চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

জুনের মধ্যে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা না তুললেই ১০শতাংশ কর

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ জুন, ২০১৯ | ১০:৪১ অপরাহ্ণ

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেটে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর উৎসে কর ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন। এ নিয়ে গ্রাহকের মনে তৈরি হয়েছে নানা বিভ্রান্তি। এত দিন যারা ৫ শতাংশ উৎসে কর দিয়ে আসছেন, তাদের জন্য কি এ হার বহাল থাকবে? নাকি নতুন ও পুরোনো সবার জন্যই আগামী ১ জুলাই থেকে ১০ শতাংশ উৎসে কর চালু হবে? যাঁরা মুনাফার টাকা তোলেননি, তাদের ক্ষেত্রেই বা কী নিয়ম হবে?
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের পরিচালক আবু তালেব বলেন, বাজেট পাস হওয়ার আগে বর্তমানে যে নিয়ম আছে, সে নিয়মই থাকবে। তবে যারা ৫ শতাংশ উৎসে কর দিয়েই মুনাফার টাকা তুলতে চান, তাদের উচিত হবে ৩০ জুনের মধ্যেই তা তুলে ফেলা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা বলছেন, ১০ শতাংশ উৎসে কর ১ জুলাই থেকেই কার্যকর হবে। যারা এখনো মুনাফার টাকা তোলেননি ও যারা ৫ শতাংশ উৎসে কর দিয়েই মুনাফার টাকা তুলতে চান, তাদের উচিত হবে ৩০ জুনের মধ্যেই তা তুলে ফেলা। সেক্ষেত্রে তাদের বাড়তি কর দিতে হবে না।
উৎসে কর দ্বিগুণ করার কারণে সমাজের সীমিত আয় ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির সঞ্চয়পত্র গ্রাহকদের আয় কমে যাবে। যেমন, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের কারণে কোনো গ্রাহক যদি মাসে ৫ হাজার টাকা মুনাফা পেয়ে থাকেন, ১ জুলাইয়ের পর থেকে তিনি ৫ হাজার থেকে ৫০০ টাকা কম পাবেন। ব্যাংকের কাছ থেকে এ টাকা বুঝে নেবে এনবিআর।
সঞ্চয়পত্রকে সরকার প্রতিবছরই বাজেটের ঘাটতি অর্থায়ন পূরণের অন্যতম উপায় হিসেবে বিবেচনা করে। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ২৬ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্য থাকলেও পরে তা বাড়িয়ে ৪৫ হাজার কোটি টাকা করা হয়।
আগামী অর্থবছরের জন্য উপস্থাপিত বাজেট বক্তৃতায় সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার বা উৎসে কর নিয়ে অর্থমন্ত্রী কোনো কথা বলেননি। তবে সঞ্চয়পত্রের কেনাবেচার ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ যে জাতীয় সঞ্চয় স্কিম অনলাইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করছে, তাতে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি, মুনাফা ও নগদায়নের তথ্য পাওয়া সম্ভব হবে।
নতুন আরও চারটি সম্ভাবনার কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। এগুলো হচ্ছে, জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে সঞ্চয়পত্র কেনার ঊর্ধ্বসীমা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, গ্রাহকের আসল ও মুনাফা ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিশোধ করা সম্ভব হবে, সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত হবে এবং এ খাতে সরকারের সুদ ব্যয় কমে আসবে।
প্রস্তাবিত বাজেটের পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয়ের অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যত বেশি সঞ্চয়পত্র বিক্রি, সরকারের সুদ ব্যয়ও তত বেশি। আগামী অর্থবছরের জন্য সঞ্চয়পত্রের সুদ ব্যয় বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের সুদ বাবদ বরাদ্দ রয়েছে ২৯ হাজার ৮১০ কোটি টাকা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট