চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

নিখোঁজ গ্রাহকের তালিকা তৈরির নির্দেশ বিদ্যুৎ বিভাগের

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৯ মে, ২০১৯ | ৬:৫৪ অপরাহ্ণ

নিখোঁজ গ্রাহকদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকল বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিতেই এমন নিখোঁজ গ্রাহক রয়েছেন। কোম্পানিগুলো তাদের বিতরণ অঞ্চলের প্রধানদের নিখোঁজ গ্রাহকদের তালিকা প্রণয়নের কথা বলেছে।
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, ‘অনেক সময় বস্তি বা কোনও বাড়ি থেকে কাউকে উচ্ছেদ করা হলে তিনি আর বকেয়া বিলগুলো দিয়ে যান না। আমাদেরও এমন ৮৪ জন গ্রাহক রয়েছেন। যারা হাতিরঝিলে কাজের সময় উচ্ছেদ হয়েছিলেন, তাদের আর খুঁজে পাইনি। কিন্তু তাদের হিসাবগুলো বন্ধও করতে পারছি না।’ তিনি বলেন, ‘অন্য বিতরণ কোম্পানিকেও সরকার এমন নিখোঁজ বিদ্যুৎ গ্রাহকদের তালিকা করতে বলেছে।’

বিদ্যুৎ বিভাগ ও বিতরণ কোম্পানিগুলোর সূত্র জানায়, এখন বিল দেয়া ও নেয়ার পুরো প্রক্রিয়া করা হচ্ছে কম্পিউটারের মাধ্যমে। এতে কোন গ্রাহক এক মাস বিল না দিলেই তা বের করা সম্ভব। এখানে কোন কোন গ্রাহক রয়েছেন, যাদের নামে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল। একসময়ে তারা সেই নামে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছেন। এরপর কোন একদিন থেকে তারা আর বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন না, তাই বিলও দিচ্ছেন না। বিতরণ কোম্পানির প্রতিনিধিরা এসব গ্রাহকের দেয়া ঠিকানায় হাজির হয়ে তাদের খুঁজে পাচ্ছেন না। তারা কোথায় গেছেন, কেউ বলতেও পারছেন না। এসব হিসাব গ্রাহকরা নিজে থেকে বন্ধ করার আবেদনও না করায় বন্ধ করা যাচ্ছে না।
বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির দায়িত্বশীলরা বলছেন, অনেক বছর ধরে এসব গ্রাহকের হিসাব বয়ে নিয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাদের। মাঝে মাঝে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটছে। এ বিষয়ে তারা সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে বিদ্যুৎ বিভাগকে অনুরোধ করেছে। সারাদেশে বছরের পর বছর ধরে কিছু গ্রাহকের বিল বকেয়া থাকায় এই নির্দেশ দেয়া হলো।
বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, বড় রকমের বকেয়া রয়ে গেছে, এমন কোন গ্রাহক থাকলে তাকে খুঁজে বের করার পক্ষে বিদ্যুৎ বিভাগ। তবে কোন ক্ষেত্রে যদি ছোটখাটো বকেয়া থাকে, সেক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিভাগ তাদের কাছে পাওনা বিল মওকুফ করে দেয়ার পক্ষে। তিনি জানান, এখন পুরো বিদ্যুৎ খাতকে একটি সুনির্দিষ্ট পদ্ধতির মধ্যে আনতে চায় সরকার। ভবিষ্যতে শতভাগ বিদ্যুৎ প্রিপেইড মিটারে বিতরণ করা হবে। ফলে এর আগে ছোটখাটো যেকোন সমস্যার সমাধান করা হবে।
ঢাকার আরেক বিতরণ কোম্পানি ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহিদ সারোয়ার বলেন, ‘ডেসকোতেও এমন নিখোঁজ গ্রাহক রয়েছেন। তবে, তাদের খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে নিখোঁজ এসব গ্রাহকের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করছেন তারা। তালিকা শেষ হলেই জানা যাবে তাদের কতজন এমন গ্রাহক রয়েছেন।’
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)-এর একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আরইবি সারাদেশে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে বিতরণ কাজ পরিচালনা করে থাকে। এ ধরনের তালিকা প্রতিটি সমিতির কাছে আলাদাভাবে রয়েছে। কিন্তু প্রধান কার্যালয়ে এখনও সব হিসাব এক করা যায়নি। আরইবিতে এমন গ্রাহকের সংখ্যা একটু বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, সবচেয়ে বেশি এলাকাজুড়ে বিদ্যুৎ বিতরণ করে আরইবি। গ্রামের মানুষ এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় চলে গেলে মিটারটি বন্ধ না করেই চলে যান।’ তারা বিল পরিশোধ করেন না বলেও তিনি জানান।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট