চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

শব্দদূষণ: একটি অদৃশ্য আতঙ্ক, করছে শরীরের ক্ষতি

১৮ অক্টোবর, ২০২২ | ৭:৩১ অপরাহ্ণ

শব্দদূষণ একটি অদৃশ্য আতঙ্কের নাম। এটা এমন এক ধরনের শব্দ, যা মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর স্বাস্থ্য ও সুস্থতা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে সক্ষম। কেউ কেউ একে শব্দ সন্ত্রাসও বলে থাকে। 

শব্দের মাত্রা: ডেসিবেলকে শব্দ পরিমাপের একক হিসেবে ধরা হয়।

পরিবেশে বিভিন্ন মাত্রার শব্দ পাওয়া যায়। ২০-৩০ ডেসিবেল থেকে শুরু করে হেডফোনে সর্বোচ্চ মাত্রা (৯৪-১১০ ডেসিবেল), রক গানের কনসার্ট (১১০-১২০ ডেসিবেল), প্রকট বজ্রপাত (১২০ ডেসিবেল) ও সাইরেন (১২০-১৪০ ডেসিবেল) পর্যন্ত। ৮৫ ডেসিবেলের বেশি শব্দ কানের ক্ষতিসাধন করে।

শব্দদূষণে ক্ষতি

কানে শোনায় সমস্যা: উচ্চ শব্দ হয় এমন পরিবেশে দীর্ঘ সময় অবস্থান করলে বা দীর্ঘদিন কাজ করলে শ্রবণশক্তি আস্তে আস্তে কমতে থাকে, যা এক পর্যায়ে স্থায়ী বধিরতায় পরিবর্তিত হতে পারে। শুরুতে হয়তো এটা বুঝতে পারবেন না। যখন প্রয়োজনীয় কথাবার্তা বুঝতে পারবেন না তখন কানে কম শোনার বিষয়টি ধরা পড়বে। 

কানে কম শোনা ছাড়াও বেশ কিছু রোগ দেখা দিতে পারে। যেমন:

টিনিটাস: কোনো বাহ্যিক শব্দ ছাড়া কানের ভেতর বেজে যাওয়াকে টিনিটাস বলে। শব্দদূষণের কারণে এটা দেখা দিতে পারে। এই রোগে রোগী কানের ভেতর শোঁ শোঁ, ভোঁ ভোঁ, শিস দেওয়ার শব্দ, কেটলিতে পানি বাষ্প হওয়ার শব্দ, হিসহিস শব্দ, রেল গাড়ির ইঞ্জিনের আওয়াজ, টিভির ঝিরিঝিরি শব্দ ইত্যাদি অনুভূতি হতে পারে।

কানে ব্যথা: এটা সাধারণত নিউরোপ্যাথিক অথবা স্নায়ুর প্রদাহের কারণে হয়ে থাকে। অতিরিক্ত শব্দে আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের কিছু পরিবর্তন দেখা যায়, যার কারণে কানে ব্যথা অনুভব হতে পারে।

হাইপারাকিউসিস বা শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা: এতে আক্রান্ত রোগীদের একটা বিড়ালের মিউ শব্দকে মনে হয় সিংহের গর্জন, কাগজের পৃষ্ঠা ওল্টানোর শব্দকে মনে হয় বজ্রপাত, কমোডের ফ্লাশের শব্দ মনে হয় নাইজেরিয়ার জলপ্রপাত।

মাথা ঘোরা: অন্তঃকর্ণের সঙ্গে যুক্ত ভেস্টিবুলার নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হলে এ রকম হতে পারে।

স্বরযন্ত্রের অসুখ: শব্দ বেশি হয় এমন শিল্পকারখানায় যাঁরা দীর্ঘ সময় কাজ বা অবস্থান করেন তাঁদের সাধারণত উচ্চ শব্দে কথা বলতে হয়। এর কারণে তাঁদের মধ্যে স্বরযন্ত্রের বিভিন্ন রোগ যেমন স্বরভঙ্গ, ভোকাল কর্ড নডিউল, ল্যারিনজাইটিস ইত্যাদি হতে দেখা যায়।

অন্যান্য: এ ছাড়া অতিরিক্ত শব্দের কারণে উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের অসুখ, বুক ধড়ফড় করা, ঘুমের সমস্যা, মাথা ব্যথা ও মানসিক চাপ, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ইত্যাদি হতে দেখা যায়। তথ্যসূত্র: কালের কণ্ঠ

পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. আলমগীর মো. সোয়েব, কনসালট্যান্ট (ইএনটি), চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট