চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বাংলাদেশ: করোনা এখানে মধুচন্দ্রিমা ধাপে

বাংলাদেশ: করোনা এখানে মধুচন্দ্রিমা ধাপে

ডা. গোলাম মোর্শেদ

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | ৫:০৭ অপরাহ্ণ

অনেকেরই একটা প্রশ্ন ছিল বাংলাদেশে কখন করোনার দ্বিতীয় ধাপ আসবে। আসলে বাংলাদেশে করোনা নিয়ন্ত্রণের জন্য যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তাতে প্রথম ধাপই শেষ হয়নি। দ্বিতীয় ধাপ আসবে কোত্থেকে।

করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিগুলো হলো টেস্টিং, কন্টাক্ট ট্রেসিং, কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন এবং করোনার চিকিৎসা। এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ হয়ে গেলে এবং একটি দেশে বা সমাজে করোনা একদম কমে গেলে তারপরে আবার যদি এটি কোন কারণে বেড়ে যায় তাহলে সেটাকে বলা হয় দ্বিতীয় ধাপ। কিন্তু বাংলাদেশে করোনা প্রথম থেকে যে বাড়তে ছিল সেটাই ক্রমে বাড়তে আছে। এটা কমে যায়নি। সুতরাং দ্বিতীয় ধাপ আসার অবকাশ কোথায়। তবে বাংলাদেশে বর্তমানে যে পরিস্থিতি চলছে তাতে করোনার এখানে মধুচন্দ্রিমা ধাপ শুরু হয়ে যাবে।

মানুষ চলাফেরা করছে। কাজে-কর্মে বের হচ্ছে। কিন্তু তারা মাস্ক পড়ছেন না। সোশ্যাল ডিসটেন্স মেনে চলছেন না। করোনাভাইরাস খুবই উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন সংক্রমণকারী জীবাণু। এটি মানুষ থেকে মানুষে খুব দ্রুত ছড়িয়ে যায়।

আপনি যেখানেই যান এই ভাইরাসটি আপনার চারপাশের মানুষের ভিতরে থাকতে পারে। এবং যদি আপনারা খুব কাছাকাছি থাকেন, মাস্ক না পড়েন, সোশ্যাল ডিসটেন্স মেইন্টেন না করেন তাহলে এক মানুষ থেকে আরেক মানুষে ভাইরাসটি লাফিয়ে লাফিয়ে ছড়িয়ে বেড়াবে।

কিছুদিনের মধ্যেই এটি কোটি কোটি মানুষের শরীরে চলে যাবে। তবে একটা ব্যাপার হল এর অধিকাংশ রোগীদের মৃদু সংক্রমণ হয়। অনেকের কোন প্রকার উপসর্গ দেখা দেয় না। এসিম্পটোমেটিক সংক্রমণ বলে এদেরকে। এই মৃদু সংক্রমণ রোগীর সংখ্যাই বেশি। যার কারণে তারা বুঝে উঠতে পারে না যে আসলে তাদের করোনাভাইরাস দিয়ে সংক্রমণ হয়েছে কিনা। তবে এদের মধ্যেই কিছু রোগীর কিন্তু মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। তাদের জীবন সংকটাপন্ন হয়ে উঠতে পারে।

অনেক দেশেই কন্টাক্ট ট্রেসিং করা হয়। কন্টাক্ট ট্রেসিং মানে হলো একজন করোনা রোগীর সংস্পর্শে বিগত ১৪ দিনের মধ্যে যারা যারা এসেছে তাদের সবাইকে পরীক্ষা করে দেখা হয় তাদের ভেতর ভাইরাস আছে কিনা। এ উপায়ে ভালোভাবে বুঝতে পারা যায় আসলেই একটা দেশে কি পরিমান রোগী আছে। এবং তাদের আইসোলেশন করলে সংক্রমণও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।

করোনাভাইরাস জীবাণুটি মানুষের শরীর পেলেই সে বেঁচে যায়। সুতরাং, এক মানুষ থেকে যখন অন্য মানুষে যায় সে নুতন করে আবার বংশ বৃদ্ধির সুযোগ পায়। সেখানে বাড়তে থাকে। এভাবেই সে আরেক মানুষের শরীরে গিয়ে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে। এবং এভাবেই বাংলাদেশে হয়তো স্থায়ীভাবে রয়ে যাবে করোনাভাইরাস।

ইদানিং চারদিকে মাস্কবিহীন মানুষের জটলা পেয়ে করোনাভাইরাস এক ধরনের মধুচন্দ্রিমা উপভোগ করছে বাংলাদেশে।

 

 

লেখক: মেডিসিন ও হার্ট স্পেশালিস্ট

https://drgolammorshed.com

 

 

 

 

 

 

পূর্বকোণ/আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট