চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

সু স্থ থা কু ন

চোখ পরীক্ষায় যেসব রোগ ধরা পড়ে

২১ জুলাই, ২০১৯ | ১:৩০ পূর্বাহ্ণ

আপনার চোখে সমস্যা নেই মনে হলেও নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করা উচিত। চোখের একটি ব্যাপক পরীক্ষা কেবলমাত্র চোখের সমস্যাই শনাক্ত করে না, এটি অন্যান্য মারাত্মক রোগও সাসপেক্ট করতে পারে। এসব রোগের নাম শুনলে আপনি হয়তো চমকে ওঠতে পারেন, যেমন- আপনাকে চমকে দেয়ার মতো দুটি রোগ হলো ক্যানসার ও ডায়াবেটিস। যেহেতু ক্যানসার ও ডায়াবেটিসের মতো মারাত্মক রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করে চিকিৎসা নিলে বেঁচে থাকার হার বেড়ে যায় অথবা অন্ধত্বের ঝুঁকি কমে যায়, তাই নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করতে চোখের ডাক্তারের কাছে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
* ক্যানসার : একটি চোখ পরীক্ষা আপনার জীবন বাঁচাতে পারে। ব্রেইন টিউমার বা মস্তিষ্কের ক্যানসার, স্তন ক্যানসার ও ফুসফুসের ক্যানসার চোখে ছড়াতে পারে, একারণে চোখ পরীক্ষায় এসব রোগ ধরা পড়তে পারে, বলেন ফ্লোরিডার ফোর্ট লডারডেলে অবস্থিত অপটোমেট্রি আই কেয়ার ইনস্টিটিউটের অন্তর্গত নোভা সাউথইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও অপটোনেট্রিস্ট জোসেফ পিজিমেন্টি। রেটিনায় কয়েক ধরনের রক্তক্ষরণ লিউকেমিয়ার লক্ষণ হতে পারে। চোখের ডাক্তাররা একজন রোগীর ফিল্ড অব ভিশনে পরিবর্তনের ওপর ভিত্তি করে ব্রেইন টিউমার শনাক্ত করতে পারে। ম্যালিগন্যান্ট মেলানোমা চোখের পেছনে আক্রমণ করতে পারে এবং প্রায়ক্ষেত্রে রোগীরা এটা সম্পর্কে জানেন না, যদি না এ ক্যানসার ফিল্ড অব ভিশনের খুব কেন্দ্রে না ছড়ায়, বলেন ডা. পিজিমেন্টি।
* ডায়াবেটিস : টাইপ ২ ডায়াবেটিসের একটি প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে রেটিনায় অল্প পরিমাণে রক্তক্ষরণ- এটি হলো ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথির একটি উপসর্গ। ডা. পিজিমেন্টি বলেন, ‘আমার কাছে যেসব রোগী আসেন তাদের অনেকের চোখে এ সমস্যাটি ধরা পড়ে।’ চিকিৎসা করা না হলে এ সমস্যাটি অন্ধত্বের কারণ হতে পারে, কিন্তু এটি নিয়ন্ত্রণ করলে ঝুঁকি অর্ধেক কমে যায়। ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি প্রথমদিকে শনাক্ত করতে পারলে স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ও ওজন নিয়ন্ত্রণ করে আরো ড্যামেজ প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
* উচ্চ রক্তচাপ : রক্তনালির ড্যামেজ (যেমন- ধমনীর দুর্বলতা ও সংকীর্ণতা) উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম নির্দেশক হতে পারে, বলেন নিউ ইয়র্ক সিটিতে অবস্থিত ওয়েইল কর্নেল মেডিক্যাল কলেজের অপথালমোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জেসিকা সিরালস্কাই। আমেরিকান জার্নাল অব মেডিসিনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বড় গবেষণায় হৃদরোগ ও রেটিনার ছোট রক্তনালির সংকীর্ণতার মধ্যে যোগসূত্র পাওয়া গেছে। হৃদরোগের প্রচলিত রিস্ক ফ্যাক্টর নেই এমন লোকদের মধ্যে এই যোগসূত্র খুব শক্তিশালী।
* মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস : অপটিক নিউরাইটিস বা অপটিক নার্ভের প্রদাহ মাল্টিপল স্ক্লেরোসিসের (এমএস) অন্যতম লক্ষণ হতে পারে- এমএস হলো স্নায়ুতন্ত্রের একটি ক্ষয়মূলক রোগ, বলেন আমেরিকান অপটোমেট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মিশেল মুনসন। ৭৫ শতাংশ এমএস রোগীদের মধ্যে অপটিক নিউরাইটিস হয়ে থাকে এবং এটি হলো ২৫ শতাংশ এমএস রোগীর প্রথম উপসর্গ। অপটিক নিউরাইটিস শনাক্ত হওয়ার মানে এটা নয় যে আপনার অবশ্যই এমএস রয়েছে, কোনো ইনফেকশন অথবা অন্যান্য কারণেও অপটিক নার্ভে প্রদাহ হতে পারে। ডা. মুনসন বলেন, ‘সাধারণত অপটিক নিউরাইটিসের লোকদের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়, কিন্তু আমি এমন লোকের মধ্যেও এ সমস্যাটি শনাক্ত করেছি যাদের কোনো উপসর্গ ছিল না।’
* রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস : প্রায় ২৫ শতাংশ রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস রোগীর চোখের সমস্যা রয়েছে: সর্বাধিক কমন সমস্যা হলে শুষ্ক চোখ। ডা. মুনসন বলেন, ‘অন্য একটি সমস্যা হলো আইরিটিস (আইরিস বা চোখের রঙিন অংশে প্রদাহ)- বছরে দুই বার অথবা ১৮ মাসে তিন বার আইরিটিস হলে আমরা রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস আছে বলে মনে করি।’ রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস হলো একটি প্রদাহজনিত রোগ যা হাত ও পায়ের ছোট অস্থিসন্ধিকে আক্রমণ করে এবং এ রোগের রোগীদের রক্তে উচ্চমাত্রায় প্রদাহমূলক কেমিক্যাল থাকে। কখনো কখনো এসব কেমিক্যাল চোখের তারায় চলে যেতে পারে। – তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট