চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

সু স্থ থা কু ন

খাবার যখন ওষুধের শত্রু

৩০ আগস্ট, ২০১৯ | ১:৫৫ পূর্বাহ্ণ

রোগ হলে কিংবা অসুস্থতায় ভুগলে নিরাময়ের জন্য চিকিৎসা করতে হয়। নিরাময়ের সবচেয়ে কমন উপায় হলো ওষুধ সেবন করা। কিন্তু কিছু ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে বাড়তি সচেতনতার প্রয়োজন পড়ে। অন্যতম একটি সচেতনতা হলো, যেসব ওষুধের সঙ্গে যেসব খাবার খেলে বিপজ্জনক পার্শপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় অথবা ওষুধের কার্যকারিতা কমে যায় সেসব খাবার এড়িয়ে চলা। কোন ওষুধ সেবনকালে কোন খাবার খাওয়া উচিত নয়, এ প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করা হলো।

* অ্যান্টিবায়োটিক+দুগ্ধজাত খাবার : সিপ্রো ও লিভাকুইনের মতো কুইনোলোন পরিবারের অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে ক্যালসিয়াম ও আয়রন যুক্ত হয়ে পড়ে, তাই এসব ওষুধ সেবনের সময় দুগ্ধজাত খাবার ও আয়রন সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট এড়িয়ে চলুন। তবে আয়রন আছে এমন খাবার খেতে পারেন, কারণ খাবারে সমস্যা সৃষ্টি করার মতো যথেষ্ট আয়রন থাকে না, বলেন টেক্সাসের হাউসটনে অবস্থিত হ্যারিস হেলথ সিস্টেমের ফার্মেসি সুপারভাইজার এবং আমেরিকান ফার্মেসি অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র জেফ ম্যাকক্লাস্কি। দুগ্ধজাত খাবার ও আয়রন সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট ওষুধ শোষণে বাধা দিয়ে অ্যান্টিবায়োটিককে অকার্যকর করে তোলে, যার ফলে ইনফেকশন নিরাময়ে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না।

* রক্তচাপের ওষুধ+যষ্টিমধু : লিকোরাইস বা যষ্টিমধুতে গ্লাইসিরাইজিয়ান থাকে, যা রক্তচাপ বৃদ্ধি করে, বলেন নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ক্লিনিক্যাল অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডেনিস গুডম্যান। তিনি আরো বলেন, ‘রক্তচাপ কমানোর ওষুধের সঙ্গে যষ্টিমধু ব্যবহারের মানে হলো এই ওষুধের কার্যকারিতা কমিয়ে ফেলা এবং রক্তচাপকে বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছে দেয়া।’ ডা. ওয়েনট্রাউব বলেন, ‘এছাড়া যেসব লোক রক্তচাপের ওষুধ এসিই ইনহিবিটর ব্যবহার করেন, তারা লবণ ভোজনের পরিমাণ কমাতে সল্ট সাবস্টিটিউটের কথা বিবেচনা করতে পারেন, কিন্তু কিছু সল্ট সাবস্টিটিউটে উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে- তাই এসব সল্ট সাবস্টিটিউটের উচ্চ মাত্রার পটাশিয়ামের সঙ্গে এসিই ইনহিবিটরের পটাশিয়াম বৃদ্ধিকারক প্রতিক্রিয়া যুক্ত হয়ে পটাশিয়ামের পরিমাণ বিপজ্জনক মাত্রায় চলে যেতে পারে, এর ফলে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট অথবা হঠাৎ করে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে।’ ডালিমের দানাও এসিই ইনহিবিটরের প্রতিক্রিয়া বৃদ্ধি করতে পারে, যার ফলে অতি নিম্ন রক্তচাপে আপনার মাথা ঘোরাতে পারে অথবা চেতনা হারাতে পারে।

* স্ট্যাটিন+মোসাম্বির রস : মোসাম্বির রস সেই এনজাইম সিস্টেমকে বাধা দেয় যা স্ট্যাটিন বা কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ বিপাক করতে ভূমিকা রাখে, যার ফলে এসব ওষুধের কার্যকারিতা কমে যাবে। ডা. ম্যাকক্লাস্কি বলেন, ‘কেবলমাত্র ওষুধ সেবনের সময় নয়, আপনি যতদিন ওষুধ সেবন করবেন ততদিন পর্যন্ত মোসাম্বির রস এড়িয়ে চলা উচিত।’

* কিছু কেমোথেরাপি+কমলার রস : কেমোথেরাপি ড্রাগ ইটোপোসাইডের সঠিক ডোজ ছাড়া এ ওষুধটি ক্যানসার কোষের গ্রোথকে বাধা দিতে পারে না, বলেন ডা. ম্যাকক্লাস্কি। কমলার রস অথবা ক্রেনবেরির রস ও ইটোপোসাইড একই সময়ে গ্রহণ করা হলে এ ওষুধটি ভালোভাবে শোষিত হবে না। তাই ওষুধটি সেবনকালে ফলের রস নয়, এক গ্লাস পানি পান করুন। যদি এসব ফলের রস পান করতে চান, তাহলে ওষুধ সেবনের পর অন্তত আধ ঘন্টা অপেক্ষা করুন। তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট