চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

আট মাসের মাথায় ফের বিকল চমেক পিসিআর

ইমাম হোসাইন রাজু 

২৪ ডিসেম্বর, ২০২০ | ২:২৪ অপরাহ্ণ

ল্যাব প্রতিষ্ঠার পর যে মেশিনের ত্রুটির কারণে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) কোভিড পরীক্ষা বিলম্বিত হয়েছিল, সেই মেশিনটিই এবার বিকল হয়েছে। আট মাসের মাথায় এ নিয়ে দু’বার বিকল হয়েছে নতুন ক্রয় করা চমেকের কোভিড ল্যাবের টাইম পলিমারেজ চেইন রি-অ্যাকশন (আরটি-পিসিআর) মেশিনটি। ইতোমধ্যে মেশিনটির ত্রুটি সারাতে পাঠানো হয়েছে রাজধানী ঢাকায়। যার কারণে নমুনা পরীক্ষা নিয়ে হিমশিমের মধ্যেই দিন কাটছে ল্যাব সংশ্লিষ্টদের।

যদিও চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) থেকে ধার নেয়া অন্য পিসিআর মেশিন দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মীরা। তবে একটি মেশিনের উপর চাপ বাড়ার পাশাপাশি নমুনার জট বাড়ারও শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিপরীতে নমুনা জট না হওয়া এবং সঠিক সময়ের মধ্যে ফল পৌঁছে দিতে কর্মঘণ্টাও বেড়েছে সম্মুখযোদ্ধাদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত সোমবার (২১ ডিসেম্বর) কোভিড-১৯ এর নমুনা পরীক্ষা চলাকালেই হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় পিসিআর মেশিনটি। বিষয়টি ল্যাব কর্তৃপক্ষ সঙ্গে সঙ্গেই মেশিন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করেন। পরদিন মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) সরবরাহকারীদের পাঠানো ইঞ্জিনিয়ার এসে ত্রুটি সারানোর চেষ্টা চালিয়ে গেলেও সচল করা সম্ভব হয়নি। বাধ্য হয়ে সেদিনই আগত ইঞ্জিনিয়ার ত্রুটি সারানোর জন্য পিসিআরটি মেশিন সঙ্গে করে নিয়ে যান ।

ল্যাব সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, একটি পিসিআর মেশিন বিকল হলেও সচল থাকা অন্যটিতে পরীক্ষার কাজ চালানো হচ্ছে। তবে এতে করে একদিকে যেমন বিদ্যমান পিসিআর মেশিনের উপর বাড়তি চাপ পড়ছে, তেমনি নমুনা পরীক্ষায় নিয়োজিত কর্মীদেরও অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়েছে। মেশিন না থাকায় ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে নমুনার জটও।

ল্যাব সূত্র জানায়, দু’টি পিসিআর মেশিন দিয়ে প্রতিদিনই পাঁচ শতাধিক নমুনা পরীক্ষা হয়ে আসছে চমেকের এ ল্যাবে। যাতে দুই থেকে আড়াইশ’র অধিক পরীক্ষা করতে হয় বিদেশ যাত্রীদের। এরমধ্যে একটি মেশিনের অনুপস্থিতি থাকায় গত মঙ্গলবার পরীক্ষা নমুনা পরীক্ষা হয়েছে মাত্র ২১৯টি। যার সিংহভাগই বিদেশযাত্রী। ফলে পরীক্ষা হয়নি উপজেলা ও বিভিন্ন বুথ থেকে সংগ্রহ হওয়া নমুনাগুলোও।  প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২১ ডিসেম্বর থেকে সংগ্রহ হওয়া নমুনা ফলাফলও এখন পর্যন্ত দিতে পারেনি চমেক ল্যাব। গতকাল বুধবার পর্যন্ত ল্যাবটিতে প্রায় পাঁচশ’র কাছাকছি নমুনা জমে আছে। যদিও জট কমাতে ইতোমধ্যে পূর্বের চেয়ে বুধবার থেকেই কর্মঘণ্টাও বাড়িয়ে দিয়েছে ল্যাব সংশ্লিষ্টরা। রাত পর্যন্তও কাজ করে যাচ্ছেন কোভিড সম্মুখযোদ্ধারা।

চমেক হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ ও আরটি পিসিআর ল্যাবের প্রধান ডা. এহসানুল হক কাজল পূর্বকোণকে বলেন, ‘ত্রুটি সারাতে পিসিআর মেশিনটি ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারগণ তা নিয়ে গেছেন। যার কারণে ল্যাবে একটু চাপ বেড়েছে। বাধ্য হয়েই এক মেশিন দিয়েই কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে। চিন্তার বিষয় এক মেশিন দিয়ে অতিরিক্ত চাপ দেয়ায় এটিও সমস্যায় পড়বে কিনা। তবে তাদের বলেছি (সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান) বিকল্প আরেকটি মেশিন যেন তারা দ্রুত সরবরাহ দেয়।’

উল্লেখ্য, দেশে করোনার সংক্রমণ শনাক্তের পর স্থাপিত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ল্যাবে কোভিড নমুনা পরীক্ষার জন্য রিয়েল টাইম পলিমারেজ চেইন রি-একশন (আরটি-পিসিআর) ক্রয় করা হয়। যা গত ২০ এপ্রিল করোনা ল্যাবের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিসহ পিসিআর মেশিনটি সরবরাহ করে ওভারসিজ ম্যানেজমেন্ট করপোরেশন (ওএমসি) নামে ঢাকার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু পিসিআর মেশিনটি স্থাপনের ১৩ দিন পর চালু করতে গেলে প্রথম ত্রুটি ধরা পড়ে। যার কারণে তখনই ত্রুটিপূর্ণ মেশিনটি খুলে নিয়ে যায় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওএমসি।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট