চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

জেনে নিন কোনটা করোনা আর কোনটা ডেঙ্গু

ডা. আফরোজা আকবর সুইটি

২৯ জুলাই, ২০২১ | ২:৩৫ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় বা তৃতীয় ঢেউয়ের দাপট। হাসপাতালে একটি বেড কিংবা আইসিইউ পাওয়ার জন্য  করোনা রোগীর স্বজনদের আহাজারি চলছে। এর মাঝেই শুরু হয়েছে রাজধানী ঢাকায় মশা বাহিত ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। তাই এ সম্পর্কে একটুখানি জেনে নিই-

প্রতিবছর সাধারণত বৃষ্টি বর্ষার মৌসুমে ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটে। জুন থেকে সেপ্টেম্বরে এ সংখ্যা পিকে বা সর্বোচ্চ অবস্থান করে।

করোনা আর ডেঙ্গু- দুটোই ভাইরাসজনিত রোগ। আর এদের উপসর্গগুলোতে অনেক মিল দেখা যায়।

* দুইটার ক্ষেত্রেই জ্বর, গলা ব্যথা, সর্দি, কাশি, স্বাদ না থাকা, শরীর ব্যথা এবং পেট ব্যাথা হতে পারে।

* করোনার ক্ষেত্রে এসব লক্ষণের সাথে নাকে ঘ্রাণ না পাওয়া, শ্বাস কষ্ট, ঘন ঘন শ্বাস প্রশ্বাস এবং কারো কারো পাতলা পায়খানা হয়- যেটি ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে সাধারণত হয় না।

উভয় ক্ষেত্রেই বেশিরভাগ রোগী ঘরে অবস্থান করে প্রাথমিক চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠেন। তাই দুশ্চিন্তার কারণ নেই।

কোন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হবেন কখন?

কোভিডের ক্ষেত্রে:

* অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯৩% এর নীচে নেমে গেলে

* দীর্ঘ দিন প্রচন্ড জ্বর (১০১°ফা) এর বেশি

* শ্বাস কস্ট (breathlessness)

* প্রচন্ড বুক ব্যথা, চেস্ট টাইটনেস

* প্রচন্ড মানসিক অস্থিরতা (mental confusion)

* হাত পায়ের আঙ্গুলের রঙ যদি ব্লু বা নীল হয়।

(এগুলোর সাথে যদি কো-মরবিডিটি যেমন: উচ্চ রক্তচাপ, ডায়েবেটিস,‌ এজমা এবং থাকলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে)

ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে:

নন ক্লাসিকেল, ক্লাসিকেল তেমন কোন সমস্যা না করলেও ডেঙ্গু হেমোরহেজিক কিংবা ডেঙ্গু শক সিনড্রম জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ।

ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে ‘শক সিন্ড্রোম’ হতে পারে রোগীর মৃত্যুর কারণ।

কিছু লক্ষণ বা ওয়ার্নিং সাইন আছে যেগুলো থাকলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। যেমন:

* রোগীর মুখগহ্বরের বা নাকের মিউকাস মেমব্রেন থেকে রক্ত পরা

* নাক দিয়ে রক্ত পরা

* অনবরত বমি রক্ত বমি

* কালো পায়খানা বা পায়খানার সঙ্গে রক্ত যাওয়া‌

* পেট ব্যাথা ও পেট শক্ত হয়ে যাওয়া ( abdominal pain and tenderness)

*অবসাদ এবং অস্থিরতা (lethargy and restlessness)

কিছু বিধিনিষেধ মানলে, অনেক সহজেই এ ধরনের ভাইরাস জনিত রোগ হতে রক্ষা পেতে পারেন। যেমন:

* বাসার আশপাশটা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। 

*বৃষ্টিতে পরিস্কার পানি জমে থাকার মতো জায়গা যেমন- ফুলের টব, ছাদ, কিংবা গ্যারাজ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।

* বাইরে গেলে অবশ্যই সঠিকভাবে মাস্ক ব্যবহার করুন।

* ভীড় এড়িয়ে চলুন ও পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখুন।

* ঘন ঘন সাবান পানিতে হাত ধুয়ে ফেলুন বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।

মনে রাখবেন ‘Prevention is better than cure’ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভালো। 

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন।

তথ্যসূত্র: মেডিভয়েস

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, ভাইরোলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট