বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে, দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। এছাড়া মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে শিগগিরই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৯ সদস্য বিশিষ্ট ‘বাজার মূল্য পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ’ বিষয়ক স্থায়ী কমিটি কাজ শুরু করবে।

রবিবার (১১ এপ্রিল) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘পবিত্র রমজান মাসে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন সংশ্লিষ্টরা।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘রোজা আসলেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ার প্রবণতা পরিলক্ষিত হয় এবং অনেক সময় পণ্যের সাপ্লাই ও চাহিদার সমন্বয় থাকে না। পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথেষ্ট সচেতনভাবে কাজ করছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা যেন সুযোগ নিতে না পারে সে ব্যাপারে বিএসটিআইসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও তৎপর হতে হবে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যবসায়ী সমাজকে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসার আমন্ত্রণ এবং ব্যবসায়ীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণে দেশবাসীকে বাঁচাতে সরকার আগামী ১ সপ্তাহের জন্য লকডাউনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এবং সকলকে তা মানতে হবে।’

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘এটি একটি ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা, যার মাধ্যমে জনগণকে আসন্ন রমজান মাসে সুফল দেয়া যাবে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ইতোমধ্যে ৯ সদস্য বিশিষ্ট ‘বাজার মূল্য পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ’ বিষয়ক স্থায়ী কমিটি গঠন করেছে। যারা শিগগিরই তাদের কাজ শুরু করবে।

ওয়েবিনারের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাবের পাশাপাশি অতিরিক্ত মজুতকরণের মাধ্যমে বাজারে পণ্যদ্রব্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি, অপর্যাপ্ত ও সমন্বয়হীন বাজার মনিটরিং, পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি এবং অতিরিক্ত পরিবহন ব্যয় প্রভৃতি কারণে প্রতিবছর পবিত্র রমজান মাসের পূর্বে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি জনসাধারণের মাঝে উদ্বেগ সৃষ্টি করে।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘মহামারির ফলে গত বছরের শেষ ৯ মাসে আয় কমে যাওয়া ও কর্মচ্যুতির ফলে অধিকাংশ মানুষ ঋণ করে এবং সঞ্চয় ভেঙ্গে জীবন নির্বাহ করেছেন। এ পরিস্থিতিতে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেলে দরিদ্ররা নিদারুণ কষ্টে পড়বে এবং খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা আরও প্রকট আকার ধারণ করবে।’

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আসন্ন রমজানে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল ও জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার লক্ষ্যে কিছু প্রস্তাব রাখেন। যেমন, রমজানে আমদানি নির্ভর ভোগ্যপণ্য বন্দর থেকে কাস্টমস হাউজ ও বন্দর কর্তৃপক্ষের সহায়তায় দ্রুত খালাসকরণ, পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি ও যানজট নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, দেশের সকল বাজারে দক্ষ ও পর্যাপ্ত বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে নিয়মিত ন্যায্যমূল্য তালিকা হালনাগাদ করা, মূল্য তালিকা কার্যকর করা এবং  অতি দরিদ্রদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নগদ অর্থ প্রদান প্রভৃতি প্রস্তাব করেন।

পূর্বকোণ/মামুন/পারভেজ