চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

দেশে ২৮ শতাংশ মৃত্যুই পরিবেশ দূষণজনিত কারণে

মরিয়ম আকতার

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১:১৫ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দূষণ ও পরিবেশগত ঝুঁকির কারণে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তার একটি বাংলাদেশ। বাংলাদেশে প্রতিবছর যত মানুষের মৃত্যু হয় তার ২৮ শতাংশই মারা যায় পরিবেশ দূষণজনিত অসুখ-বিসুখে।

(গত সংখ্যার পর)
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাবার, পানি আর বায়ু ছাড়া জীবজগতের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। যদিও খাবার বা পানি ছাড়া আমরা বেশ কিছুদিন বেঁচে থাকতে পারি। কিন্তু বায়ু ছাড়া দিন, ঘণ্টা দূরে থাক; আমরা সর্বোচ্চ তিন মিনিট পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারি। ফলে নির্মল বায়ুসেবন প্রতিমুহূর্তের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। অথচ আমাদের চারপাশের পরিবেশের এই বিপর্যয়ের একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে বায়ু দূষণ। যার ভয়াবহতা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
প্রভাবশালী চিকিৎসা জার্নাল ল্যানসেট জুন, ২০১৬ সালের একটি প্রতিবেদন বলেছে, বাংলাদেশে ২২ শতাংশ মানুষ বাতাসে ভাসমান বস্তুকণা ও ৩০ শতাংশ মানুষ জ্বালানি-সংশ্লিষ্ট দূষণের শিকার। যা একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন করতে যাচ্ছে। বিশ্ব পরিবেশের যেমন দ্রুত অবনতি হচ্ছে, তেমনি বাংলাদেশে গত কয়েক দশকে এ অবনতি হয়েছে আরও দ্রুত। বাংলাদেশে ১৯৯৫ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন পাস হয়েছে। কিন্তু জনবিস্ফোরণ, বনাঞ্চলের অভাব ও ঘাটতি এবং শিল্প ও পরিবহন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার অভাবের দরুন দেশের পরিবেশ এক জটিল অবস্থার দিকে পৌঁছতে যাচ্ছে।
বায়ু দূষণ

বায়ু দূষণের কারণে বিশ্বে প্রতিবছর ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। পৃথিবীর ৯১ শতাংশ মানুষ এমন জায়গায় বসবাস করে যেখানে বায়ু দূষণের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে বেশি। বিশ্বজুড়ে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন দূষিত বায়ু সেবন করে। ২০১৭’র ১৫ ফেব্রুয়ারি বৈশ্বিক বায়ু পরিস্থিতি-২০১৭ নামক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণের

ক্রমমাত্রায় আমাদের ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। এ প্রতিবেদন বলছে, গত ২৫ বছরে বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ভারত ও বাংলাদেশে যদিও চীন এ তালিকায় আগে প্রথম অবস্থানে ছিল। আমাদের দেশে বায়ুদূষণের বড় কারণ হচ্ছে, যাচ্ছেতাইভাবে উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করা। কলকারখানার কালো ধোঁয়া, নগরায়নের কাজ সময়মতো শেষ না হওয়া এবং যথেষ্ট সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে এমন উন্নয়ন কাজ পরিচালনার কারণে বাতাস ভয়াবহভাবে দূষিত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট এবং ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস এ্যান্ড ইভালুয়েশনের যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে রাজধানী ঢাকার বাতাসে সবচেয়ে ক্ষতিকর পদার্থ পিএম ২.৫ এর মাত্রা মারাত্মকভাবে বেড়ে চলেছে। প্রতিবেদনে বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশে বছরে ১ লাখ ২২ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে বলে বলা হয়েছে।
আর বায়ুদূষণের কারণে শিশুমৃত্যুর হারের দিক থেকে পাকিস্তানের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান।
(আগামী সংখ্যায় সমাপ্য)

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট