চট্টগ্রাম বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪

মশা মারার কয়েল ক্রিম ওষুধে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি

মরিয়ম বেগম

২৯ আগস্ট, ২০১৯ | ১:০৯ পূর্বাহ্ণ

মশার ওষুধের ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়ায় হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, ক্যানসার, ফুসফুস, কিডনির রোগসহ নানা রোগের বিপদ বাড়ছে। মশার ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ও পণ্যের হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেগুলোর মান ও প্রয়োগ নিয়েও বাড়ছে সংশয়।

মশা থেকে বাঁচতে আমরা কত কিছু করছি। কিন্তু মশা যেন কমছেই না। সম্প্রতি ডেঙ্গুজ্বর দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। স্বাভাবিকভাবে ডেঙ্গু আতঙ্কে ভুগছেন অনেকে। মশারি টানিয়েও যেন স্বস্তির ঘুম আসছে না। মশার অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে বাধ্য হয়ে মশা নিধনের নানান ওষুধ কিনছে মানুষ। অলিগলির দোকানে পাওয়া যাচ্ছে কয়েল, ক্রিম, অ্যারোসল স্প্রেসহ মশা মারার ইলেক্ট্রনিক পণ্য। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশন কিংবা পৌরসভার উদ্যোগে ফগার মেশিনের মাধ্যমে বড় পরিসরে ঘরের বাইরে স্প্রে করা হচ্ছে। আছে কীটনাশক মিশ্রিত মশারিও। এত কিছুর পরও মশাকে কাবু করা যাচ্ছে না কিছুতেই। উল্টো মশা নিধনের বাজারি সরঞ্জামের প্রয়োগ-অপ্রয়োগে ঝুঁকির মুখে পড়ছে জনস্বাস্থ্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, মশার ওষুধের ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়ায় হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, ক্যানসার, ফুসফুস, কিডনির রোগসহ নানা রোগের বিপদ বাড়ছে। মশার ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ও পণ্যের হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেগুলোর মান ও প্রয়োগ নিয়েও বাড়ছে সংশয়। মালয়েশিয়ার চেস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশনের পরিচালক সন্দীপ সালভি বলেছেন, ‘অনেক মানুষ জানেনই না, একটি মশার কয়েল একশ সিগারেটের সমান ক্ষতি করতে পারে তার ফুসফুসে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মানব শরীরে বায়ু দূষণের প্রভাব সম্পর্কে গণসচেতনতার পর্যাপ্ত অভাব রয়েছে। ঘরের ভেতরের বায়ু দূষণও স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।’

মশার কয়েল ব্যবহারের ফলে ক্যানসার, শ্বাসনালিতে প্রদাহসহ বিকলাঙ্গতার মতো ভয়াবহ রোগ, এমনকি গর্ভের শিশুর ক্ষতি হতে পারে। লিভার-কিডনি বিকল হওয়া, ত্বকে চুলকানি, অ্যালার্জিসহ নানা চর্মরোগও হতে পারে। কয়েল তৈরিতে যে কাঠের গুঁড়ো ও নারকেলের মালার গুঁড়ো ব্যবহার করা হয়, তার ধোঁয়া এতোই সূক্ষ্ম যে সহজেই আমাদের শ্বাসনালী ও ফুসফুসের বায়ুথলির মধ্যে পৌঁছে সেখানে জমা হতে পারে। আর খুব সূক্ষ্ম হওয়ার জন্য কণাগুলো বাতাসে কয়েকদিন ভাসমান অবস্থায় থাকতে পারে। অর্থাৎ মশার কয়েল নেভার বহুক্ষণ পরেও ঘরে অবস্থানকারী মানুষের শ্বাসনালীতে কয়েলের ধোঁয়ার কণা ঢুকতে পারে। ফলে ফুসফুসের বায়ুথলির কণায় রক্ত জমে যাওয়া থেকে নানা ক্ষতি হতে পারে। তাছাড়া অ্যালেট্রিন মস্তিষ্ক ও রক্তের ভেদ্যতা বাড়িয়ে দেয়।

কয়েলের ধোঁয়া কমবয়সীদের স্বাস্থ্যের পক্ষে হানিকর। বিশেষত শিশুদের জন্য আরও বেশি বিপজ্জনক। (আগামী সংখ্যায় সমাপ্য)
[সূত্র : ম্যানস হেলথ]

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট