চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

যে উপায়ে ডিমেনশিয়া প্রতিরোধ করবেন

অনলাইন ডেস্ক

১৮ জানুয়ারি, ২০২৩ | ১০:৫৩ অপরাহ্ণ

বয়স্ক হলে শরীরের কলকবজা নড়বড়ে হতে থাকে। তরুণ বয়সের মতো মন আর মগজের চৌকস ভাব তেমন থাকে না। স্মৃতিশক্তি খর্ব হতে থাকাকে চিকিৎসাবিদ্যায় বলে ডিমেনশিয়া। আর এর প্রধান রূপ হলো আলঝেইমারস ডিজিজ।

ভাবনা-চিন্তার অক্ষমতা, স্মৃতিশক্তি লোপ, সিদ্ধান্ত নেওয়ার অক্ষমতা—এসব মিলে হয় ডিমেনশিয়া। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, ২০০০ সালের পর থেকে ডিমেনশিয়ার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বর্তমান বিশ্বে যেসব কারণে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, সে তালিকায় ডিমেনশিয়ার অবস্থান ৫ নম্বরে। ধনী দেশে এর প্রকোপ বেশি। দেশে এর সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও বেড়ে চলছে ডিমেনশিয়া রোগী। আজ পর্যন্ত এর নিরাময় বের হয়নি। তবে একে ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করা যেতেই পারে।

 

আছে সাত উপায়:

১) নজর রাখুন ওজনে: ডিমেনশিয়ার বড় ঝুঁকি হলো ডায়েবেটিস আর মধ্যবয়সের স্থূলতা। পরবর্তী জীবনে এ দুটি সমস্যা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ করতে পারে। রক্তচাপের নজরদারি করা এবং ডায়েবেটিস ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখলে ডিমেনশিয়ার আশঙ্কা কমে বটে।

২) ধূমপান নয়: প্রচুর ধূমপান করলে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ে মগজের ওপর। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, ধূমপান বয়স্কদের বুদ্ধি কমে যাওয়ার বিষয়টিকে ত্বরান্তিত করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মধ্যবয়সী মানুষ যাঁরা দিনে দুই প্যাকেট সিগারেট পান করেছেন, তাঁদের পরবর্তী জীবনে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।

 

৩) থাকতে হবে সচল ও সক্রিয়: বয়স্কদের জন্য সক্রিয় থাকা খুব জরুরি। বয়স্কের মধ্যে যাঁরা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, সচল থাকেন, তাঁদের বৌদ্ধিক উন্নতি বেশ লক্ষণীয়।

৪) বুদ্ধিবৃত্তিক প্রশিক্ষণ: যাঁরা সুশিক্ষিত, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন, তাঁদের ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কম। এ বিষয়ে অনেক তথ্য-প্রমাণ আছে। বয়স হয়ে গেলে নতুন নতুন জিনিস করা বা শেখার চেষ্টা করা—এসব ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি অনেক কমায়। প্রতিদিন জ্ঞান-বিজ্ঞানের আলোচনায় অংশ নেওয়া, শব্দ জব্দ খেলা—এসব স্নায়ুকে সুরক্ষা দেয়।

৫) সামাজিকতার চর্চা প্রয়োজন: বয়স হলে সমাজের কাজকর্মে নিয়োজিত থাকা উচিত; যেমন—স্বেচ্ছাসেবী কাজ, ক্লাবে অংশগ্রহণ এসব কাজ ডিমেনশিয়ার বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়। যাঁদের বৃহৎ সামাজিক বলয় বজায় রাখার ক্ষমতা থাকে, বুড়ো বয়সে তাঁদের ডিমেনশিয়া হওয়ার ঝুঁকিও কম থাকে।

৬) বেছে নিন মেডিটারেনিয়ান ডায়েট: কিছু গবেষণায় প্রাণিজ মাংসের পরিমাণ কম গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে তৈলাক্ত মাছ, হোল গ্রেইন, ফল, সবজি, জলপাই তেল, বাদাম ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমায়।

 

৭) ঘুম যাতে স্বাভাবিক হয়: ঘুমের সমস্যা যেমন—ক্রনিক অনিদ্রার কারণে পরবর্তী সময়ে হতে পারে ডিমেনশিয়া। এমন হলে ডাক্তারের পরামর্শ প্রয়োজন।

পরামর্শ দিয়েছেন: অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, সাবেক অধ্যক্ষ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ।

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট