চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

চর্মরোগ : পিটাইরিয়াসিস এলবা

সব সাদা দাগ শ্বেতি কুষ্ঠ নয়

ডা. প্রীতীশ বড়ুয়া

৯ মে, ২০১৯ | ২:২১ অপরাহ্ণ

পিটাইরিয়াসিস এলবা নামক চর্মরোগটি একপ্রকার লো গ্রেড একজিমা। দেখতে কাছাকাছি হলেও এটি কিন্তু শ্বেতী বা কুষ্ঠ নয়। যদিও এটি নিয়ে অভিভাবকদের মাঝে দুঃশ্চিন্তার শেষ নাই। ৩-১৬ বছর বয়সী শিশু কিশোরদের মধ্যে এর হার বেশি। সাদা চামড়া থেকে আমাদের মত বাদামী চামড়ায় এটির লক্ষণ বেশি প্রকাশ পায়। রোগটির কারণ পুরাপুরি জানা না গেলেও ধারণা করা হয়- শুষ্ক চামড়া, সূর্যালোক, এটোপিক ডারমাটাইটিস নামক একটি চর্মরোগ এর সাথে এটি সম্পৃক্ত।
এই রোগটির প্রধান আক্রমণ স্থল মুখ ম-ল। তবে দেহকান্ড ছাড়া অন্যান্য স্থানে কমবেশি দেখা দিতে পারে। এক বা একাধিক গোলাকার বা ডিম্বাকৃতি আকার নিয়ে চর্মচিহ্ন গুলি ধীরে ধীরে হালকা গোলাপি থেকে সাদাটে বর্ণ ধারণ করে। উপরিতলে সুক্ষè বা সময় সময় মোটা খুসকির মত আবরণ দেখা যায়। সাদাটে হবার পেছনে ত্বকের বর্ণ উৎপাদক মেলানিন ঘাটতি দায়ী। পিটাইরিয়াসিস এলবা রোগটিতে সাদাটে ও খসখসে ভাব শীতকালে ও সূর্যালোকে বাড়ে। শ্বেতী রোগে মেলানিন এবং খুসকি একেবারেই থাকে না, তাই চর্মচিহ্ন একদম সাদা ও তেলতেলে থাকে। আর কুষ্ঠ রোগে অনুভূতি থাকে না। সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে শ্বেতী ও কুষ্ঠ রোগের সাথে এই রোগটি মিলিয়ে ফেলার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেলেও, চিকিৎসকেরা লক্ষণ উপসর্গ বিচার করে সহজেই এটি নির্ণয় করতে পারেন। সামান্য ক্ষেত্রে কিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। প্রতিরোধক ব্যবস্থার মধ্যে ত্বক নরম মসৃণ রাখা, সূর্যালোক ও অতিরিক্ত প্রসাধন এড়িয়ে চলা অন্যতম। এছাড়াও পর্যাপ্ত পানি পান ও শাক-সব্জি সহ সূষম খাদ্য গ্রহণের উপদেশ দেওয়া হয়। এই রোগের জন্য প্রতিকারক চিকিৎসা অনেক ক্ষেত্রেই দরকার নাই, শুধু উপরে উল্লেখিত পরামর্শ মেনে চললেই হয়।
প্রয়োজনে ত্বকে লাগানোর জন্য হালকা স্টেরয়েড বা ট্যাক্রোলিমাস দেওয়া যেতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে ত্বকের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসতে সময় লাগে। ঔষধ লাগানোর পরবর্তীতে ত্বক তেলেতেলে হলেও সাদাটে ভাব একটু বেড়ে যেতে পারে। ধীরে ধীরে বর্ণ উৎপাদক মেলানিন ঘাটতি পূরণ হয়ে ত্বক স্বাভাবিক হয়ে আসে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট