চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

মস্তিষ্কের শুধু ১০ ভাগ ব্যবহারেই মানুষ সৃষ্টি সেরা জীব !

১১ জুলাই, ২০১৯ | ২:০৫ পূর্বাহ্ণ

মানবজাতিকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আমাদের এই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখানোর ক্ষমতা এবং শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে সবথেকে বড় ভূমিকা পালন করে মস্তিষ্ক। প্রাচীন বিজ্ঞানীদের মধ্যে একটি ভুল ধারণা প্রচলিত ছিল। তাদের মতে যে প্রাণীর মস্তিষ্ক যত বড় সে তত বুদ্ধিমান। কিন্তু মানব মস্তিষ্ক অন্যান্য বড় প্রাণীদের চেয়ে ছোট হলেও মানব মস্তিষ্ক এমনভাবে গঠিত যে মানুষ যেকোনো পরিস্থিতিতে টিকে থেকে নতুন সব সমস্যার সমাধানে সক্ষম। যা পৃথিবীর অন্য কোনো প্রাণীর পক্ষে সম্ভব নয়। মানুষ নিজের মস্তিষ্কের জোরে সেই আদিকাল থেকে ভয়ানক সব পরিবেশে টিকে থেকে করেছে নতুন সব আবিষ্কার। এগিয়ে নিয়েছে মানব সভ্যতাকে। কিন্তু যদি বলা হয় মানুষ নিজের মস্তিষ্কের শুধুমাত্র ১০ ভাগ ব্যবহার করে এবং বাকি ৯০ ভাগই অব্যবহৃত? তবে কী হত যদি মানুষ নিজ মস্তিষ্কের শত ভাগই ব্যবহারে সক্ষম হত ?
মানব মস্তিষ্কের গঠন অন্যান্য প্রাণীদের থেকে কিছুটা জটিল। বিজ্ঞানীরা শত শত বছরের গবেষণা করেও মানব মস্তিষ্কের সকল জটিলতার সমাধান করতে পারেনি। তবে বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল মানুষ মস্তিষ্কের শুধুমাত্র মাত্র ১০ ভাগই ব্যবহারে সক্ষম। তাদের এই ধারণা পুরোপুরি সত্য না হলেও আংশিক সত্য। এই ধারণার পেছনের কারণ হল মস্তিষ্কের গঠন। মানব মস্তিষ্কের ১০ ভাগ নিউরন সেল এবং বাকি ৯০ ভাগই গ্লিয়াল সেল। এই ১০ ভাগ নিউরন সেলকে ঘিরে থাকে ৯০ ভাগ গ্লিয়াল সেল। তবে এই ১০ ভাগ নিউরন সেলই মানুষের সব চিন্তা, চেতনা, নতুন আবিষ্কার এবং সমস্যা সমাধান করে থাকে। বাকি ৯০ ভাগ গ্লিয়াল সেল নিউরনকে তার কাজের জন্য সহায়তা করে এবং প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান দিয়ে থাকে। তাছাড়াও গ্লিয়াল সেল এর বিভিন্ন অংশ মানব শরীরের বিভিন্ন অংগের কর্মকান্ডের জন্য দায়ী। মস্তিষ্কের এমন গঠনের কারণেই বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞানীদের মনে এই ধারণা জন্ম নেয়।
মানুষ যদি মস্তিষ্কের ১০০ ভাগই ব্যবহারে সক্ষম হতো তাহলে খুব সহজেই সমাধান হত পৃথিবীর অনেক দুরূহ সমস্যার। হয়তো নিমিষেই প্রতিষেধক তৈরি হত দুরারোধ্য সব ব্যাধির। আবিষ্কার হতো নতুন সব প্রযুক্তির। সমাধান হতো সকল অমিমাংসিত রহস্যের। কিন্তু আমাদের মস্তিস্কের পুরো অংশ শুধুমাত্র সমস্যা সমাধানে সক্ষম নয়। কারণ মানবদেহের সকল কর্মকান্ডই মস্তিষ্কের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। যদি মস্তিষ্ক পুরোপুরি চিন্তার কাজে ব্যবহৃত হত তবে হয়তো আমাদের শরীরের অন্যন্য অংশ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হত না। যে কারণে হতে পারত মৃত্যু। তবে চাইলেই বাড়ানো সম্ভব মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা।
যদি বলা হয় আইনস্টাইন এবং আপনার মস্তিষ্কের গঠন এবং নিউরন সংখ্যা সবই সমান। হ্যাঁ, পৃথিবীর সকল মানুষেরই মস্তিষ্কের গঠন সমান। তাহলে কিছু কিছু মানুষের বুদ্ধিমত্তা অন্যান্যদের থেকে বেশি কেন? এর কারণ চর্চা। মানব মস্তিষ্ক কিছুটা শরীরের পেশির মতই। ব্যায়াম এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেলে যেমন পেশি বৃদ্ধি পায় ঠিক তেমনিই মস্তিষ্কের বা বুদ্ধিমত্তারও বিকাশ ঘটানো সম্ভব। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি গবেষণায় জানা গেছে, মস্তিষ্কের উদ্দীপনা বাড়াতে প্রতিনিয়ত নতুন পরিস্থিতি নিয়ে ভাবার পাশাপাশি কঠিন সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত ঘুম ও পুষ্টিকর খাবার খেলে যেকোনো মানুষের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট