চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

দক্ষিণ পতেঙ্গায় ভুয়া ডাক্তার ও ফার্মেসির মালিককে জেল

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ জুন, ২০১৯ | ২:১৩ পূর্বাহ্ণ

দক্ষিণ পতেঙ্গার বিজয়নগরে এক ভুয়া ডাক্তারকে ৬ মাসের কারাদ- ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভুয়া চিকিৎসকের নাম বিকিরণ বড়ুয়া। এ সময় আয়েশা মেডিকেল নামে এক ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল ওষুধ বিক্রির দায়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং এর মালিক ফরিদুল আলমকে ৩ মাসের কারাদ- দেওয়া হয়। পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ডা. মো. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি এবং র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র পুলিশ সুপার মিমতানুর রহমান। জেলা প্রশাসন ও র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেলে কথিত ডাক্তার বিকিরণ বড়–য়াকে ধরার জন্য তার কাছে রোগী সেজে এক র‌্যাব সদস্যের মাধ্যমে সিরিয়াল নেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৬টায় চেম্বারে আসতে বলা হয় তাকে। দক্ষিণ পতেঙ্গার বিজয়নগরের আয়েশা মেডিকেলে তার চেম্বারে দেখা যায় বাইরে অসংখ্য রোগীর ভিড়।

নিজেকে ডায়াবেটিস, মেডিসিন ও শিশু রোগের চিকিৎসক দাবি করা বিকিরণের চেম্বারের বাইরে বেশ কয়েকজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও কয়েকটি শিশুকেও দেখতে পাওয়া যায়। প্রথমে র‌্যাবের সিনিয়র এএসপি মিমতানূর রোগী সেজে তার সঙ্গে কথা বলেন এবং একপর্যায়ে তার ডিগ্রি সম্পর্কে জানতে চান। বিকিরণ তার সার্টিফিকেট ঢাকায় রয়েছে বলে উল্লেখ করে তা আনার জন্য দুইদিন সময় চান। এ সময় বাইরে অপেক্ষমাণ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান এবং সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ডা. মো. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি তার চেম্বারে ঢোকেন এবং তার বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন নাম্বার জানতে চান। তিনি তার রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ৯১১১৩ বলে জানান। িি.িনসফপ.ড়ৎম.নফ ওয়েবসাইট সার্চ করে এ নম্বরের বিপরীতে কোনো চিকিৎসকের অস্তিত্ত্ব পাওয়া যায়নি। এমনকি ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, এখন পর্যন্ত এমবিবিএস ডাক্তারদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৯০০০০ পর্যন্ত তালিকাবদ্ধ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি গত মাসে তার রেজিস্ট্রেশন হয়েছে বলে উল্লেখ করেন এবং এ জন্যই তা ওয়েবসাইটে নেই বলে ব্যাখ্যা দেন। কোথা থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেছেন জানতে চাইলে তিনি ভারতের একটি মেডিকেল কলেজের নাম বলেন। সেই মেডিকেল কলেজের বেশ কিছু ভুয়া প্রিন্ট করা সার্টিফিকেটও প্রদর্শন করেন। বিকিরণ বড়–য়ার প্রেসক্রিপশন প্যাডে কাস্টম হাউসের মেডিকেল অফিসার বলে উল্লেখ করেছেন। কাস্টম হাউসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে এ নামে কোনো ডাক্তার সেখানে কাজ করেন না বলে জানানো হয়। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তিনি ঢাকায় মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেছেন বলে উল্লেখ করেন। যে আয়েশা মেডিকেল ফার্মেসিতে তিনি চেম্বার করতেন সে ফার্মেসিকে লাইসেন্স দেখাতে বললে লাইসেন্স নেই বলে জানান। তার আচরণে সন্দেহ হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদে সে এবং বিকিরণ বড়–য়া যৌথভাবে ভুয়া চিকিৎসা ব্যবসা করার কাহিনী বেরিয়ে আসে। ফার্মেসিতে তল্লাশি চালিয়ে ৪ বস্তা অননুমোদিত ও অবৈধ, ব্যবহার নিষিদ্ধ ওষুধ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ২০১৩ সালের মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া যায়। জমে যাওয়া আইভি স্যালাইনসহ নষ্ট ও গলে যাওয়া ওষুধও ছিল। এ সময় ফার্মেসির মালিক ফরিদুল আলমকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও ৩ মাসের কারাদ- দেওয়া হয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট