ঘুম ভালো না হলে মন ভালো থাকে না। শরীরেও বাসা বাঁধে নানা ধরনের রোগবালাই। সুস্থ থাকতে চাইলে টানা সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানোর কোনো বিকল্প নেই।
ঘুমাতে দেরি হওয়া বা ঘুম না আসা আমাদের দৈনন্দিন কাজের ওপর প্রভাব ফেলে। সহজে ঘুম না এলে কয়েকটি নিয়ম অনুসরণ করতে পারেন।
ডিভাইসের ব্যবহার বন্ধ করুন: স্মার্টফোন, ট্যাবলেট ও স্মার্ট ওয়াচ থেকে বিচ্ছুরিত নীল আলোর আভা ঘুমের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ঘুমের অন্তত এক ঘণ্টা আগে নীল আলোর আভা নির্গত হওয়ার সব ধরনের উৎস বন্ধ করতে হবে।
ঘড়ি দেখবেন না: ঘুম আসতে দেরি হলে অনেকেই বারবার ঘড়ির দিকে তাকান। এতে সকালবেলা সঠিক সময়ে ওঠা নিয়ে চিন্তায় পড়তে হয়। তাই বারবার ঘড়ি দেখা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।
পিঠ ব্যথার জন্য লেগ পিলো: সতেজ ও গভীর ঘুম নষ্ট করার জন্য সামান্য ব্যথাই যথেষ্ট। তাই দুটি পায়ের মাঝখানে রাখুন লেগ পিলো। তাহলে পেছনের কোমরের ওপর চাপ কমবে এবং হিপ অ্যালাইনমেন্ট ঠিক থাকবে। চিত হয়ে শুলে হাঁটুর নিচে বালিশ রাখুন, স্বস্তি পাবেন।
টিভি বা নেট ব্রাউজ নয়: বিছানায় শুতে যাবেন শুধু ঘুমানো বা আরাম করার সময়। শুয়ে শুয়ে ইন্টারনেট ব্রাউজ করা বা টিভি দেখার জন্য বিছানা নয়।
ঘুমানোর আগে ব্যায়াম নয়: ঘুমানোর অন্তত তিন থেকে চার ঘণ্টা আগে কঠোর ব্যায়াম করতে পারেন। এর পরে নয়। তবে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম যেমন— প্রাণায়াম, ইয়োগা, টাই চি করা যেতে পারে।
রাতে খান সঠিক খাবার: ঘুমের আগে ভূরিভোজ করা ঠিক না। তাতে পরিপাকতন্ত্রের ওপর চাপ পড়ে এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। ভালো ঘুমের জন্য ঘুমের অন্তত এক ঘণ্টা আগে খাওয়া শেষ করুন।
আলোর উজ্জ্বলতা কমান: ঘুমাতে যাওয়ার দুই থেকে তিন ঘণ্টা আগে ঘরের আলো কমিয়ে দিন। আলো মৃদু করলে ঘুমের সিগন্যাল যায় মগজে আর উৎসারিত হয় মেলাটনিন। এই হরমোন চোখে ঘুম আনে।
দিনের গোলমাল রাতে নয়: ঘুমাতে যাওয়ার দুই থেকে তিন ঘণ্টা আগে জটিল কোনো কাজ, অতি গুরুত্বপূর্ণ আলাপ বা চিন্তাভাবনা করবেন না। কোনো কিছু নিয়ে চিন্তিত থাকলে সেটা পরের দিনের জন্য রেখে দিন।
যদি অনিদ্রার সমস্যায় এক মাস ধরে ভোগেন, তবে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। কোনো অসুখ যেমন—এসিড রিফ্লাক্স, অম্ল ঢেকুর, আরর্থ্রাইটিস, অ্যাজমা, বিষণ্ণতা বা কোনো ওষুধের কারণে নিদ্রায় ব্যাঘাত ঘটছে কি না, তা ডাক্তারকে জানাবেন।
পরামর্শ দিয়েছেন: অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ।
পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ