চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

ইস্পাতের বৈশ্বিক চাহিদা ২.৩ শতাংশ কমার আভাস

অনলাইন ডেস্ক

২৫ অক্টোবর, ২০২২ | ৮:৪৭ অপরাহ্ণ

চলতি বছর ইস্পাতের বৈশ্বিক চাহিদা কমার পূর্বাভাস মিলেছে। নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীত, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর কঠোর মুদ্রানীতি, বিশ্বজুড়ে অব্যাহত সুদহার বৃদ্ধি, চীনের অর্থনীতিতে মন্দা ও লকডাউনসহ নানা কারণে ধাতুটির চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়ছে। ওয়ার্ল্ড স্টিল অ্যাসোসিয়েশন সম্প্রতি সর্ট রেঞ্চ আউটলুক শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ওয়ার্ল্ড স্টিল জানায়, গত বছর করোনা মহামারীর ধাক্কা সামলে বিশ্ব অর্থনীতিতে গতি ফিরতে শুরু করে। ফলে ইস্পাতের বৈশ্বিক চাহিদা ২ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়ে। কিন্তু চলতি বছর তা ২ দশমিক ৩ শতাংশ কমবে। চাহিদার পরিমাণ দাঁড়াবে ১৭৯ কোটি ৬৭ লাখ টনে। যদিও আগামী বছর চাহিদা আবারো ঘুরে দাঁড়াবে। ওই বছর ১৮১ কোটি ৪৭ লাখ টন ইস্পাতের চাহিদা তৈরি হতে পারে, যা চলতি বছরের তুলনায় ১ শতাংশ বেশি। অবকাঠামো খাতে ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা ওই বছর মোট চাহিদা বৃদ্ধিতে প্রধান প্রভাবকের ভূমিকা পালন করবে।

 

ওয়ার্ল্ড স্টিল ইকোনমিকস কমিটির চেয়ারম্যান ম্যাক্সিমো ভেডোয়া বলেন, নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতি, যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাসংকোচন নীতি, চীনে অর্থনৈতিক বিপর্যয় এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ঊর্ধ্বমুখী জ্বালানি ব্যয়, সুদের হার বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলাসহ নানা কারণে ইস্পাত ব্যবহারের খাতগুলো মন্থর হয়ে পড়েছে। এ কারণেই আমরা ইস্পাতের চাহিদা পূর্বাভাস কমাতে বাধ্য হয়েছি।

চলতি বছরের প্রথম আট মাসেই চীনে ইস্পাতের চাহিদা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। এ বছর দেশটিতে মোট চাহিদা ৪ শতাংশ কমার আশঙ্কা রয়েছে। তবে আগামী বছর নতুন নতুন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প এবং আবাসন খাতে পুনরুদ্ধার চাহিদাকে ঊর্ধ্বমুখী কিংবা স্থিতিশীল করতে পারে।

 

ওয়ার্ল্ড স্টিল জানায়, এ বছর উন্নত দেশগুলোয় ইস্পাতের চাহিদা বড় ধরনের বাধার মুখে পড়েছে। এর মূল কারণ মূল্যস্ফীতি ও সরবরাহ চেইনে অব্যাহত সংকট। তার ওপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তোলে।

বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর অর্থনীতি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। একদিকে যেমন আছে ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতির চাপ, অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান জ্বালানি সংকট। এসব কারণে এ অঞ্চলে এরই মধ্যে অনেক ইস্পাত কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিছু কারখানা আবার উৎপাদন পরিসর ছোট করেছে। চলতি বছর ইইউ অঞ্চলে ইস্পাতের চাহিদা ৩ দশমিক ৫ শতাংশ কমতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আগামী বছর এ অঞ্চলে চাহিদা নিম্নমুখী থাকবে।

 

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র কভিড-১৯ পরিস্থিতি থেকে বেশ ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। দেশটি বর্তমানে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অব্যাহত সুদের হার বাড়াচ্ছে। অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিস্থিতির কারণে দেশটির উৎপাদন খাত প্রবৃদ্ধির দিকেই এগোচ্ছে। এ বছর দেশটির অটোমোবাইল খাতে ইস্পাতের চাহিদা ব্যাপক বাড়বে। তবে অবকাঠামো নির্মাণ খাত এখনো নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে রয়েছে। জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাড়তে থাকায় এ খাতে ইস্পাতের চাহিদা বাড়বে। সব মিলিয়ে এ বছর দেশটিতে ইস্পাতের চাহিদা স্থিতিশীল থাকবে বলে জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড স্টিল। তথ্যসূত্র: বণিক বার্তা

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট