করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সরকার ঘোষিত এক সপ্তাহের লকডাউনে চট্টগ্রাম বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রমে কোন ব্যত্যয় ঘটেনি। আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু রাখার মাধ্যমে দেশের সাপ্লাই চেইন বজায় রাখতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু রাখা হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম। করোনার মহামারির বাড়বাড়ন্তে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও শিল্প কারখানার উৎপাদিত পণ্য ও কাঁচামাল সরবরাহ ঠিক রাখার কাজে নিয়োজিত রাখা হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

বন্দর সূত্রের তথ্যমতে, লকউাউনের প্রথম দিন গত ৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে খালাস হয়েছে ৩ হাজার ১৬৯ টিইইউস কনটেইনার পণ্য। পরবর্তী ৬ ও ৭ এপ্রিল খালাস হয় ৪ হাজার ১৮৪ টিইইউস ও ৩ হাজার ৮৭৯ টিইইউস কনটেইনার পণ্য। যা লকডাউনের পূর্বের দিনগুলোর কনটেইনার খালাসের পরিমাণের সমান।

বন্দরের চলমাল কার্যক্রম প্রসঙ্গে বন্দর সচিব ওমর ফারুক পূর্বকোণকে বলেন, করোনার মহামারির প্রথম ধাপ থেকেই বন্দরের অভ্যন্তরে প্রবেশের ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। সেটি এখনো চালু রয়েছে এবং চলতি লকডাউনে তা কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে। বন্দরের কাজে একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রয়েছেন। স্বাস্থ্যবিধি অমান্যকারীদের জরিমানা করে তিনি সতর্ক করেন। এছাড়া বন্দরের গেটগুলোতে সুরক্ষা সামগ্রী নিশ্চিত করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, করোনার মাহামারিতে দেশের সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখতে বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। আমদানিকারক, শিপিং এজেন্টস ও সিএন্ডএফ এজেন্টস এর প্রতিনিধিগণ আমদানি-রপ্তানি কাজে বন্দরে প্রবেশ করছে। করোনাতে তাদের কাজের কোন সমস্যা হচ্ছে না।

এদিকে লকডাউনের মধ্যেও রমজান মাসকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা রমজানের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেমন ছোলা, ডাল, খেজুর, চিনি ইত্যাদি আমদানি করছে। লকডাউনেও প্রভাব পরেনি উদ্ভিদজাত পণ্য আমদানি-রপ্তানি কাজে।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন পূর্বকোণকে বলেন, চাল, ডাল, পেঁয়াজ, ছোলার মত গুরুত্বপূর্ণ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির অনুমতি ও ছাড়পত্র এই দপ্তর থেকে নিতে হয় বলে মহামারির মধ্যেও সব কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকে। ভাল খবর হলো বর্তমানে উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের কার্যক্রম শতভাগ অনলাইন হওয়ায় ব্যবসায়ীদের অফিসে আসতে হয় না। অনলাইন থেকেই আমদানি অনুমতি, ছাড়পত্র ও সনদ নিতে পারে। ফলে করোনা সংক্রামন বাড়ার সুযোগ থাকছে না।

তিনি আরো জানান, লকউাউনের প্রথম দিন গত ৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র থেকে ছাড়পত্র ইস্যু হয়েছে ১৩৯টি, আমদানি অনুমতি ইস্যু হয়েছে ২১টি এবং উদ্ভিদ স্বাস্থ্যসনদ ইস্যু হয়েছে ২৬টি। পরদিন ৬ এপ্রিল ছাড়পত্র ইস্যু হয়েছে ১৪০টি, আমদানি অনুমতি ইস্যু হয়েছে ১১টি এবং উদ্ভিদ স্বাস্থ্য সনদ ইস্যু হয়েছে ১টি এবং ৭ এপ্রিল ছাড়পত্র ইস্যু হয়েছে ১৩৯টি, আমদানি অনুমতি ইস্যু হয়েছে ১০টি এবং উদ্ভিদ স্বাস্থ্য সনদ ইস্যু হয়েছে ২১টি।

পূর্বকোণ/এএ