চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

লকডাউনে টিকার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ নিয়ে দুশ্চিন্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক 

১৯ এপ্রিল, ২০২১ | ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ

গত ১২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে কোভিড ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজের টিকা নেন চল্লিশোর্ধ্ব তানভীরুল করিম। পারিবারিক কারণে সপ্তাহখানেক আগে তানভীর চলে যান নিজ জেলা কক্সবাজারে। আর এতেই চলমান লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় শহরে ফিরতে পারেননি তিনি। এরমধ্যে গতকাল শনিবার ছিল তানভীরের দ্বিতীয় ডোজের টিকাদানের সময়। টিকা দিতে ক্ষুদে বার্তাও পেয়েছেন তিনি। কিন্তু লকডাউনের কারণে আটকা পড়ায় টিকা নিতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি।

কথা প্রসঙ্গে তানভীর বলেন, আমার উপজেলা কেন্দ্রে গিয়ে যোগাযোগ করেছি। তারা বলেছেন, প্রথম ডোজ যে কেন্দ্রে দিয়েছি। সেখানেই দ্বিতীয় ডোজ দিতে হবে। এখনতো যেতেও পারছি না। কিভাবে টিকা দিবো। তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

তানভীরের মতো অনেকেই বিদ্যমান লকডাউনে আটকা পড়ায় দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়ে জটিলতায় পড়েছেন। বিশেষ করে যারা অন্যত্র গিয়ে আটকা পড়েছেন তাদের ক্ষেত্রেই বেশি দেখা যাচ্ছে। এরমধ্যে অনেকেই নির্ধারিত সময়ে কেন্দ্রে পৌঁছাতে না পেরেও দুশ্চিন্তায় আছেন টিকা গ্রহীতারা।

তবে আশার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগ। কর্তারা বলছেন, এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোন অবকাশ নেই। নির্ধারিত দিনে কেন্দ্রে উপস্থিত হতে না পারলেও পরবর্তীতে টিকা নিতে পারবেন। অথবা প্রথম ডোজ টিকা গ্রহণের ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে যে কোন দিন দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে পারবেন। এতে কোন সমস্যা হবে না।

প্রসঙ্গত গত ১৪ এপ্রিল থেকে সারাদেশে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউন চলমান রয়েছে। এতে বন্ধ রয়েছে যাবতীয় গণপরিবহন। চলমান এ লকডাউন আগামী ২০ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। তবে অনেকের শঙ্কা লকডাউনের সময় আরও বাড়তে পারে। এমন পরিস্থিতিতেই যারা এক জেলা থেকে অন্য জেলায় গিয়েছেন। অথবা চাকরির সুবাদে বদলি বা নিজ এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় অবস্থান করছেন, তাদের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ডোজ টিকা পাওয়া নিয়েই প্রশ্ন বেশি।

যেমন বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল মাবুদ। প্রথম ডোজ টিকা নেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ কেন্দ্রে। সম্প্রতি তিনি বদলি হয়ে বর্তমানে অবস্থান করছেন নোয়াখালীতে। মাবুদ জানান, ১৯ তারিখ দ্বিতীয় ডোজের সময় দেয়া হয়েছে। কিন্তু লকডাউনের কারণে যেতেও পারছি না। স্বাস্থ্য দপ্তরের হটলাইন নম্বরে কল দিয়ে জানিয়েছিলাম। তারাও বলছে প্রথম ডোজ যে কেন্দ্রে দিয়েছি। দ্বিতীয় ডোজও সেই কেন্দ্রে দিতে হবে। আবার শুনছি- লকডাউনের সময়ও বাড়বে। এখন কিভাবে যাব, কিভাবে দিব। সেই চিন্তায় আছি।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, এ নিয়ে কোন দুশ্চিন্তার কারণ নেই। ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে যে কোন সময় টিকা নিতে পারবে। তাই একটু অপেক্ষা করলে সমস্যা হবে না। দ্বিতীয় ডোজের টিকা যথেষ্ট মজুদ রয়েছে। পরবর্তীতে দেয়া যাবে। তবে হ্যাঁ।

যদি কোন কারণে চলমান লকডাউন দীর্ঘায়িত হয়, সেক্ষেত্রে অবশ্যই বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে। যা আগে সকলকে জানিয়ে দিবে স্বাস্থ্য বিভাগ। তিনি বলেন, টিকা নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তিত স্বাস্থ্য বিভাগ। এটা নিয়ে আমাদের দায়িত্বটাই সবচেয়ে বেশি। যতদ্রুত মানুষদের টিকার আওতায় আনা যাবে, ততই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। সুতরাং এ নিয়ে চিন্তার কোন কারণ নেই।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট