চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ

মূলধন বেড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

৯ জানুয়ারি, ২০২১ | ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ

দেশের পুঁজিবাজারে গত এক সপ্তাহে বাজার মূলধন বেড়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা। সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজারে বড় উত্থানের ফলে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে দুই হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি দাঁড়িয়েছে। এতে এক সপ্তাহেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক চার শতাংশের উপরে বেড়ে যায়।

তবে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এই মুহূর্তে সতর্কতার সাথে বিনিয়োগের বিকল্প নেই। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেনশেষে ডিএসই’র বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৭০ হাজার ২৭০ কোটি টাকা। যা এর আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল চার লাখ ৪৮ হাজার ২৩০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ডিএসই’র বাজার মূলধন বেড়েছে ২২ হাজার ৪০ কোটি টাকা।

বাজার মূলধন বৃদ্ধির অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মেলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে। এই সময়ে বিনিয়োগকারীরাও বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। লেনদেন প্রতিদিন রেকর্ড সৃষ্টি করছে। গত সপ্তাহে প্রধান মূল্য সূচকরে পাশাপাশি বড় উত্থান হয়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকের। গত সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে ৮৪ দশমিক ১১ পয়েন্ট বা চার দশমিক ২৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৮৭ দশমিক ২৩ পয়েন্ট বা চার দশমিক ৬৫ শতাংশ।

গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনে ‘এ’ গ্রুপ বা ভালো কোম্পানির অবদান ছিল ৭৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এছাড়া ‘বি’ গ্রুপের ১৮ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ, ‘জেড’ গ্রুপের দশমিক ৭১ শতাংশ এবং ‘এন’ গ্রুপের ৬ দশমিক ৪২ শতাংশ অবদান ছিল।

গেল সপ্তাহে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে, বেক্সিমকো, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, আইএফআইসি ব্যাংক, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, রবি, লাফার্জহোলসিম, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল, পাওয়ার গ্রিড, ন্যাশনাল ব্যাংক এবং এক্টিভ ফাইন।

তবে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেয়ার বাজারের উত্থান বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় ধরনের ইতিবাচক খবর। তবুও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হবে সতর্কতার সাথে। জানতে হবে ভালো শেয়ার কোনগুলো। ভালো শেয়ারে বিনিয়োগ করে বড় অংকের মুনাফা করা না গেলেও একেবারে পুঁজি হারানোর ভয় কম। এ কারণে মন্দ শেয়ারে বিনিয়োগ না করে ভালো শেয়ারে বিনিয়োগ করাই উত্তম।

ভাল শেয়ার চেনার উপায় : ভালো শেয়ার বাছাই করার আগে বিনিয়োগকারীদের জানতে হবে কোম্পানির অতীত ইতিহাস, এর সঙ্গে কারা জড়িত, তাদের ব্যবসায়িক সততা, দক্ষতা, কোম্পানি কী ধরনের পণ্য উৎপাদন করে, সেগুলোর বাজার চাহিদা কেমন, কোম্পানির আর্থিক ভিত্তি কেমন, ঋণ থাকলে মূলধনের কত অংশ, কোম্পানির আয়-ব্যয়, শেয়ারপ্রতি আয়, শেয়ারপ্রতি প্রকৃত সম্পদ, সম্পদের মূল্য, বছরশেষে তারা কেমন লভ্যাংশ দেয়, লভ্যাংশ দেয়ার অতীত রেকর্ড এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে সহজেই ভালো কোম্পানির শেয়ার বাছাই করা সম্ভব।

কোন কোম্পানি আর্থিকভাবে কত বেশি শক্তিশালী তা কোম্পানির মৌলভিত্তি দিয়ে জানা যাবে। যে কোম্পানির শেয়ার কেনা হবে, তার বর্তমান আয়, বার্ষিক আয়, কোম্পানির নতুন কোনো পরিবর্তন আসছে কিনা, কোম্পানির পণ্য সরবরাহ কেমন, নেতৃত্বে কারা আছেন, কোম্পনির শেয়ারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশ গ্রহণ কেমন এসব বিষয় পর্যালোচনা করতে হবে।

সাধারণত একটি শেয়ারের আরনিং পার শেয়ার (ইপিএস) বা প্রতি শেয়ারের বিপরীতে আয় ১০ গুণ বেশি পর্যন্ত তার বাজারমূল্য হতে পারে। এর বেশি হলে তাকে অতিমূল্যায়িত ধরা হয়। যেমন কোনো শেয়ারের ইপিএস ১০ টাকা হলে ওই শেয়ারের বাজারমূল্য ১০০ টাকা হতে পারে। এর বেশি হলে তা অতিমূল্যায়িত হিসেবেই বিবেচিত হবে। তবে কোম্পানি বড় ধরনের সম্প্রসারণে গেলে, মুনাফা ঘোষণার আগে, রাইট বা বোনাস শেয়ার দেয়ার ক্ষেত্রে এই ব্যাকরণ মিলবে না। কেনার সময়ই লাভ করতে হবে। কম দামে ভাল শেয়ার কিনতে না পারলে বিক্রি করে লাভ করা সম্ভব নয়।

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট