চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

আপনার শিশু কি অতি দুরন্ত

অনলাইন ডেস্ক

৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ৯:২১ অপরাহ্ণ

ছেলেকে নিয়ে মা-বাবার নাজেহাল অবস্থা। স্কুলে তার বিরুদ্ধে শত নালিশ, সে অমনোযোগী, কোনো কাজ ঠিক মতো করে না, অকারণে ঝামেলা পাকায়। সে জন্য কয়েক দিন পর পর মা-বাবাকে স্কুল থেকে তলব করে। ছেলেকে নিয়ে কারো বাড়িতে বেড়াতে যাবে, তারও জো নেই। এই বুঝি এটা ভাঙল, তো ওটা ফেলল!

হাইপার অ্যাকটিভ চাইল্ডের বিশেষত্ব: ডাক্তারি পরিভাষায় এই আচরণগত সমস্যাটির নাম ‘এডিএইচডি’ অর্থাৎ ‘অ্যাটেনশান ডিফিসিট হাইপার অ্যাকটিভ ডিস-অর্ডার’। এইটির বিশেষত্ব হচ্ছে অমনোযোগ, বেহিসেবি দস্যিপনা ও অস্থিরতা।

 

কারণ: সমস্যাটির জন্য জেনেটিক ধাতকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে দায়ী করা হয়। কখনো বা বিভিন্ন ‘নিউরো কেমিক্যাল ফ্যাক্টরকে’ সংকট সূত্র বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। ‘এডিএইচডি’র আধিক্য মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের প্রায় চার থেকে ছয়গুণের মতো বেশি দেখা যায়। প্রায় অর্ধেকের বেশি ক্ষেত্রে শিশুর বয়স চার বছর হওয়ার আগেই সমস্যাটি প্রকাশ পেয়ে থাকে।

চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা:
এক. শিশুর জন্য একটি দৈনিক রুটিন তৈরি করে দিতে হবে, যা সে স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালন করবে এবং যখনি সে রুটিন মেনে চলছে, তখনি তাকে উৎসাহ দিতে হবে। পুরস্কৃত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। রুটিন তৈরির সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন তা ভালোভাবে বোঝা যায় ও নির্দেশাবলি স্বল্প সংখ্যার হয়।

 

রুটিন পালন করাতে গিয়ে সীমাহীন তাগাদা দেওয়া কিংবা তাকে অতিষ্ঠ করে তোলা, ক্লান্ত করে তোলা মোটেও সমীচীন নয়। খেলার পরে, কাজের মধ্যে বিশ্রামের বন্দোবস্ত থাকা চাই। বিশেষত ঘুমানোর আগের সময়টি তার যেন নিরুপদ্রবে কাটে, সে চেষ্টা থাকা চাই। টেলিভিশনে মারদাঙ্গা দৃশ্য কিংবা উত্তেজনাপূর্ণ খেলা ইত্যাদি দেখা থেকে বিরত রাখতে হবে।

দুই. সাংঘাতিক ধরনের ডানপিটে শিশুকে নিয়ে গাড়ি করে দূরের যাত্রায় যাওয়ার সময় সতর্ক থাকতে হবে। ঘরের দামি ভঙ্গুর ও বিপজ্জনক জিনিসপত্র শিশুর নাগালের বাইরে রাখতে হবে।

 

তিন. ব্যবস্থাপনায় শিশু চিকিৎসক ও স্কুল টিচারদের মধ্যে নিবিড় যোগাযোগ থাকা প্রয়োজন। অতি মাত্রার সমস্যাজর্জরিত শিশুটির জন্য প্রয়োজনে বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। এসব শিশু চিকিৎসায় বিহেভিয়ার থেরাপিই মুখ্য। ওষুধের চিকিৎসা প্রয়োগের বিষয়টি শিশুর মা-বাবা, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে পরামর্শ করা হয়।

পরামর্শ দিয়েছেন: প্রফেসর ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশু স্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট