চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

ঘরোয়া পদ্ধতিতে দূর করুন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা

আছিয়া পারভীন আলী শম্পা

৩১ আগস্ট, ২০১৯ | ৬:০৮ অপরাহ্ণ

শারীরিক সমস্যাগুলোর মধ্যে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেশ কষ্টকর। নানা কারণে, কমবেশি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগতে হয়। তবে যাদের সমস্যা ক্রনিক তাদের কষ্টের পরিমাণ একটু বেশিই বলা চলে। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে সমস্যা এতবেশি যে নিয়মিত ঔষধ গ্রহণ করতে হয়। যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কম তাদেরও খাওয়া-দাওয়ার অনিয়মের কারণে গ্যাস্টিকের সমস্যা বেড়ে যায়। ডাক্তারের পরামর্শ ব্যাতিত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবন করে থাকেন তারা নীচের প্রাকৃতিক উপাদান গুলো খেতে পারেন। আবার নিয়মিত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবন করলে হাড় ক্ষয়ে যাবার ঝুঁকিও বেড়ে যায়। তাই আজ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধানের জন্য,কিছু ঘরোয়া প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করা হবে।

আজওয়াইন

প্রায়ই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাতে যারা ভুগে থাকেন তারা প্রতিদিন এক চা চামচ আজওয়াইন বা জোয়ান এক গ্লাস পানির সাথে মিশিয়ে খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হবে খুব সহজেই। আজওয়াইন থাকা থাইমল নামক উপাদান পাকস্থলী থেকে গ্যাস্ট্রিক জুস নিঃসরণে সাহায্য করে।

ফ্রেশ আদা

ফ্রেশ আদা কুচি বা আদার চা হজমে বেশ সাহায্য করে। যখনই পেটে গ্যাস হবে তখনই এক চা চামচ আদা কুচি করে সামান্য লেবুর রস দিয়ে চিবিয়ে খেলে আরাম পাওয়া যাবে ধীরে ধীরে। এছাড়া গ্যাস্টিকের সমস্যা হলে দুই টেবিল চামচ আদার রস, এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হবে দ্রুত।

ত্রিফলা

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য আরেকটি প্রাকৃতিক উপাদান ত্রিফলা। মাত্র হাফ চা চামচ ত্রিফলা পানিতে ১০-১৫ মিনিট ফুটিয়ে রাতে শোবার আগে পান করতে পারেন যেদিন অতিরিক্ত গ্যাস ফর্ম করে। ত্রিফলা শুধু যে গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর করে তা নয়। পুরো ডাইজেস্টিভ সিস্টেমকে পরিষ্কার করে।

টক দই

নিয়মিত টক দই খেলে বদ হজম বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয় কম। টক দই হল প্রোবায়োটিক, যা অন্ত্রের গুড ব্যাকটেরিয়ার উৎপাদনকে স্টিমুলেট করে। ফলে দূর হয় হজম বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা। প্রতিদিন অন্তত ৩০-৬০ গ্রাম টক দই খাওয়ার চেষ্টা করুন। দিনের বেলাতে দই খাওয়া ভাল। তা নাহলে অনেকের ঠাণ্ডা বা কফজনিত সমস্যা হতে পারে।

হিং

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য আরেকটি প্রাকৃতিক উপাদান হল হিং। হাফ চা চামচ হিং এককাপ কুসুম গরম পানিতে মিক্স করে পান করলে গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর হয়। হিং যেসব গাট ব্যক্টেরিয়া অতিরিক্ত গ্যাস উৎপাদন করে তাদের গ্রোথকে বাধা দেয়। ফলে প্রাকৃতিক ভাবেই গ্যাস্ট্রিক দূর হয়।

জিরা

জিরা হলো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য আরেকটি কার্যকর উপাদান। জিরাতে এসেন্সিয়াল অয়েল থাকে যা আমাদের স্যালিভারি গ্লান্ডকে স্টিমুলেট করে ও সঠিক ভাবে হজমে সাহায্য করে। ফলে পেটে অতিরিক্ত গ্যাস ফরমেশন হয়না। এক টেবিল চামচ গোটা জিরা দুই কাপ পানিতে ১০-১৫ মিনিট মাঝারি আচে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিন। এরপর খাবার খাওয়ার ৩০-৪০ মিনিট পর পানিটুকু পান করুন।

এছাড়া যা যা করতে পারেন

যারা প্রায়ই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাতে ভুগছেন তারা ১- ২ টি কাঁচা আমলকি বা এক চা চামচ মৌরি দানা অথবা সামান্য গোল মরিচের গুড়া অল্প লবণ দিয়ে চিবুলে ও গ্যাস্টিকের সমস্যা থেকে রিলিফ পাবেন। তাই গ্যাস্টিকের সমস্যা হলেই যে ঔষধ খেতে হবে তা নয়। হাতের কাছের প্রাকৃতিক উপাদান যেমন নিরাপদ তেমনি কার্যকর। এছাড়া যাদের গ্যস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তারা সময় মত খাবেন। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজি ও পানি পান করবেন। আর খাবার পরিহার করবেন অতিরিক্ত তৈলাক্ত।

সতর্কতা 

যারা গর্ভবতী তারা যেকোন উপাদান গ্রহণের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন। তবে কাঁচা আমলকী, গোল মরিচ বা মৌরি খেতে পারেন।বি শেষ করে গর্ভকালীল গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে কাঁচা আমলকী ভীষণ কার্যকর।

 

 

লেখক : পুষ্টিবিদ,বেক্সিমকো ফার্মা।

পূর্বকোণ/রাশেদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট