চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

তারুণ্য বজায় রাখে ঝিঙা

পেট পরিষ্কার করে দেহকে সুস্থ রাখে

নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ জুন, ২০১৯ | ২:০৫ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের বেশ পরিচিত সবজি ঝিঙা। এটি গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালীন সবজি। এর গঠন লম্বাটে। একদিকে ক্রমশ সরু হয়ে শেষ হয়। ঝিঙের গায়ে দৈর্ঘ্য বরাবর পাশাপাশি খাঁজকাটা দাগ থাকে এবং বাহিরের আবরণ খসখসে। ঝিঙের ফুল ফোটে বিকালে। ঝিঙা দুই প্রকার। তেতো ঝিঙা ও মিষ্টি ঝিঙা। মিষ্টি ঝিঙাই তরকারি হিসেবে সিদ্ধ করে খাওয়া হয়। শাকসবজিতে মানুষের দেহের খাদ্য চাহিদার উপাদান পুরোপুরি বিদ্যামান। ঝিঙা এমন একটি সবজি যাতে খাদ্যের সব উপাদানই পাওয়া যায়। ঝিঙাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম পাওয়া যায়। তাছাড়া অন্যান্য খাদ্য উপাদনও কম বেশি এতে রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম খাবার উপযোগী ঝিঙায় পুষ্টি উপাদান নিম্নরূপ : শর্করা ৪.৩ গ্রাম, আমিষ ১.৮ গ্রাম, জলীয় অংশ (পানি) ৯৫ গ্রাম, খাদ্য শক্তি ৩০ কিলোক্যালরি, খনিজ লবণ ০.৩ গ্রাম, চর্বি ০.৬ গ্রাম। ভিটামিন এ ৬৭০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি-১ বা থায়ামিন ০.১১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-২ বা রাইবোফ্লাভিন ০.০৪ মিলিগ্রাম, নায়াসিন বা ভিটামিন বি-৬ ০.৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৬ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৪০ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৪০ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.৫ মিলিগ্রাম, আঁশ ০.৫ গ্রাম, ভিটামিন-ই ১.২০

মিলিগ্রাম। ফুল ও ফলে থাকে মুক্ত অ্যামাইনো এসিড, আরজেনিন, গ্লাইসিন, লাইসিন, থিওনিন, এসপার জিন, লিউসিন। বীজে থাকে ২০% স্যাপোনিন, গ্লাইকোসাইড, এনজাইম ও তিক্ত গ্লাসোসাইডিক উপাদান। মূলে থাকে কিউকার বিটাসিন বি এবং সামান্য পরিমাণে সি থাকে। ঝিঙে সবজি শীতল মধুর খাবার। পেটের খিদে বাড়ায়, হাঁপানি জ্বর, কাশি, বমি উপশম করে। পেট পরিষ্কার করে দেহকে সুস্থ রাখে। ঝিঙা খাবার গ্রহণের ফলে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। এর ভিটামিস সি রক্তের বিশুদ্ধতা চামড়ার সৌন্দর্য, চর্মরোগ, দাঁতের মাড়ির নানা রোগ ও এন্টিঅক্সিডেন্টকে শক্তিশালী করে। ফলে শরীর সহজে রোগে আক্রান্ত হয় না। এমনকি শরীরে ক্যান্সার জীবাণু ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। ঝিঙাতে থাকা ফোলেট হৃদরোগ বা হার্টএটাক প্রতিরোধ করে। ঝিঙায় আঁশ থাকায় সহজে হজম হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। যারা গ্যাস্টিকে ভুগছেন তারা ঝিঙে খেলে উপকার পাবেন। ঝিঙাতে ভিটামিন ই থাকা এটি শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। রক্তের বিদ্যমান এলডি এল (লো- ডেনসিটি লাইপ্রোটিন) নামের একপ্রকার ক্ষতিকর কোলেস্টরলের মাত্রা কমায়। হৃদরোগ ও স্টোকের জন্য দায়ী রক্তনালিতে এথেরোস্কেলেরোসিস প্রতিরোধ করে। মহিলাদের সন্তান ধারণ ক্ষমতা ও পুরুষের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। শরীরে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। ফলে তারুণ্য বজায় থাকে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট