্বর, প্রবল কাশি, বুকে সংক্রমণ। এই সব উপসর্গ যখন আপনার ভাবনাকে ‘ভাইরাল ফিভার’-এর ‘ভুল’ পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তখনই হয়তো শরীরে ডালপালা মেলছে স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনি। নিউমোনিয়া ছড়ানো এই ব্যাকটিরিয়া ফুসফুসে প্রদাহ তৈরির সঙ্গে জলও জমিয়ে ফেলতে পারে নিঃসাড়ে। সচেতন না হলে অসুখ ছিনিয়ে নিতে পারে জীবনও। শীতে নিউমোনিয়ার প্রকোপ বাড়ে। এই ব্যাকটিরিয়া ছাড়াও ছত্রাক ও ভাইরাসঘটিত কারণেও শরীরে দানা বাঁধতে পারে নিউমোনিয়া। তাই নিউমোনিয়ার নানা প্রকারভেদও রয়েছে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার তেমন নির্দিষ্ট কোনও বয়স নেই। তবে শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
নিউমোনিয়া ছোঁয়াচে কিনা : চিকিৎসকের মতে, ‘‘আক্রান্ত রোগীকে স্পর্শ করলে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা একেবারেই নেই। কিন্তু রোগী কাশি বা হাঁচি থেকে এই রোগের জীবাণু ছড়াতে পারে। একে ‘ড্রপলেট ইনফেকশন’ বলা হয়।’’

নিউমোনিয়ার টিকা : চিকিৎসকের পরামর্শ, শিশুদের বেলায় আগাম রোগ প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে নিউমোনিয়ার টিকা দেওয়া হয়। নিউমোনিয়ার টিকা সাধারণত দু’প্রকারের হয়। বছরে এক বার নেওয়া যেতে পারে। আবার পাঁচ বছর অন্তর বুস্টার ডোজেও নেওয়া যায় নিউমোনিয়ার টিকা। যাঁরা ইতিমধ্যেই নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত বা আক্রান্ত হতে পারেন এমন মানুষদের ক্ষেত্রে অন্য ধরনের টিকা দেওয়া হয়। তবে সব টিকা নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া খুবই দরকার। তবে এই ধরনের টিকায় তেমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। কারও কারও ক্ষেত্রে অ্যালার্জি দেখা দেয় বা সামান্য জ্বর আসে। সাধারণ কিছু ওষুধেই তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

রোগের উপসর্গ : এই অসুখের মূল লক্ষণ ধুম জ্বর। জ্বর কখনও একটু কমলেও কিছু সময় বাদেই ফের তীব্র ভাবে ফিরে আসে। সঙ্গে শ্বাসকষ্ট ও শ্বাস নিতে বুকে ব্যথা।
সাধারণ জ্বর, সর্দি-কাশির থেকে আলাদা কোথায় : সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশি সময়ের সঙ্গে ওষুধপত্র খেতে খেতে কমে। এই অসুখে জ্বর তো কমেই না, উল্টে তা উচ্চ তাপমাত্রায় থেকে যায় বা বাড়তে থাকে। শ্বাসকষ্ট ও কাশির সমস্যাও বাড়ে। সাধারণ ওষুধে রোগী আরাম পান না।

রোগ নির্ণয় কী ভাবে : একমাত্র চিকিৎসকের পক্ষেই বোঝা সম্ভব যে আক্রান্ত ব্যক্তির সাধারণ ঠান্ডা লাগার শিকার, না নিউমোনিয়া দানা বেঁধেছে শরীরে। তার পরেও নিশ্চিত হতে প্রয়োজনীয় কয়েকটা পরীক্ষা করাতে হয়। অনেক সময় এক্স-রে, সিটি স্ক্যানও করা হয়।

রোগ প্রতিরোধে করণীয় : ধূমপান থেকে অবশ্যই দূরে রাখতে হবে রোগীকে। এমনকি কোনও ভাবে প্যাসিভ স্মোকিংও চলবে না। ফুসফুসের কোনও রোগ থাকলে এর পাশাপাশি সে চিকিৎসাও করতে হবে। ডায়াবিটিস আক্রান্ত হলে বা লিভারের কোনও অসুখ থাকলে চিকিৎসকের কাছে তা আড়াল করবেন না। অ্যাজমা থাকলে ইনহেলার রাখতে হবে কাছে। দূষণ থেকেও দূরে থাকতে হবে রোগীকে। ধুপকাঠির ধোঁয়া, ধুনো, মশা মারার কয়েল রোগীর ঘর থেকে বাদ দিতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা সব সময়ই উচিত। অসুখের সময় রোগের জীবাণু রুখতে সে দিকে আরও বেশি করে সময় দেওয়া উচিত। কোনও ভাবেই ঠান্ডা লাগানো যাবে না।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট