চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

পুষ্টিবিদ ডা. হাসিনা আক্তার লিপির পরামর্শ

সেহ্রিতে ভাজাপোড়া ও উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার স্বাস্থ্যসম্মত নয়

ইমাম হোসাইন রাজু

৫ মে, ২০১৯ | ২:৪১ পূর্বাহ্ণ

রমজানের চাঁদ দেখা গেলে আগামী মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে পবিত্র রমজান। রমজানকে ঘিরে মানুষ অনেক পরিকল্পনা করে থাকেন। বিশেষ করে সেহ্রির বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দিয়ে থাকেন সবাই। সেহ্রি খাওয়া রোজার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি রোজাদারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সারাদিনের প্রয়োজনীয় শক্তির জন্য সেহ্রির খাবারের ওপর নির্ভর করতে হয়। তাই সেহ্রির খাবার বাছাইয়ে সকলকেই সতর্ক থাকার পরামর্শ বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিজ্ঞানীদের। তাদের মতে, বেশি বেশি খাওয়া গ্রহণ না করে বরং রোজায় সুস্থ থাকতে হলে সেহ্রির সময় সঠিক ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে। সাধারণত অন্য সময়ের চেয়ে সবাই এ সময়টুকুতে ভালো

ভালো খাবার খেতে পছন্দ করে থাকেন। আমাদের দেশে মানুষের মধ্যে সেহ্রির যে খাদ্যাভ্যাস দেখা যায়, তা পুরোপুরি স্বাস্থ্যসম্মত নয়। খেয়াল করলে দেখা যাবে, সেহ্রির বেশিরভাগ খাবারই হচ্ছে উচ্চ চর্বিসমৃদ্ধ ও তেলে ভাজাপোড়া খাবার। এসব খাবার রোজাদার গ্রহণ করলে শরীর এমনিতেই ক্লান্ত হয়ে পড়বে। খাবার কতটা মানসম্মত ও স্বাস্থ্যকর, সে ব্যপারে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে সবাইকে। বিশেষ করে রমজানের আগেই পরিকল্পনা নিতে হবে কী খাবেন- কেমন খাবার খাবেন।
সেহ্রির খাবারকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানিয়ে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক খাদ্য ও পুষ্টিবিদ ডা. হাসিনা আক্তার লিপি পূর্বকোণকে বলেন, অনেকেই সেহ্রির সময় খাবার গ্রহণ না করে শুধুমাত্র একগ্লাস পানি পান করে রোজা রাখেন, কিন্তু এটাও তার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কেননা এর কারণে ক্লান্ত হয়ে যাবেন রোজাদার। তখন পানির পিপাসা বেড়ে যাবে। শরীরে ডিহাইড্রেশন হয়ে যেতে পারে। পরে এমন পরিস্থিতি দাঁড়াবে যে, কয়েকটি রোজা যাওয়ার পর রোজাদার এতোটাই অসুস্থ হয়ে যাবেন যে তখন রোজা রাখার ক্ষমতা থাকবে না তার। আবার সেহ্রির সময় আমরা যেসব খাবার গ্রহণ করে থাকি তার বেশিরভাগই হচ্ছে চর্বিসমৃদ্ধ এবং তেলে ভাজা যা পুরোপুরি স্বাস্থ্যসম্মত নয়। তবে এসব খাবার নির্বাচনে অবশ্যই শারীরিক অবস্থা ও বয়সের দিকে নজর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন এ পুষ্টিবিদ।
সেহ্রির খাবার যেন সহজপাচ্য ও স্বাস্থ্যসম্মত হয় সেদিকে খেয়াল রাখার কথা জানিয়ে এ পুষ্টিবিদ আরও বলেন, স্বাভাবিকভাবে যেকোনো ধরণের খাবারই সেহরিতে খাওয়া যায়। তবে তা স্বাস্থ্যসম্মত হতে হবে। বাঙালির মুখ্য খাবার হচ্ছে ভাত। তাই সেহ্রিতে ভাত খাওয়াই অত্যন্ত জরুরি। ভাতের সঙ্গে উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। যেমন- মাছ, গোশত, ডিম। ডাল উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। তাই এতে ক্ষতিকর চর্বি নেই। ডাল বেশি গ্রহণ করা যেতে পারে। তাছাড়া সেহ্রির খাবারের তালিকায় যেকোনো সবজি থাকা ভালো। ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, পেঁপে, পটল, কাঁকরোল, করলা, আলু, বরবটি, টমেটো, বেগুন, চিচিঙ্গা-এগুলোর কয়েকটি একসঙ্গে করে নিরামিষ অথবা যে কোনো একটা রান্না করতে পারেন। তবে পাকস্থলিতে উত্তেজনা ও অস্বস্তি সৃষ্টি করে এমন কোনো খাবার খাওয়া উচিত নয়।
স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর সেহ্রি না খেলে আমাদের পানিশূন্যতা, পেটে ব্যথা, এসিডিটি, বমি বমি ভাব. মাথাব্যথা, মাথাঘোরা, খাবার হজমে সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য, কর্মশক্তি কমে যাওয়া, মনোযোগের অভাব, ঘুমের সমস্যা ইত্যাদি হবে বলেও জানান তিনি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট