চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

সু স্থ থা কু ন

কী কারণে হতে পারে হঠাৎ বমি ?

২৫ জুলাই, ২০১৯ | ১২:৫২ পূর্বাহ্ণ

হঠাৎ করেই বমি ভাব বা বমি হওয়া অনেকের কাছেই খুব সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু এই অস্বস্তির সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা খুবই খারাপ। কারণ স্বাভাবিক ভাবে হঠাৎ বমির সমস্যাকে আমরা পেটের সমস্যা ভাবলেও তা ভিন্ন রোগের লক্ষণও হতে পারে। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ জানালেন সতর্ক থাকতে কি করতে হবে।
এমন অস্বস্তির কারণ : বমি করার আগে সারা শরীরের মধ্যে খারাপ লাগতে থাকে। মস্তিষ্কে সিটিজেড বা কেমোরিসেপ্টর ট্রিজার জোন নামে একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। এখানে উপস্থিত স্নায়ু দ্বারাই বমি অনুভূতি তৈরি হয়। যখন সিটিজেড অংশে উপস্থিত স্নায়ুগুলো উত্তেজিত হয় তখনই আমরা বমি ভাব অনুভব করি।
বিভিন্ন কারণ : অনেক রকম শারীরিক এবং মানসিক কারণ মস্তিষ্কের সিটিজেডের স্নায়ুকে উত্তেজিত করে বমি ভাবের জন্ম দিতে পারে।
মোশন সিকনেস : এক্ষেত্রে গাড়ি, বাস, ট্রেনে চলন্ত অবস্থায়, পাহাড়ে চড়লে বা দোলনা জাতীয় ঘূর্ণায়মান কিছুতে উঠলে শুধু বমি ভাব হয় তা নয়, অনেক ক্ষেত্রে বমিও হয়।
গর্ভাবস্থায় : এই অবস্থায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এমন লক্ষণ দেখা যায়। প্রথম তিন মাসের মধ্যে ৭০% গর্ভবতী নারীদের এমন হতে পারে।
পেটের সমস্যা : গ্যাসট্রো রিফ্লাস ডিজিজ/ সেপটিক আলসার ডিজিজ/ নন আলসার ডিসপেপসিয়া এই ধরনের পাকস্থলি বা ক্ষুদ্রান্ত্রের অসুখ, প্যানক্রিয়াটিস (অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ), অন্ত্রে কোনো বাধার সৃষ্টি হলে (ইন্টেসটিনাল অবস্ট্রাকশন), হেপাটাইটিস, ইনফ্লামেটরি বাওয়েল ডিজিজের (ক্রনস ডিজিজ বা আলসারেটিভ কোলাইটিস) মতো সমস্যার ক্ষেত্রে বমি ভাব হতে পারে।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া : কিছু কিছু ওষুধ খাওয়ার ফলে বমি ভাব হয়। অ্যান্টিবায়োটিক যেমন এরিথ্রোমাইসিন, টেট্রাসাইক্লিন ওষুধ, ব্যথার ওষুধ, যক্ষ্মা ও ক্যান্সারের কেমোথেরাপি, গর্ভনিরোধক ওষুধ, মানসিক রোগের ওষুধে বমির লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এছাড়াও যে কোনো ব্যক্তিরই যে কোনো ধরনের ওষুধে সাইড এফেক্ট হিসাবে বমি হতে পারে।
মানসিক কারণ : মানসিক অবসাদ, দুশ্চিন্তায়, পরীক্ষার আগে বমি ভাব হয়।
নেশার কারণ : অধিকাংশ ক্ষেত্রে যখন কেউ প্রথমবার নেশা বা খৈনি, জর্দা, ধূমপান, মদ খায় তখন বমি ভাব হতে পারে। যে কোনো নেশার ড্রাগ অতিরিক্ত নিলে বা নিতে নিতে হঠাৎ বন্ধ করে দিলে এমন হতে পারে।
ব্যথা
কিছুক্ষেত্রে আঘাতজনিত কারণ বা মাইগ্রেনের মতো যে কোনো অসহনীয় যন্ত্রণায় বমির প্রবণতা দেখা দেয়।
নিজে নিজে চিকিৎসা নয় : বেশিরভাগ মানুষই বমি হলে নিজে নিজে ওষুধ খেয়ে সমাধানের চেষ্টা করে। জ্বর, সর্দি, কাশির মতোই বমিভাব তেমন ভয়ের কিছু নয় ভেবে অবহেলা করেন অনেকেই। এমন হলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করা জরুরি।
বিশেষ নজর : মাথাব্যথা এবং চোখের সমস্যার সঙ্গে বমিভাব থাকলে তা চোখের সমস্যা থেকেও হতে পারে। বিশেষ করে চোখের ভিতরের অভ্যন্তরীণ চাপ বাড়লে এমন সমস্যা হতে পারে।
সকালের দিকে মাথা যন্ত্রণা এবং বমি হলে সেটা চিন্তার। তাহলে হয়তো সমস্যার উৎস রয়েছে মস্তিষ্কে।
গর্ভাবস্থায় বমি অতিরিক্ত হলে তা হাইপারএমেসিস গ্রাভিডেরাম অসুস্থতা। এক্ষেত্রে গর্ভবতীর শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। এমন হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট