চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সু স্থ থা কু ন

যা দেখলে বুঝবেন ডেঙ্গু জ্বর

২৬ জুলাই, ২০১৯ | ১:১৫ পূর্বাহ্ণ

এই বর্ষার সময়ে ঘরে ঘরে ডেঙ্গু জ্বর হচ্ছে। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ অনেক বেশি। যার ফলে সবার মনেই ভীতি কাজ করছে। সঠিক চিকিৎসার অভাবে ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু একটু সচেতন আর সাবধানতা মেনে চললে এ জ্বর থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।
লক্ষণ বা উপসর্গ তাপমাত্রা : ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে জ্বরের তাপমাত্রা হয় অনেক বেশি। এই জ্বরে শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠতে পারে।
র‌্যাশ : ডেঙ্গু জ্বরে রোগীর সারা গায়ে ঘামাচির মতো লাল লাল র‌্যাশ উঠতে পারে। সাধারণত বুকের দিকে বেশি দেখা যায়। এই র‌্যাশে চাপ দিলে সেই জায়গাটা সাদা হয়ে যাবে আবার কিছুক্ষণ পর ফেরত চলে আসবে।
মাড়িতে রক্তক্ষরণ : ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়তে পারে।
মলের রঙ পরিবর্তন : ডেঙ্গু জ্বর হলে মলের রঙ পরিবর্তন হতে পারে অর্থাৎ পায়খানা কালো হতে পারে।
অনুচক্রিকার সংখ্যা : জ্বরের তীব্র পর্যায়ে ধমনী ছিদ্র হয়ে যেতে পারে এবং রক্তে অনুচক্রিকার সংখ্যা কমে যেতে পারে। ডেঙ্গুর এ তীব্র মাত্রাকে ডাক্তারি ভাষায় ডেঙ্গু হেমোরেজিক বা ডেঙ্গুশক সিনড্রোম বলা হয়। যার উপসর্গ হলো শ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধা হওয়া কিংবা শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বেড়ে যাওয়া, অবিরাম অস্বস্তি এবং অবসাদ। অনেক ক্ষেত্রে কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা থাকে। এছাড়াও বিরামহীন মাথা ব্যথা, বমি ভাব ও বমি হওয়া, হাড় ও হাড়ের জোড়ায় ব্যথা, পেশিতে ব্যথা, গ্রন্থি ফুলে যাওয়া, চোখের পেছনে ব্যথা হওয়া ইত্যাদি হতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বর হলে চিকিৎসা কেমন হবে : ভাইরাল জ্বরের মতো ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসাও প্রায় একই রকম। ভাইরাল জ্বর হলে যেমন প্যারাসিটামল খেতে হয়। তেমনি ডেঙ্গু জ্বর হলেও প্যারাসিটামল খেতে হয়। তবে ডেঙ্গু জ্বর হলে তরল খাবার যেমন লেবুর শরবত, স্যালাইন, টেষ্টি স্যালাইন পরিমাণে বেশি খেতে হবে। এই জ্বরে পানিশূণ্যতা বেশি দেখা দেয়। তাই বেশি করে পানি পান করতে হবে।
কখন হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে : ডেঙ্গু জ্বর হলেই যে হাসপাতালে ভর্তি হতেই হবে তেমন নয়। প্লাটিলেট কাউন্ট যখন ৩০ হাজারের নিচে নামে তখন আপনি হাসপাতালে ভর্তি হতে পারেন। এছাড়াও যদি অনেক বমি শুরু হয় আর দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত যায়, কালো পায়খানা হয় এবং রোগী অনেক দুর্বল হয়ে যায়, তখন প্রেশার কমে গেলে দেরি না করে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।
পেইন কিলার : ডেঙ্গু জ্বরে কোনো প্রকার পেইন কিলার দেয়া যাবে না। রোগীকে ভুলেও অ্যাসপিরিন দেয়া যাবে না।
ভুল ধারণা : ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে আরেকটি কথা মনে রাখতে হবে, অনেকেই ভাবে ডেঙ্গু একবার হলে মনে হয় আর হয় না। এটা সম্পূর্ণ ভুল চিন্তা।
ডেঙ্গু একবার হলে যে আরেকবার হবে না, এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। বরং দ্বিতীয়বার হলে এর মাত্রা আরো বেশি হয়। চিকিৎসকদের মতে, যে ধরনের এডিস মশার কারণে একবার ডেঙ্গু হয়, সেই একই ধরনের ভাইরাস থেকে একই ব্যক্তি দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হবে না। তবে এডিস মশার বাকি তিন ধরনের ভাইরাস থেকেও ব্যক্তি আবারও আক্রান্ত হতে পারে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট