ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজারে খাতুনগঞ্জে এক মাসে আদার দাম কেজিতে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং দর বেশি থাকায় লোকসান আতঙ্কে আমদানিকারকরা পণ্যটির আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। তাই বাজারে আদার দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা।
ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের আড়তগুলোতে, বর্তমানে প্রতি কেজি চীনা আদা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা দামে। যা এক মাস আগে ১০০ টাকার কমে পাওয়া যেত।
হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির (কাঁচা মসলা পণ্য মার্কেট) সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিচ বলেন, বাজারে আদার অভাব নেই। চীনা আদা কিছুটা ঘাটতি থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে মিয়ানমারের আদা রয়েছে। পাইকারি বাজারে মানভেদে কেজি ৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। দেশীয় আদাও কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশীয় আদার মানও ভাল। তবুও মানুষ বেশি দামে চীনা আদা খাচ্ছে। এটা এক অদ্ভুত ব্যাপার। তবে একথা সত্য যে, চীনা আদার আকার একটু বড় এবং ধোয়া থাকে বলে দেখতে সুন্দর লাগে। কিন্তু মিয়ানমারের ভালো মানের ভালো মানের আদা এবং দেশীয় আদা ধোয়া না থাকায় সুন্দর কম। অন্যকোন পার্থক্য আছে বলে মনে হয় না।
খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আমদানি নির্ভরতাই বিভিন্ন সময় মসলা পণ্যের বাজারকে অস্থির করে তুলে। দেশের মোট চাহিদার এক তৃতীয়াংশেরও কম আদা উৎপাদন হয়ে দেশে। তাই কখনো আমদানি কমে বাজার অস্থির হয়ে উঠে। আবার কখনো অতিরিক্ত আমদানিতে আমদানিকারকরা লোকসান গুনে। তবে নতুন মৌসুমের আদা বাজারে আসতে শুরু হওয়ায় আগামী দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে পণ্যটির দাম কমে আসবে।
ব্যবসায়ীরা জানান, একদিকে ডলারের দাম বৃদ্ধি ও বিশ্ববাজারে বুকিং দর বেড়েছে। এর মধ্যে মসলা পণ্য আমদানিতে শতভাগ এলসি মার্জিন দিতে হওয়ায় আমদানি খরচ বেড়েছে। এছাড়া গত দুই-তিন মাস ধরে চীন থেকে আমদানি করা আদার মান খারাপ ছিল। যে কারণে বিক্রির ধীর গতি ও মান খারাপ থাকায় বেশির ভাগ আদা নষ্ট হয়ে আমদানিকারকদের লোকসান হয়।
এরপর লোকসানের ঝুঁকিতে পণ্যটির আমদানি কমিয়ে দিলে গত এক মাস ধরে বাজারে পণ্যটির দাম বাড়তে শুরু করে। ভর মৌসুমে দেশের বিভিন্ন মোকাম থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ গাড়ি আদা প্রবেশ করে খাতুনগঞ্জে। তবে নতুন মৌসুম শুরু হওয়ায় গত দুই-তিন ধরে ৫ থেকে ৭ গাড়ি দেশি আদা বাজারে আসছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে প্রতিবছর আদার চাহিদা প্রায় ২ লাখ ৩৫ হাজার মেট্টিক টন। এর মধ্যে দেশে উৎপাদন হয় মাত্র ৮০ হাজার টন। বাকি আদা আমদানি হয় চীন, মিয়ানমার এবং ভারত থেকে।
পূর্বকোণ/আর