চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

এবার ৪ ল্যাব বন্ধ ইপিজেড পতেঙ্গায়

ইমাম হোসাইন রাজু

১৮ নভেম্বর, ২০২০ | ১:৩৪ অপরাহ্ণ

পুরোটাই বিপণী বিতান। কিন্তু দ্বিতীয় তলার কয়েকটি রুম নিয়ে গড়ে ওঠেছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সেখানে টেকনিশিয়ান ছাড়াই পরীক্ষা নিরীক্ষা থেকে শুরু করে এক্স-রে পর্যন্ত চালাচ্ছেন কয়েকজন। তাদের আবার এ সংক্রান্তে নেই কোন শিক্ষা-অভিজ্ঞতা। এমন ১৪টি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গতকাল মঙ্গলবার অভিযান চালিয়েছে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগ। এরমধ্যে টেকনিশিয়ান ছাড়া এক্স-রে পরিচালনা ও অনিয়ম পাওয়ায় চারটি ল্যাবের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বাকি ল্যাব বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে সতর্ক করার পাশাপাশি শতভাগ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পরামর্শও দেন স্বাস্থ্য বিভাগের টিমটি। চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বির নেতৃত্বে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম অভিযান পরিচালনা করেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টাব্যাপী বন্দর, ইপিজেড ও পতেঙ্গা থানাধীন এলাকার ১৪টি ল্যাবে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি, প্রধান সহকারী সাহিদুল ইসলামসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানানো হয়, দক্ষ টেকনিশিয়ান নেই, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই চলছে এক্স-রে পরীক্ষা নিরীক্ষার কার্যক্রম। যেটাতে এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে, সাথে সাথেই তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি ক্লিনিকে নার্স, আয়া বা অন্যান্য স্টাফও নেই। এসব ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে সংশোধন করে নেয়ার জন্য সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। এর বাইরে কিছু ল্যাবের কার্যক্রম সন্তোষজনক হলেও বাকি সমস্যা সংশোধনের পরামর্শ দেয়া হয়।

যে সব প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয় :

ইপিজেডের কিউরেক্স ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টার, কর্ণফুলী ডায়াগনস্টিক কমপ্লেক্স, বে-সিটি মেডিকেল সার্ভিসেস কম্পিউটারইজ্ধসঢ়;ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সী ভিউ ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিমিটেড, গ্রিন লাইফ ডায়াগনস্টিক এন্ড রিসার্চ সেন্টার, বন্দর ল্যাব ডায়াগনস্টিক কমপ্লেক্স, বন্দরটিলা চক্ষু হাসপাতাল, সেফ ল্যান্ড ডায়াগনস্টিক এন্ড রিসার্চ সেন্টার ১ ও ২, জনতা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কাটগড় ডায়াগনস্টিক এন্ড রিসার্চ সেন্টার, মেডিসেভ ডায়াগনস্টিক এন্ড রিসার্চ সেন্টার, মডার্ন ডায়াগনস্টিক এন্ড রিসার্চ সেন্টার।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি পূর্বকোণকে বলেন, ‘অভিযানে মানসম্মত টেকনিশিয়ান না থাকায় সেফ ল্যান্ডের দুটি শাখার এক্স-রে কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। একই অভিযোগে জনতা এবং বে সিটি মেডিকেল সার্ভিসেস নামে আরেকটিতে বন্ধ করা হয় এক্স-রে কার্যক্রম। বাকিগুলোতে কিছুটা সন্তোষজনক হলেও, তাদেরকেও নির্দেশনা দেয়া হয়। নির্দেশনার বাইরে গেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

অভিযান চলবে গ্রাম-গঞ্জেও :

অবৈধ নামসর্বস্ব ও নিম্মমানের বেসরকারি হাসাপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে উপজেলা পর্যায়ও। যাতে দক্ষ চিকিৎসক কিংবা টেকনিশিয়ানসহ স্টাফ না থাকলেও শুধুমাত্র সিল স্বাক্ষর ব্যবহার করে চলে অপচিকিৎসা। এবার এসব ক্লিনিক চিহ্নিত করে অভিযান পরিচালনার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যবিভাগ।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির পূর্বকোণকে বলেন,  ‘শহর ছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে অভিযান চালিয়ে যাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গ্রাম-গঞ্জেও কিছু কিছু এমন অবৈধ ক্লিনিক-ল্যাব আছে, তা দ্রুত চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। যেখানেই এমন অস্তিত্ব পাওয়া যাবে, সেখানেই অভিযান চলবে। এ ব্যপারে স্বাস্থ্য বিভাগ জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করবে। কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।’

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট