চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বাঁচিয়েছিল এক চিরহরিৎ অরণ্য ফেলে দেয়া কমলায় ‘সবুজ মিরাকল’

নাসরিন আকতার

২৪ অক্টোবর, ২০১৯ | ১:২৪ পূর্বাহ্ণ

একটি বনের মধ্যে আবর্জনা দিয়ে ভরে রাখা পরিবেশের জন্য সহায়ক কোনও সমাধান হিসেবে ভাবা হয়না, কিন্তু সেটাই ঘটেছে কোস্টারিকাতে।

গত সংখ্যার পর)
মাটির নমুনা পরীক্ষায় দেখা গেছে, কমলার আবর্জনা ফেলে দেয়ার দুইবছর পরই জমিটি উল্লেখযোগ্য-ভাবে
সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছিল।

আজকের দিনে জায়গাটি খুবই স্বাস্থ্যবান তরতাজা অল্পবয়সী
বৃক্ষের বনে পরিপূর্ণ, সেখানে যে জায়গাগুলো এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়নি সেখানে সেই এক শতাব্দী বা তারও বেশি সময় ধরে সেই পুরনো ক্লান্ত চারণভূমি বিরাজ করছে-
এমনটাই বলেন জ্যানযেন।

কিন্তু এটা কিভাবে কাজ হলো?

প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী টিমোথি ট্রিওয়ের যিনি ২০১৩ সালের সফরের
নেতৃত্বে ছিলেন, তিনি বলেন, “এই ধরনের প্রক্রিয়া একইসাথে অনেক সমস্যার সমাধান এনে দিতে পারে ঘাস এবং আগাছা নিংড়ে এবং মাটিকে সমৃদ্ধকরণে পারে দেশীয় গাছগুলি যার কিনা একটা সময় পা রাখার জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছিল তারাও তুলনামূলক অনেক অনুকূল পরিবেশে নতুনভাবে শুরুর সুযোগ পেল।
এই প্রক্রিয়াটি বৈজ্ঞানিক

দৃষ্টিকোণ থেকে সহজ ও সস্তা ছিল।
“মূলনীতি মারাত্মক সহজ : একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ বর্জ্য প্রবাহ-ধারা খুঁজে বের করতে হবে ,
ডি-গ্রেডেড জমি খুঁজে বরে করতে হবে যেখানে পুনর্বনায়ন থেমে আছে ।
বিজ্ঞানী ট্রিওয়ের বলেন, ক্রান্তীয় বন পুনরুদ্ধার প্রায়শই ব্যয়বহুল। কৃষি এবং অন্যান্য খাতগুলো সেখানে প্রায়ই বিশাল পরিমাণে পুষ্টি সমৃদ্ধ উৎপাদন দেয় অথবা অনেক ক্ষেত্রে উচ্চ ব্যয়সাপেক্ষে প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রয়োজন হয়। যখন এই অভিজ্ঞতার উত্তরাধিকারের প্রশ্ন আসে, জ্যানযেন এর কণ্ঠস্বর আর ইতিবাচক সুর ছিলনা।
যেকোনো প্রকল্প টেকনিক্যালি প্রচ- ভালো হতে পারে কিন্তু এইসব বা সেইসব সামাজিক উপাদানের ইচ্ছায় ধ্বংস হয়ে গেছে, বলেন জ্যানযেন।
প্রকৃতির টেকনিক্যাল বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা অনেকসময়ই সমাধানযোগ্য তবে যদি তার সমাধান করতে সুযোগ দেয়া হয়।
পুনর্বনায়নের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হুলো একটা সমাজের উপস্থিতি যারা চায় যে এর পুনর্বনায়ন হোক। মনে রাখতে হবে, একটা কারণে এসব কিছুই বাদ দিতে হয়েছিল।
বনের পুনর্জীবনের জন্য এইসব কারণ বাতিল করতে হবে। এই বিষয়ে বিবিসির পক্ষ থেকো টিকো ফ্রুট কোম্পানির সাথে প্রতিক্রিয়ার জন্য যোগাযোগ করা হলে তারা কোনও সাড়া দেয়নি।
মূল মামলায় এই কোম্পানি আরেকটি কারণ তুলে ধরে গুয়ানকাস্তে চুক্তির বিরুদ্ধে- তাদের বিবেচনায় এটা অন্যায্য যে, ডেল ওরো কে কোনে বর্জ্য নিষ্কাশন কেন্দ্র নির্মাণ করতে বাধ্য করা হয়নি যেমনটা করা হয়েছিল নব্বইয়ের মাঝামাঝিতে টিকোফ্রুটকে, তাদের কমলার বর্জ্য নদী দূষণ করছে এই অভিযোগে।
টিকোফ্রুট আরও দাবি করে যে, ডেলওরো কোম্পানির বর্জ্য মাটি এবং গুয়ানাকাস্তের নিকটবর্তী নদীকে বিষাক্ত করে তুলছে । পাশাপাশি সাইট্রাস পোকার জন্য ভয়াবহ প্রজনন ক্ষেত্রে তৈরি করছে তবে এমন অভিযোগ খারিজ করে দেন জ্যানযেন।
মামলা-মকদ্দমা
একজন বিশেষজ্ঞের নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিযোগী টিকোফ্রুট কোম্পানির দ্বারা মামলা করা হয়েছিল, জানান ড্যানিয়েল জ্যানযেন। হতাশা ট্রুরে কণ্ঠেও। “একজন বিজ্ঞানী হিসেবে এটা হতাশাজনক যখন বড় বড় চ্যালেঞ্জের সম্ভাবনাময় সমাধানগুলোকে সঙ্কুচিত করা, ছেঁটে ফেলা কিংবা এড়িয়ে যাওয়া হয় অজানা উদ্বেগের অজুহাতে, বিশেষ করে যখন এইসব ভুল তথ্যসমৃদ্ধ কর্পোরেট স্বার্থসিদ্ধি থেকে উঠে আসে। তারপরও এই বিজ্ঞানী এই প্রকল্পের সীমিত সাফল্যের মাঝেও সান্ত¡না খুঁজে নিচ্ছেন। ট্রিওয়েয়ার উপসংহার টানেন এই বলে যে, এই ব্যবস্থাটির নূন্যতম প্রক্রিয়াজাত হওয়ার আশাবাদের জন্য সেখানে প্রথম যে নীতিগত কারণ উল্লেখ করা যায় তা হল- গ্রীষ্মম-লীয় বন পুনরুদ্ধার করতে হলে
কৃষিজাত বর্জ্য ব্যবহার করা যেতে পারে। (শেষ) [সূত্র : ডয়চে ভেলে]

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট