চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

মস্তিষ্কের প্রদাহজনিত রোগ মেনিনজাইটিস

অনলাইন ডেস্ক

১৮ নভেম্বর, ২০২২ | ৯:৩৬ অপরাহ্ণ

আমাদের মস্তিষ্কের আবরণকে মেনিনজিস বলা হয়। মেনিনজিসের প্রদাহকে মেনিনজাইটিস বলে। সাধারণত সংক্রমণজনিত কারণেই এটি বেশি হয়। এই সংক্রমণ ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও যক্ষ্মার জীবাণু দিয়ে হতে পারে। বয়স ও পরিবেশ ভেদে সংক্রমণকারী জীবাণুর বিভিন্নতা দেখা যায়। ভাইরাসের আক্রমণেই মেনিনজাইটিস হওয়ার হার অধিক।

 

কারণ: মেনিনজাইটিস বিভিন্নভাবে হতে পারে। নাক, কান, গলা অর্থাৎ মাথার যেকোনো জায়গা, যা মস্তিষ্কের কাছাকাছি সেসব স্থানে সংক্রমণ হলে তা ভেতরে ছড়িয়ে পড়ে মেনিনজাইটিস হতে পারে। দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত লেগে মস্তিষ্ক পর্যন্ত জীবাণুর প্রবাহ বাধাহীন হয়ে মেনিনজাইটিস হতে পারে। আবার শরীরের অন্য স্থানের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে জটিলতা হিসেবে মেনিনজাইটিস হতে পারে।

লক্ষণ: মেনিনজাইটিসের প্রধান লক্ষণ মাথা ব্যথা। কিন্তু এটি একমাত্র লক্ষণ নয়, এর সঙ্গে তীব্র জ্বর, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, শরীরে লাল দাগ (র‌্যাশ) আসা, অস্থিরতা বোধ করা ইত্যাদি লক্ষণ থাকে। তবে সব ক্ষেত্রে একই লক্ষণ একইভাবে প্রকাশ পাবে না।

 

মেনিনজাইটিস একটি গুরুতর অসুস্থতা। মস্তিষ্ক, তার যে আবরণ দ্বারা নিরাপত্তা পায়, সেটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। তবে ভাইরাসজনিত কারণে হলে তীব্র মাথা ব্যথা, জ্বর—এসব লক্ষণ খুব কষ্টকর হলেও একসময় নিজে থেকেই ভালো হয়ে যায়। অপরপক্ষে ব্যাকটেরিয়া ও যক্ষ্মার জীবাণুর সংক্রমণে যে মেনিনজাইটিস হয়, সেটি গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে, এমনকি প্রাণঘাতীও হতে পারে।

যেসব জটিলতার কারণে মেনিনজাইটিস খুব বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে, তার তালিকা দীর্ঘ। ভাইরাসজনিত মেনিনজাইটিস সচরাচর গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি না করলেও যদি মস্তিষ্কের প্রদাহ হয়ে যায়, তবে তা প্রাণঘাতী হতে পারে। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে মস্তিষ্কের চারপাশে যে তরল (সিএসএফ) থাকে তার স্বাভাবিক প্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

 

মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে এবং মস্তিষ্ক ফুলে উঠতে পারে। এসব ঘটনা নির্দিষ্ট লক্ষণ প্রকাশ করে। রোগীর চেতনা পরিবর্তন হয়, বিভিন্ন স্নায়ুবিক দুর্বলতা দেখা দেয়, রোগী অজ্ঞান হয়ে কোমায় চলে যেতে পারে। যক্ষ্মার জীবাণুর ফলে যে মেনিনজাইটিস হয়, তা সচরাচর দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার কারণ হয়। চিকিৎসা না হলে এটি কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রাণসংহারী হয়ে ওঠে।

চিকিৎসা: মেনিনজাইটিস প্রতিরোধের জন্য যেকোনো সংক্রমণ, বিশেষ করে নাক, কান, গলা ও মুখের সংক্রমণ প্রতিরোধ করা জরুরি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, যা কোভিড সংক্রমণ প্রতিরোধ করে, তা এ ক্ষেত্রেও উপকারী হবে। মাথায় কোনো আঘাত প্রাপ্ত হলে উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করে সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে হবে। মাথা ব্যথা হলেই তা মেনিনজাইটিস নয়। সুতরাং শঙ্কিত না হয়ে রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তথ্যসূত্র: কালের কণ্ঠ

পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. শাহেদ সাব্বির আহমেদ, আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার, কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রংপুর

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট