অবৈধ হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টার চিহ্নিত করতে কয়েকদিনের মধ্যে অভিযান শুরু করবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এদিকে, চসিকের সহযোগিতায় নগরীর ওয়ার্ডভিত্তিক অবৈধ হাসপাতাল-ল্যাবের তালিকা করার পরিকল্পনা করেছে সিভিল সার্জন কার্যালয়।
চসিকের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন পূর্বকোণকে জানান, নগরীতে অবৈধ কোন হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টার থাকতে পারবে না। সবাইকেই লাইসেন্স নিতে হবে। লাইসেন্স না নিলে সিলগালা করে দেয়া হবে। অভিযোগ আছে, দীর্ঘদিন ধরে নগরীর অবৈধ হাসপাতাল-ল্যাবের তালিকা করা হয়নি। অবৈধ হাসপাতাল ও রোগ নির্ণয় কেন্দ্রের কোনো তালিকাও নেই। করোনাকালে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর করুণ চিত্র প্রত্যক্ষ করেছে চট্টগ্রামবাসী। এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় অবৈধ হাসপাতাল ক্লিনিকের তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়। চট্টগ্রামে বর্তমানে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে ৫৮০টি। এর মধ্যে হালনাগাদ পূর্ণাঙ্গ লাইসেন্স আছে ১৫০টির। অবৈধ হাসপাতালগুলোতে সাথে স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনীতিকদের ছত্রছায়াও থাকে। এসব সেবা প্রতিষ্ঠানে চলে রোগীদের সঙ্গে চরম প্রতারণা। রোগীদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ফি, সেবা ফি, সার্ভিস ফিসহ নানা নামে গলাকাটা অর্থ আদায় করা হয়। কিন্তু প্রত্যাশিত সেবা মিলে না। সরকারি হাসপাতালের সমস্যা-সংকট এবং নানা অব্যবস্থাপনাকে পুঁজি করেই এসব অনিয়ম করছে বেসরকারি হাসপাতালগুলো। তবুও এসব প্রতিষ্ঠান থাকে স্বাস্থ্য প্রশাসনের নজরদারির বাইরে। একারণে দিনের পর দিন এসব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ভুক্তভোগী রোগীদের ঠকিয়ে আসছে। ভুল চিকিৎসা, অপচিকিৎসা, নার্স দিয়ে অস্ত্রোপচার, অতিরিক্ত ফি আদায়সহ নানা অনিয়ম থাকলেও প্রতিকার পায় না সাধারণ মানুষ।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, যারা আমাদের অনলাইনে আছে তাদেরকে বৈধ হিসেবেই ধরে নেয়া যায়। তবুও বাস্তবতা দেখার জন্য আমরা মাঠে কাজ করছি। যেহেতু আমাদের জনবল কম তাই নগরীর হাসপাতাল-ক্লিনিকি, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ইত্যাদির ওয়ার্ডভিত্তিক একটি তালিকা সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়েছি। প্রতিটি ওয়ার্ডে সিটি কর্পোরেশনের লোক আছে। এক্ষেত্রে কোন ওয়ার্ডে কতটি হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে তার একটি তালিকা তাদের সহায়তায় তৈরি করব। এবিষয়ে তাদের একটি চিঠি দেয়া হচ্ছে। আশা করছি চসিকের কাছ থেকে সহযোগিতা পাব।
জানতে চাইলে চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী পূর্বকোণকে বলেন, অবৈধ হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার চিহ্নিত করতে সিভিল সার্জন অফিস থেকে যদি কোন সহযোগিতা চায় চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগ আন্তরিকভাবে সাড়া দেবে। অবৈধ হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যতটুকু অনিয়ম করার সুযোগ থাকে, বৈধ হাসপাতালে ততটুকু সাহস করে না। কারণ তখন লাইসেন্স বাতিল হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই বৈধ হাসপাতালে সেবার মান তুলনামূলক ভাল হয়। আমরাও চাই নগরীতে কোন অবৈধ হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টার না থাকুক। এক্ষেত্রে চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগ নগরবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সিভিল সার্জনকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
পূর্বকোণ/এএ