চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

দেশে ২৮ শতাংশ মৃত্যুই পরিবেশ দূষণজনিত কারণে

মরিয়ম আকতার

১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১:০৫ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দূষণ ও পরিবেশগত ঝুঁকির কারণে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তার একটি বাংলাদেশ। বাংলাদেশে প্রতিবছর যত মানুষের মৃত্যু হয় তার ২৮ শতাংশই মারা যায় পরিবেশ দূষণজনিত অসুখ-বিসুখে।
সারাবিশ্বে এ ধরনের মৃত্যুর হার ১৬ শতাংশ। ২০১৫ সালের এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিশ্বব্যাংক বলেছে, শহরাঞ্চলে এই দূষণের মাত্রা উদ্বেগজনক পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। দূষণের কারণে ২০১৫ সালে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

পরিবেশ দূষিত হওয়ার এই মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। শিল্প বর্জ্য, মেডিক্যাল বর্জ্য, প্রাণিজ এবং অন্যান্য বর্জ্যসহ বিভিন্ন রাসায়নিক বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ু, পানি ও শব্দ দূষণ যেন আজ স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে যার প্রভাব পড়ছে জীববৈচিত্র্যের ওপর। জলবায়ুর প্রতিকূল প্রভাবও পরিবেশের ওপর পড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনে বিভিন্ন প্রাণীর জটিল ও কঠিন রোগ দেখা দিচ্ছে। পরিবেশের ওপর জলবায়ুর প্রভাবের জন্য ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত, খাদ্যাভাবজনিত রোগসহ নানা জটিল ও অপরিচিত রোগ হয়ে থাকে। বেড়ে গেছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর দেশের তালিকায় বাংলাদেশ দ্বিতীয়। গত এক যুগে দূষণ ও পরিবেশের বিচারে বাংলাদেশ পিছিয়েছে। পরিবেশের বিপর্যয় মানে জীবনের বিপর্যয়।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলেন, পরিবেশ ও জীবন একে অপরের পরিপূরক। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে অব্যাহত থাকে জীবনচক্র। তবে মানুষের জীবনচক্রে গৃহপালিত প্রাণীর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। আবার প্রাণীদেরও বেঁচে থাকতে নির্ভর করতে হয় পরিবেশ ও প্রতিবেশের ওপর। পরিবেশের বিপর্যয় মানে জীবনের বিপর্যয়। প্রাণিস্বাস্থ্য, প্রাণী উৎপাদন ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু পরিবর্তন একটি আন্তঃসম্পর্কিত জটিল প্রক্রিয়া, যার ওপর অনেকাংশেই নির্ভর করে রোগের প্রাদুর্ভাব, উৎপাদন ব্যবস্থাসহ আরও অনেক কিছু। বৈরি জলবায়ুর করাল গ্রাস থেকে রেহাই পাচ্ছে না বাংলাদেশও। এর পাশাপাশি যোগ হয়েছে পরিবেশ দূষণ। দূষণের দোষে দূষিত হয়ে উঠছে চারপাশ। শিল্প বর্জ্য, মেডিক্যাল বর্জ্য, প্রাণিজ এবং অন্যান্য বর্জ্যসহ বিভিন্ন রাসায়নিক বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ, যার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে জীববৈচিত্র্যের ওপর। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গৃহপালিত প্রাণী। পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে চারণভূমির অভাবে প্রাণী খাদ্যের অভাব হচ্ছে। তাপজনিত, ব্যাক্টেরিয়া জনিত এবং সংক্রামক রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে প্রাণিসম্পদ উৎপাদন হচ্ছে বাধাগ্রস্ত।

অতিবৃষ্টি, উচ্চতাপমাত্রা এবং খরার ফলে মানুষের অজান্তেই
সৃষ্টি হচ্ছে একের পর এক শক্তিশালী ভাইরাস। জলবায়ু পরিবর্তনে বিভিন্ন প্রাণীর জটিল ও কঠিন রোগ দেখা দিচ্ছে। পরিবেশের ওপর জলবায়ুর প্রভাবের জন্য ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত, ভেক্টর প্রভাবিত এবং খাদ্যাভাবজনিত রোগসহ নানা রোগ হয়ে থাকে। নদীর এক কূল ভেঙ্গে গড়ে উঠছে আরেক কূল। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন পরিবেশ, যা অনেক ক্ষেত্রেই মানুষের জন্য বাসযোগ্য হয়ে ওঠে না।
(আগামী সংখ্যায় সমাপ্য)

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট