চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বাজেটের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও খাদ্য নিরাপত্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক 

২২ এপ্রিল, ২০২১ | ১২:০৬ অপরাহ্ণ

আসন্ন ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্য সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোসহ মেডিকেল সরঞ্জামাদি আমদানি-রপ্তানি ও ক্রয়-বিক্রয়ের উপর সব ধরণের কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছেন বাংলাদেশ মিয়ানমার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি এস.এম. নুরুল হক। পূর্বকোণের সঙ্গে বাজেট সংক্রান্ত আলোচনায় তিনি এই প্রস্তাব করেন।

দক্ষ ও প্রশিক্ষিত ডাক্তার-নার্স-হাসপাতাল-ঔষধ সামগ্রী ইত্যাদি সেবাসমূহে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নজর প্রদান ও উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ দেয়ার কথা উল্লেখ করে বিজিএমইএ’র প্রাক্তন প্রথম সহ-সভাপতি ও চিটাগাং চেম্বারের প্রাক্তন সিনিয়র সহ-সভাপতি এস.এম. নুরুল হক দাবি করেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে আগামী বাজেটর মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত দেশের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, শিক্ষার স্থবিরতা দূরীকরণ ও খাদ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। দেশের মানুষ খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে বাস করছে উল্লেখ করে নুরুল হক বলেন, খাদ্য উৎপাদনের কৃষকদের উৎসাহিত করা, সার কীটনাশকের দাম কমানো, আমদানি শুল্ক বাধা দুর করাসহ কৃষি সরঞ্জামাদিতে ভর্তূর্কি দিয়ে কৃষকদের জন্য একটি সমন্বিত প্রকল্প হাতে নেয়া উচিত।

এছাড়াও এনআইডি দিয়ে নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে এবং দুঃস্থ অসহায়দের জন্য ভিজিএফ কার্ড-কে আরো জনমুখী ও স্বচ্ছতার সাথে পরিচালনা করতে হবে।  শিক্ষা ব্যবস্থার বিপর্যয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনায় শিক্ষার্থীদের মানসিক ও বুদ্ধিভিত্তিক বিকাশে প্রচন্ড নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। একদিকে শিক্ষার অনিশ্চয়তা অন্যদিকে সামাজিক অবক্ষয়ের ছোবল ছাত্র-যুবা শ্রেণিকে বিপথগামী করছে। বিদ্যমান অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম সহজলভ্য না হওয়াতে অনেক নিম্নবিত্তের সন্তানেরা এই শিক্ষায় ব্যবহারিক সুবিধা পাচ্ছে না। তাদের জন্য বিকল্প পন্থা বের করার একটি উদ্যোগ এ বাজেটে থাকা জরুরী।

তিনি আরো বলেন, কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিভিন্ন দেশের লক-ডাউন প্রেক্ষিতে স্থবির হয়ে পড়ছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। রপ্তানি বাণিজ্যে বিশেষ করে তৈরি পোশাক ও চামড়া শিল্পে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বর্তমান নাজুক পরিস্থিতিতে ইতিপূর্বে গৃহীত প্রণোদনা সহায়তার ঋণ আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। বরঞ্চ জাতীয় অর্থনীতির স্বার্থে শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য সুদবিহীন প্রণোদনা সহায়তা বৃদ্ধি করা সময়ের দাবী। এছাড়া সরকার প্রদত্ত প্রণোদনা সহায়তার ঋণ দশ বছর ব্লক একাউন্টে রেখে সুদবিহীন কিস্তিতে পরিশোধের ব্যবস্থা করা উচিত।

বাজেট প্রসঙ্গে এস.এম. নুরুল হক আরো বলেন, শুধুমাত্র বিভিন্ন অঞ্চলকে অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘোষণা করলেই হবে না। এসকল অর্থনৈতিক অঞ্চলকে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করতে হবে এবং বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করতে হবে। অধিকন্তু চলমান অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট উন্নয়নের ব্যয় বৃদ্ধি না হওয়ার জন্য সরঞ্জামাদি ও কাঁচামাল আমদানিতে কর বৃদ্ধি না করার প্রস্তাব করছি।

জাতীয় অর্থনীতির অগ্রগতির লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্পকে অত্যন্ত স্বল্প সুদে বিশেষ ঋণ সহায়তা প্রদান, ভ্যাট-ট্যাক্স যথাসম্ভব হ্রাসকরণ এবং করোনাকালীন সকল সুদ মওকুফ করার জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখার দাবি করেন এস এম নুরুল হক।

দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ‘হাব’ চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেলসহ অন্যান্য জনগুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন ত্বরান্বিত হলে সিঙ্গাপুরের মতই বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে চট্টগ্রাম। সেক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দরের যুগোপযোগী সক্ষমতা বৃদ্ধি, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল, বে-টার্মিনালসহ সকল প্রকল্প দ্রুত উন্নয়ন করে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু করতে হবে। এ লক্ষ্যে বাজেটে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা থাকা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন এস.এম. নুরুল হক।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট