চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

আগামী বছর মাঝামাঝি পর্যন্ত কম-বেশি ভোগাবে করোনা: দেবী শেঠি

অনলাইন ডেস্ক

১৫ মে, ২০২১ | ১২:০৩ পূর্বাহ্ণ

করোনাভাইরাস আগামী বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ভোগাবে বলে জানিয়েছেন ভারতের নারায়ণ ইনস্টিটিউট অব কার্ডিয়াক সায়েন্সেসের প্রতিষ্ঠাতা ডা. দেবী শেঠি।

ভারতের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে করোনা নিয়ে বিভিন্ন মতামত দেন দেবী শেঠি।   তিনি বলেন, প্রথমেই বলে রাখি আমি এপিডেমোলজিস্ট নই বা ভাইরোলজিস্ট নই। মহামারীর চরিত্র সম্পর্কে যেটুকু জ্ঞান রয়েছে, তার ভিত্তিতে বলছি যে, কোভিডের সংক্রমণ আপাতত চলবে। আগামী বছর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত তা কমবেশি ভোগাবে। সুতরাং সে ব্যাপারে এখন থেকেই মানসিক প্রস্তুতি রাখতে হবে।

ডাক্তার শেঠি বলেন, তৃতীয় ঢেউ আসবেই কি না সে ব্যাপারে কেউ নিশ্চিত নন। মহামারীর চরিত্র অনুযায়ী দ্বিতীয় ঢেউ সবসময়েই ভয়াবহ হয়। তৃতীয় ঢেউয়ের তীব্রতা কম থাকে। তবে তৃতীয় ঢেউ যদি আসে তা হলে সব থেকে আশঙ্কা ছোটদের নিয়ে। কারণ, ততদিনে বয়স্কদের টিকা নেয়া হয়ে যাবে। অধিকাংশেরই ইমিউনিটি থাকবে। কিন্তু শিশুদের টিকাগ্রহণ তখনো হবে না। ফলে তাদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে বেশি। তাই এখন থেকেই জোর দিতে হবে কমবয়সী বাবা-মায়ের টিকা নেয়া জরুরি।

এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, বয়স্ক মানুষ কোভিড আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে সমস্যা কম। কেউ যদি অক্সিজেন বেড বা আইসিইউ বেডে থাকেন তা হলে চব্বিশ ঘণ্টা অ্যাটেন্ডেন্ট লাগে না। কিন্তু কোনো কোভিড আক্রান্ত শিশু অক্সিজেন বেডে বা আইসিইউতে থাকলে সে সব সময়ে তার বাবা-বা মাকে পাশে চাইবে। 

দেবী শেঠি বলেন, আমার সারাটা জীবন আমি পেডিয়াট্রিক আইসিইউ বানাতে লাগিয়ে দিয়েছি। হার্ট সার্জারির পর শিশুদের দেখভালের জন্য তা জরুরি। তাই শিশুরা কোভিড আক্রান্ত হয়ে অক্সিজেন বেড বা আইসিইউ বেডে থাকলে কী বায়না করতে পারে, আমার থেকে ভাল কেউ জানে না। তাই ততদিনে তার বাবা বা মায়ের টিকাগ্রহণ হয়ে যাওয়া উচিত। যাতে আইসিইউতে তারা সন্তানের পাশে থাকতে পারেন।

সাক্ষাৎকারে ডাক্তার দেবী শেঠি ভারতের পরিস্থিতি নিয়ে বলেছেন, তৃতীয় ঢেউ এলে আরো কয়েক লাখ ডাক্তার, নার্স ও প্যারামেডিক চাই। একটা বিষয় বুঝতে হবে—গত এক বছর ধরে কোভিড সামলাতে সামলাতে ডাক্তার-নার্সদের একটা বড় অংশ ক্লান্ত। আবারও বলছি বয়স্ক রোগীদের সামলাতে তাদের অতটা বেগ পেতে হয়নি। কিন্তু তৃতীয় ঢেউ যদি আসে তা হলে শিশুরা আক্রান্ত হবে। তখন এই ক্লান্ত ওয়ার্কফোর্স দিয়ে তাদের সামলানো যাবে না।

ডক্টর দেবী শেঠি বলেন, একটা ব্যাপার মনে রাখতে হবে, কোনো ডাক্তার শুধু টাকার জন্য কোভিড আইসিইউতে কাজ করতে চাইবেন না। কিন্তু এমবিবিএস পাশ ডাক্তারদের যদি বলা যায় যে এক বছর কোভিড আইসিইউতে কাজ করলে পিজিতে পড়তে দেওয়া হবে, অনেকেই রাজি হয়ে যাবে। কারণ পিজিতে আসন কম। ডাক্তাররা পড়ার সুযোগ পান না। সে জন্য খাটতে হয়। আমাকে কেউ যদি বলত যে পিজি এন্ট্রান্সের জন্য আপনার ডান হাত কেটে দিতে হবে—আমি রাজি হয়ে যেতাম। সুতরাং ডাক্তারদের যেমন সেই সুযোগ বা বেতন দিতে হবে, তেমনই নার্সরা কোভিড আইসিইউতে কাজ করলে তাদের পাশ সার্টিফিকেট দিতে হবে। তবেই ওয়ার্কফোর্স বাড়ানো সম্ভব। এবং এই তরুণ ডাক্তার নার্সরাই শিশুদের সামলাতে পারবেন। বড়রা নয়।

তবে সামগ্রিকভাবে কোভিডের সংক্রমণ মোকাবিলায় টিকাগ্রহণের ওপরই জোর দিয়েছেন ডাক্তার শেঠি। 

তিনি বলেন, ভ্যাকসিনের আর ট্রায়াল দরকার নেই। লক্ষ লক্ষ মানুষ ভ্যাকসিন নিয়ে ফেলেছেন। শুধু দরকার উৎপাদন বাড়ানো। এ জন্য দেশ বিদেশের সমস্ত ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গে এখনই কথা বলতে হবে। টাকা আগাম পেলে সবাই ভ্যাকসিন বানাতে রাজি হবে। আশা করি সমস্যা হবে না। তথ্যসূত্র: দেশ রুপান্তর

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট