চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

চর্মরোগে পরীক্ষা—নিরীক্ষা

১২ অক্টোবর, ২০২২ | ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ

প্রশ্ন উঠতে পারে রোগ নির্ণয়ের জন্যেই কি কেবল পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন? তা কিন্তু নয়। চোখে দেখে এবং ভালো করে ইতিহাস জেনে রোগটি নির্ণয় করা গেলেও অন্যান্য কিছু রোগের সম্পৃক্ততা নির্ধারণে এবং ঔষধ শুরু বা চলমান রাখার জন্য কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় রোগীরা চর্মরোগ ছাড়াও অন্যান্য শারীরিক অসুবিধার কথা বলে। সেগুলোর সম্ভাব্যতা ও দিক নির্দেশনা প্রদানের জন্য কিছু পরীক্ষা—নিরীক্ষা দরকার হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে— রোগীর অর্থনৈতিক অবস্থা বিচারে এবং দেশে সব ধরণের পরীক্ষা না থাকার কারণে, অধিকাংশ চিকিৎসক নেহায়েত প্রয়োজন ছাড়া সব পরীক্ষা করাতে দেন না। উন্নত দেশে নানান পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হয়েই কেবল ব্যবস্থাপত্র প্রদান করা হয়। কিন্তু এদেশে জরুরি পরীক্ষাগুলো করাতে দিলেও অনেক রোগীরা অর্থনৈতিক বা মানসিকতার জন্য অপারগতা প্রকাশ করে। চর্মরোগটি সঠিকভাবে নির্ণিত, অন্য কোনো রোগের সম্পৃক্ততা নির্ধারণ কিংবা ঔষধ শুরু বা চলমান রাখা কিন্তু অতীব জরুরি।

সরাসরি চর্মরোগ নির্ণয়ে মাইক্রোবায়োলজি, বায়পসী বা হিস্টোপ্যাথলজী, এলার্জি টেস্ট, উডসলাইট, ডামাস্কোপী, ইত্যাদি বিদ্যমান। তবে অধিকাংশক্ষেত্রে এগুলো ছাড়াই রোগটি নির্ণীত হতে পারে। ছত্রাক, গভীর ছত্রাক, ভাইরাস, মাইকোব্যাক্টেরিয়া, লেইসমেনিয়া সহ নানান জীবাণুর সংক্রমণ নির্ণয়ে ত্বক, নখের কিছু অংশ চেঁছে বা নিঃসৃত রস নিয়ে সরাসরি মাইক্রোস্কপিক পরীক্ষা, কালচার বা গ্রাম—স্টেইন করাহয়। এদের মধ্যে রয়েছে- স্কিনস্ক্র্যাপিং, নেইলক্লিপিং, ইমিনোফ্লুরেসেন্স, পিসিআর, ইত্যাদি। বায়পসি হচ্ছে আক্রান্ত ত্বকের একটু গভীর করে কাটা অংশের হিস্টোপ্যাথলজী। এটি বিশেষ করে ত্বকের ক্যান্সার নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়। আবার চর্মরোগ নিশ্চিত হতেও বায়পসি করা যেতে পারে। এলার্জি নির্ধারণে করা হয়— প্রিক এবং প্যাচ টেস্ট। তবে প্রিক টেস্ট টাইপ ১ হাইপারসেনসিটিভিটিতে ব্যবহৃত হলেও অনান্য ক্ষেত্রে খুব একটা ফলদায়ক নয়। ডিলেড হাইপারসেনসিটিভিটিতে অর্থাৎ এলার্জিক কন্টাক্ট ডারমাটাইটিস কিংবা বারবার এলার্জি হতে থাকলে প্যাচ টেস্ট করা হয়। পিগমেন্ট জনিত এবং পিটাইরিয়াসিস ভারসিকলার নামক চর্মরোগ নির্ধারণে দরকার হতে পারে উডসল্যাম্প। অপেক্ষাকৃত নুতন পরীক্ষাটি হচ্ছে ডারমাস্কোপী। এটা মূলত আনুবীক্ষণিক ক্যামেরা যেখানে আক্রান্ত ত্বকের মাইক্রোস্কপিক ছবি দেখা যায়। চামড়ার তিল, ত্বকের ক্যন্সার সহ নানাবিধ চর্মরোগ এটির সাহায্যে নির্ণয় করা যায়।

নানা রকমের রক্ত ও রেডিলোজিক্যাল পরীক্ষা সমূহ রোগ নির্ণয়ে খুব একটা ব্যবহৃত না হলেও অন্যান্য রোগের সম্পৃক্ততা নির্ধারণে ও ঔষধ শুরু এবং চলমান রাখার জন্য বেশি পরামর্শকৃত। রক্ত পরীক্ষার মধ্যে রয়েছে- সুগার, থাইরয়েড সহ নানা হরমোন, পূর্ণ ব্লাড কাউন্ট, কিডনী, লিভার, প্রোটিন, এইডস, হেপাটাইটিস, এএনএ, এএনসিএ, ও ফরফাইরিন, ইত্যাদি। রেডিলোজিক্যাল পরীক্ষার মধ্যে এক্স—রে, আল্ট্রাসনোগ্রাম, সিটি, এমআরআই করা হয়ে থাকে। প্রস্রাব পরীক্ষাও কিন্তু একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

 

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট