চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

আজ বিশ্ব এইডস দিবস

এইডসে মৃত্যু: কমেছে এক দশমাংশ, আক্রান্ত নেমেছে অর্ধেকে

নিজস্ব প্রতিবেদক 

১ ডিসেম্বর, ২০২০ | ২:২৯ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামে ২০১৯ সালে এইচআইভি আক্রান্ত বা এইডস  রোগী শনাক্ত হয়েছিল ৭১ জন। কিন্তু এক বছরের ব্যবধানে শনাক্ত কমেছে প্রায় অর্ধেক। অর্থাৎ ২০২০ সালে রোগী শনাক্ত হয়েছে মাত্র ৩৯ জন। আরও সুখবর হচ্ছে, শনাক্তের পাশাপাশি হ্রাস পেয়েছে মৃত্যু রোগীর সংখ্যাও। এরমধ্যে এক বছরের ব্যবধানেই মৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে এক দশমাংশ বা ৯০ শতাংশ।

চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াবেটিস কিংবা ম্যালেরিয়া বা ক্যান্সারের মতোই নিরাময় যোগ্য এইডস। এইডস হলেই মৃত্যু হবে এমন কথার এখন আর ভিত্তি নেই। চিকিৎসা নিলে এইডস থেকে বাঁচা সম্ভব।

এমন পরিস্থিতির মধ্যেই আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রামসহ সারা দেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব এইডস দিবস-২০২০। এইডসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৮৮ সাল থেকে পহেলা ডিসেম্বর পালিত হয়ে আসছে দিবসটি। দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘সারা বিশ্বের ঐক্য, এইডস প্রতিরোধে সবাই নিব দায়িত্ব’।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যে জানা যায়, চট্টগ্রামে চলতি বছর এইডস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩৯ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। অথচ তার আগের বছর তথা ২০১৯ সালে শনাক্ত হয় ৭১ জন রোগী। যাদের মধ্যে  মৃত্যু হয় ১০ জনের। এদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। এছাড়া ২০১৮ সালে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৫ জনে। এর আগের বছর ২০১৭ সালে তা ছিল মাত্র ৩০ জনে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের এন্টি রিক্টোভাইরাল থেরাপি সেন্টারে (এআরটি) তথ্য অনুসারে, চট্টগ্রামে এইচআইভি আক্রান্ত বা এইডস রোগীদের ৪১১ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন এই সেন্টার থেকে। যাদের মধ্যে পুরুষ, মহিলা, শিশুর পাশাপাশি তৃতীয় লিঙ্গ ও রোহিঙ্গা নাগরিক রয়েছেন।

চিকিৎসকরা বলছে, চট্টগ্রামের এইচআইভি আক্রান্ত প্রবাসীদের মধ্যে অধিকাংশই হচ্ছে মধ্যপাচ্য ফেরত। যাদের মধ্যে ওমান, দুবাই, আরব আমিরাত প্রবাসীর সংখ্যাই বেশি। প্রবাসীদের অসচেতনতায় তাদের স্ত্রীরাও আক্রান্ত হচ্ছেন এইচআইভি এই ভাইরাসে। তাদের থেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন স্ত্রীরা। যার কারণে রেহাই পাচ্ছে না শিশুরাও। যারা জন্ম সূত্রেই আক্রান্ত হয়েছে এই রোগে।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, এইডস রোগীর ছোঁয়াছে রোগ নয়। এইডস রোগীর চিকিৎসায় কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরাও ঝুঁকিমুক্ত। এইডসের থেকে বাচাঁতে সকলকে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে সচেতন করে তুলতে হবে। তা না হলে অসচেতনতার কারণে আবার বাড়তে থাকবে এইডস রোগীর সংখ্যা।

তথ্য অনুসারে, এইচআইভি সংক্রমণের ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ কম ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে। এখন পর্যন্ত সাধারণ জনগণের মধ্যে সংক্রমনের হার শূন্য দশমিক শূন্য এক ভাগের নিচে। তবে ঝুঁকিপূর্ণের মধ্যে শিরায় মাদক গ্রহণকারী, যৌনকর্মী, সমকামী ও হিজড়াদের মধ্যে এ সংক্রমণের হার তিন দশমিক ৯ শতাংশ। যদিও প্রতিবেশী দেশগুলোর কারণে এইচআইভির ঝুঁকি এড়ানোর সুযোগ নেই বাংলাদেশের।

আজ ‘বিশ্ব এইডস দিবস’:

বিশ্বে  ‘বিশ্ব এইডস দিবস’ উপলক্ষে স্বাস্থ্য বিভাগসহ বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পালন করা হচ্ছে দিবসটি। একই সাথে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পালন করা হচ্ছে দিবস।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট